‘হাইড্রোজেন পারক্সাইড’ কেমিক্যালের বিষয়ে জানে না বিস্ফোরক ও পরিবেশ অধিদপ্তর!

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:১৯, ৫ জুন ২০২২
‘হাইড্রোজেন পারক্সাইড’ কেমিক্যালের বিষয়ে জানে না বিস্ফোরক ও পরিবেশ অধিদপ্তর!

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ১২ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষের ধারণা, হাইড্রোজেন পারক্সাইড নামক দাহ্য রাসায়নিকের কারণে এই বিস্ফোরণ। ডিপোর একটি কর্ণারে টিন শেডের নিচে এমন দাহ্য রাসায়নিকের একাধিক কনটেইনার ছিল। এখান থেকেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর দাউ দাউ করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

তবে কন্টেইনার ডিপোতে রাসায়নিক দ্রব্য থাকার বিষয়ে কিছুই জানেন না বিস্ফোরক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এমনকি সেই ডিপোতে কী পরিমাণ দাহ্য রাসায়নিক দ্রব্য মজুদ ছিল তার ব্যাপারেও জানা নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

এদিকে, বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে আপাতত হাইড্রোজেন পারক্সাইড বোঝাই কনটেইনারকে দায়ী করা হলেও শুধুমাত্র এই রাসায়নিক দ্রব্য থেকে এতো বড় বিস্ফোরণ ঘটনাকে সাধারণভাবে দেখতে নারাজ চট্টগ্রামের বিস্ফোরক পরিদপ্তর।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিস্ফোরক পরিদপ্তরের পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন সিভয়েসকে বলেন, ‘গতরাত থেকে এখনও পর্যন্ত আগুন জ্বলছে। থেমে থেমে বিস্ফোরণ হচ্ছে বলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। এখন যেভাবে বিস্ফোরণটা ঘটেছে শুধুমাত্র এই রাসায়নিকের কারণেই ঘটেছে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে নথিপত্র রেজিস্ট্রার ঘেটে এলে সেখানে কী ধরনের দ্রব্য ছিল তা জানতে হবে। কারণ কন্টেইনার ডিপোতে রাসায়নিক থাকার প্রশ্নই আসে না। এখন যেহেতু বিস্ফোরণ এতো মারাত্মক আকারে ঘটেছে সেখানে শুধু এই কেমিক্যালের কারণে ঘটেছে তা সুস্পষ্ট নয়।’

রাসায়নিক দ্রব্য থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘কন্টেইনার ডিপোতে বিপদজনক পণ্য বা রাসায়নিক রাখার কোনো অপশনই নেই। সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর কিংবা প্রক্রিয়া অনুসরণ করার আগে এসব বাইরে রাখতে হয়। এসবের কিছুই কাস্টমস কর্তৃপক্ষ করেনি। তাহলে ধরে নেওয়া হবে এখানে অন্য কোনো বিপদজনক পণ্য আনা হয়েছে যা কাস্টমস রেজিস্ট্রারই করে নাই। এমনকি এই বিষয়টাতেও আমাদের জানানো হয়নি।’

একই প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মুফিদুল আলম সিভয়েসকে বলেন, ‘এই রাসায়নিক দ্রব্যের অনুমতি কিংবা এ ব্যাপারে কিছুই জানায়নি ডিপো কর্তৃপক্ষ। আমরা জানিনাও সেখানে রাসায়নিক দ্রব্য মজুদ ছিল।’

এদিকে, হাইড্রোজেন পারক্সাইড একটি রাসায়নিক যৌগ। এটি যদি উত্তপ্ত হয় তাহলে অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে বিস্ফোরণ ঘটায়। হাইড্রোজেন পারক্সাইড বিস্ফোরণ পুরো ঘটনাকে নিয়ে গেছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যার প্রভাব পড়েছে আশপাশের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। শনিবার রাতের এ বিস্ফোরণের ঘটনায় রোববার দুপুর পর্যন্ত ৩৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে লাশের সারি।

-সিভয়েস/এসআর

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়