টার্গেট ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক, ডাকাতির আগেই পুলিশের জালে ওরা ১৪

রাউজান প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ১ ডিসেম্বর ২০২৩
টার্গেট ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক, ডাকাতির আগেই পুলিশের জালে ওরা ১৪

টার্গেট ছিল ব্যাংক থেকে তুলে আনা গ্রাহক। এজন্যই পরিকল্পনা সেরে ডাকাতির প্রস্তুতি নিয়ে মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসে চড়ে মহড়া দিচ্ছিলেন ওরা ১৪। সন্দেহ থেকে টহল পুলিশের কাছে আটক হওয়ার পর বেরিয়ে আসে ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহককে লক্ষ্য করে ডাকাতির প্রস্তুতি ও মহড়া দেওয়ার চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। ব্যাংকটির গ্রাহকের সম্পর্কে তথ্য ও ছবি সরবরাহ করে পরিকল্পনায় অংশ নিয়েছিলেন ব্যাংকটির একটি উপশাখার সাবেক পিয়ন ও একই উপশাখার বাবুর্চি।

১৪ জনের মধ্যে ১৩ জনের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ায় ও একজনের বাড়ি আনোয়ারায়। ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায়। রাউজানে ইসলামী ব্যাংকের নজুমিয়াহাট উপশাখার ইদ্রিস নামের এক গ্রাহককে লক্ষ্য করে এ ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।  রাউজানের নোয়াপাড়ার টহল পুলিশের কড়া নজরদারি ও উপস্থিত বুদ্ধিমত্তার কারণে ডাকাতির আগেই ধরা পড়ে যায় সবাই।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন সোহল (২৫), মোসলিম উদ্দিন খান ওরফে সায়েম (২৫), মো. আলী ওরফে হায়দার আলী (৩২), ব্যাংক বাবুর্চি মো. তারেক (২২), মো. মহিউদ্দিন (২৪), আবু সিদ্দিক (৩৬), মো. ইমন (২২), মো. আল কাদের শরীফ (২১), শহিদুল ইসলাম সাকিব (২৩), সাইফুল ইসলাম  সাকিব (২১), সজিবুর রহমান খান (২০), মো. সোহেল (২৪), মো. মোরশেদ (২৫), মো. শওকত আলম (২১)। এরা সবাই পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা শুধামাত্র সোহেল আনোয়ারা থানার বাসিন্দা।

তাদের কাছ থেকে একটি ধারালো টিপ ছুরি, একটি ধারালো লম্বা রামদা, একটি ধারালো লম্বা কিরিচ, দুটি ধারালো ধামা দা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের বয়ান উল্লেখ করে  পুলিশ জানায়, ইসলামী ব্যাংকের নজুমিয়াহাট উপশাখা থেকে গ্রাহক ইদ্রিস নিয়মিত টাকা তুলতেন। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর)  ওই উপশাখা থেকে তিনি ১৫ লাখ টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। ইদ্রিস এরকম মোটা অংকের টাকা লেনদেন করতেন, বিষয়টি জানতেন ইসলামী ব্যাংকের নজুমিয়াহাট উপশাখার সাবেক পিয়ন মোসলেম উদ্দিন খান ওরফে সায়েম। সায়েম তথ্য চেয়েছিল ওই উপশাখার বাবুর্চি তারেকের কাছ থেকে। শুধু তথ্য নয় ছবিও পাঠিয়েছিল তারেক।

ডাকাতির মূল পরিকল্পনায় ছিলেন ডাকাত সর্দার সোহেল। ডাকাতির উদ্দেশ্যে চট্টমেট্রো- চ-১১-৬২১৪ রেজিস্ট্রেশন নম্বরের একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে আরও একটি নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল নিয়ে ছুরি, স্কচটেপসহ ডাকাতির সরঞ্জাম নিয়ে বেরিয়ে পড়ে তারা। ডাকাতদলের কিছু সদস্য মোটরসাইকেল নিয়ে রেকি করছিল। বাকীরা মাইক্রোবাস নিয়ে অবস্থান করছিল রাউজান উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের হারপাড়া গ্রামের চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কের উত্তর পাশের শেখ আলী স’মিলের সামনে।

টহল পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় মাইক্রোবাসটি আটকে দেয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয় থানায়।  এরপর বেরিয়ে আসে ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান দুই কর্মচারীর ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য। ডাকাত দলের ১৪ জনের মধ্যে বেশিরভাগই ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় রয়েছে ডাকাতি, চুরি, অস্ত্র মামলার আসামী।

নোয়াপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ টুটন মজুমদার বলেন, ‘সন্দেহ হওয়ায় গাড়িটিকে আটকানো হয়েছে। সবার বাড়ি পটিয়া বলার পর তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যাই। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাই। এরপর তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতি আইনে মামলা রুজু  করে আদালতে সোপর্দ করেছি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়