Cvoice24.com

হালদায় ডিম ছাড়ায় সংগ্রহকারীদের মুখে হাসি

হাটহাজারী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:২৪, ১৯ জুন ২০২৩
হালদায় ডিম ছাড়ায় সংগ্রহকারীদের মুখে হাসি

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র বঙ্গবন্ধু মৎস্য হ্যারিটেজ হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে মা মাছ। মৌসুমের শেষ জো’তে ডিম ছাড়ায় ডিম সংগ্রহকারীদের মুখে হাসি ফুটেছে। কয়েকদিন নির্ঘুমের ছাপ মুহুর্তেই কেটে গেছে। নৌকা থেকে সংগৃহীত ডিম সংরক্ষণ করেছে হ্যাচারীর কুয়ায়। দীর্ঘ দুই মাসের পরিশ্রমে সফলতা আসায় সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তারা।

জানা গেছে, শনিবার ও রবিবার দুপুর পর্যন্ত নমুনা ডিম ছাড়লেও রবিবার রাত ১১টার দিকে জোয়ারের সময় পুরোদমে ডিম ছেড়ে দেয় মা মাছ। জোয়ারের শুরুতেই সরঞ্জাম নিয়ে নদীতে অবস্থান করে শত শত ডিম সংগ্রহকারী। নদীর আমতুয়া এলাকা থেকে ডিম সংগ্রহকারীদের জালে ডিম আসা শুরু করে। পরে নাপিতের ঘাট, আজিমের ঘাট, পোড় আওলিয়া টেক, কাটাখালির মুখ, বোবাইয়ার চর এবং সবশেষে নয়াহাট কেরাংতলি বাঁক এলাকায় ডিম ধরা পড়ে। তবে এবার রেকর্ড সংখ্যক ডিম ছেড়েছে মা মাছ; যা অতীতের ২৫ বছরের প্রকৃত রেকর্ডকে ছাড়িয়েছে।

ডিম সংগ্রহকারীরা জানান, রাতে প্রতি খেপেই জালভর্তি ডিম এসেছে। কিন্তু এত ডিম সংরক্ষণের কুয়া না থাকায় কুয়া পরিমাণ ডিম নিয়ে নদী থেকে উঠে গেছেন। প্রচুর ডিমের কারণে পুরো নদীতে ফেনা সৃষ্টি হয়েছে। সকালেও নদীতে জালে ডিম ধরা পড়ছে। এমনকি নৌকা বাঁশের ভোরকায় ডিমের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা গেছে।

ডিম সংগ্রহকারী লোকমান, আবু তৈয়্যব, মাহবুব, কামাল সওদাগর, শফি, হোছেন, নুরুল হক বলেন, আল্লাহ আমাদের হতাশ করেননি। এত পরিমাণ ডিম পাওয়া গেছে যা অকল্পনীয়। কিন্তু সংরক্ষণের পর্যাপ্ত কুয়া না থাকায় সব নেয়া হয়নি। 

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারি হ্যাচারী মাছুয়াঘোনায় ৫০টি কুয়ায় কুয়া প্রতি গড়ে চল্লিশ কেজি করে ২ হাজার, শাহমাদারিতে ৪৫টি কুয়ায় ১ হাজার ৮শ’, মদুনাঘাটে ৩০টি কুয়ায় ১ হাজার ২শ’ কেজি ডিম সংরক্ষণ করা হয়। একইসাথে রাউজান উপজেলার মোবারকখীল হ্যাচারীতে ১৬ কুয়ায় ১ হাজার ১৭০ কেজি ডিম সংরক্ষণ করা হয় রেণু উৎপাদনের লক্ষ্যে।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফারুক মায়েদুজ্জামান বলেন, রাত থেকেই হালদায় অবস্থান করছি। এবার রেকর্ড সংখ্যক ডিম ছেড়েছে মা মাছ তবে পর্যাপ্ত সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় সব ডিম সংরক্ষণ সম্ভব হয়নি। 

হালদা গবেষক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ শতভাগ অনূকুলে থাকায় শেষ জোঁতে এসে মা মাছ ডিম ছেড়েছে। আগেকার সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। ডিম সংগ্রহকারীরা হ্যাচারীতে পরিচর্যায় ব্যস্ত।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহিদুল আলম বলেন, জোঁয়ের শেষে এসে ডিম ছাড়ায় অবশেষে সবার মুখে হাসি ফুটেছে। উপজেলা প্রশাসন হালদার মা মাছ, জীব বৈচিত্র রক্ষায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেছে। এটা একটা বিরাট সাফল্য। ভবিষ্যতেও হালদার প্রতি নজর থাকবে প্রশাসনের। এদিকে দুই উপজেলার সরকারি হ্যাচারী ছাড়াও বেসরকারি হ্যাচারী, মাটিরকুয়ায় ডিম সংরক্ষণ করেন অনেক ডিম সংগ্রহকারী। 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলি বলেন, মাটির কুয়া, সরকারি, বেসরকারি হ্যাচারী সব মিলিয়ে পরিমাণটা পরে জানানো হবে। সঠিক তথ্যের জন্য সরকারি হ্যাচারীতে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়