Cvoice24.com

বিদেশি টাকায় কালুরঘাটে নতুন সেতু বানাবেন সোলায়মান শেঠ

মিনহাজ মুহী

প্রকাশিত: ১২:৪৩, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩
বিদেশি টাকায় কালুরঘাটে নতুন সেতু বানাবেন সোলায়মান শেঠ

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ।

প্রয়োজনে বিদেশ থেকে টাকা এনে কালুরঘাটে নতুন সেতু বানাতে চান জাতীয় পার্টির নেতা সোলায়মান শেঠ। এখানে পাকা সেতুর অভাবে বোয়ালখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর নিত্যদিনের কষ্ট তাকেও বেশ কাঁদায়! বাসিন্দাদের সেই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন তিনি।

সিভয়েসের সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই জানালেন— দলটির এই প্রেসিডিয়াম সদস্য। তাঁর মতে, কালুরঘাটে নতুন সেতু না হওয়ায় বোয়ালখালীবাসী আজ অবহেলিত। তিনি বলেন, ‘আমি কথা দিচ্ছি, যদি আল্লাহ সহায় হন এবং সবকিছু ঠিক থাকে, সবার দোয়া থাকে— তাহলে ৫ বছরের মধ্যে আমি কালুরঘাট সেতু নতুনরূপে তৈরি করে ছাড়বো। দরকার হলে বিদেশ থেকে ডোনেশন এনে এ সেতু করব।’ বোয়ালখালীর মানুষের অব্যাহত কষ্ট লাঘবে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খাগড়াছড়ি আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনয়ন পেয়েছিলেন সোলায়মান আলম শেঠ। এর আগেও দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি ওই আসন থেকে জাপার প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে এবার ওই আসন ছেড়ে চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে দল থেকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, ‘আমি প্রতিবারই খাগড়াছড়ি থেকে মনোনয়ন পাই। এবারও আমাকে খাগড়াছড়ি থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। আমিও রাজি ছিলাম। কারণ, সেখানে আমাদের বাঙালি ভাইয়েরা খুবই অবহেলিত। তাদের সঙ্গে পাহাড়িদের একটা ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে। সেটা দূর করতে পারলে প্রধানমন্ত্রীকে সুন্দর একটা খাগড়াছড়ি উপহার দিতে পারতাম। এছাড়া সেখানে উন্নয়ন করার অনেক পরিকল্পনা ছিল। যেমনটা কিছু শিল্প-কারখানাসহ আরও অনেক কিছু করার।’

চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে দল থেকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন চট্টগ্রাম-৮ থেকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ আমি চট্টগ্রামের সন্তান; তাই চট্টগ্রামের জন্য কিছু করতে চাই। আমার নেতা মরহুম এরশাদ সাহেব দক্ষিণের জন্য প্রথম লোহার সেতু (কর্ণফুলী দ্বিতীয় সেতু) করে দিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম নগরের কালামিয়া বাজার নামটিও এরশাদ দিয়েছিলেন।’

কালুরঘাট সেতু দিয়ে ট্রেনে ‘ঢাকা টু কক্সবাজার’ যাওয়ার কথা তুলে ধরে সোলায়মান শেঠ বলেন, ‘কালুরঘাট সেতু এলাকায় নতুন সেতুর দাবিতে ২০০৮ সালে আমি প্রথম মানববন্ধন করি। ওই সেতু দিয়ে ট্রেনে কক্সবাজার যাওয়ার শত শত বছরের ইচ্ছা ছিল; অথচ বিদেশিরা পারেনি, জাপানিরা পারেনি, পাকিস্তানিরা পারেনি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই ব্রিজ দিয়ে ঢাকা থেকে কক্সবাজার ট্রেন নিয়ে গেছেন। এটা যে কত বড় একটা উন্নয়ন, চট্টগ্রামকে কত ধাপ উপরে উঠিয়ে দিয়েছে বলার মত না।’

কালুরঘাটে আরেকটি পাকা সেতু করতে পারলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম আরও এগিয়ে যেত মন্তব্য করে সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, ‘বোয়ালখালীবাসী অনেক অবহেলিত। আমি তাদের জন্য কাজ করতে চাই।’
 
তিনি আরো বলেন, ‘জাতীয় পার্টি সবসময় জনগণের চিন্তা করে, উন্নয়নের চিন্তা করে এবং জনগণের পাশে থাকতে চায়। দেশের মানুষ এখন পরিবর্তন চাই।’

বোয়ালখালীবাসীর আক্ষেপ ঘুচাতে ‘প্রয়োজনে বিদেশ থেকে ডোনেশন এনে কালুরঘাট সেতু করা হবে’ এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, ‘কালুরঘাটে নতুন সেতু না হওয়ায় বোয়ালখালীবাসী পিছিয়ে যাচ্ছে। আমি কথা দিচ্ছি, যদি আল্লাহ সহায় হন এবং সবকিছু ঠিক থাকে, সবার দোয়া থাকে— তাহলে ৫ বছরের মধ্যে আমি কালুরঘাট সেতু নতুনরূপে তৈরি করে ছাড়বো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই নতুন কালুরঘাট সেতু হবে।’

২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে খাগড়াছড়িতে জাপার হয়ে নির্বাচন করে জামানত হারানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে ২ হাজার ৩৪০ ভোট পেয়ে এবং ২০১৮ সালে প্রায় ৬ হাজার ভোট পেয়ে জামানত হারানোর কথা বলা হয়েছে; সেটি সঠিক নয়। কারণ, সেই সময় আমি আরও বেশি ভোট পেয়েছি; তবে সেটি তালিকায় দেখানো হয়নি। তাই এসব নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

উল্লেখ্য, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে পার্বত্য খাগড়াছড়ি আসনের পাশাপাশি চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী), চট্টগ্রাম- ১০ (ডবলমুরিং, পাহাড়তলী, হালিশহর) ও চট্টগ্রাম ১১ (বন্দর, পতেঙ্গা) এই চার আসন থেকে সোলায়মান আলম শেঠ মনোনয়ন নেন। দলীয়ভাবে তিনি খাগড়াছড়ি আসনে মনোনয়ন পেলেও পরে চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়