Cvoice24.com

পেঁয়াজে লাখ টাকা লাভের গল্প

মিনহাজ মুহী

প্রকাশিত: ১৯:০০, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
পেঁয়াজে লাখ টাকা লাভের গল্প

দোকানে পাইকারি বিক্রির জন্য একসঙ্গে ৩০ বস্তা (প্রতিবস্তায় ৪৮ কেজি) পেঁয়াজ মজুদ করেছিলেন চট্টগ্রাম নগরের চাক্তাইয়ের এক ব্যবসায়ী। প্রতিদিনের মতো কেনা দামের চাইতে লাভের অংক মাথায় রেখেই পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছিলেন তিনি। ৮ ডিসেম্বর অন্য ব্যবসায়ীদের মতো তিনিও জানতে পারেন ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের কথা। আর ওইদিনই বেড়ে যায় দাম। তিনিও সেই সুযোগে বস্তাপ্রতি পেয়ে যান কেনা দামের চেয়ে দ্বিগুণ লাভ।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ওই ব্যবসায়ী সিভয়েসকে বলেন, ‘দোকানের জন্য রসুন-আলু-পেঁয়াজসহ মোট ৭৫ বস্তা পণ্য কেনা হয়। এর মধ্যে ৩০ বস্তা ছিল পেঁয়াজ। বস্তাপ্রতি কেনা দামে লাভ হিসাব করে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে পেঁয়াজ বিক্রি করি। তবে হঠাৎ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের কথা শুনতে পেয়ে বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। তখন যেটি আগে আমরা কেজি প্রতি হিসাব করে প্রতিবস্তা ৫ হাজার ৪০ টাকা দামে ছেড়ে দিতাম; সেটি গত দুদিনে ৯ হাজার ৬শ টাকায় বিক্রি করেছি।’

২০ বস্তা পেঁয়াজে লাখ টাকা লাভ

ওই ব্যবসায়ীর হিসাব মতে, ৩০ বস্তা পেঁয়াজ তিনি কিনেছিলেন ৯৮ টাকা (কেজি প্রতি) দরে। নিয়মিত দামে ১০ বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি করা হলেও লাভ ছিল মাত্র ৩ হাজার ৩৬০ টাকা (বস্তাপ্রতি ৩৩৬ টাকা লাভ)। তবে ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে হঠাৎ বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। বাকি ২০ বস্তা পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ২০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন তিনি। ফলে ওই ২০ বস্তায় ব্যবসায়ীর লাভের অংক দাঁড়িয়েছে ৯৭ হাজার ৯২০ টাকা। 
শুধু তিনি নন; চট্টগ্রামের আড়তদার থেকে শুরু করে পাইকারী-খুচরা ব্যবসায়ী সকলের পকেট ‘গরম’ হয়েছে গেল কয়দিনে। আর ঠকেছেন সাধারণ ক্রেতা ভোক্তারা। 

আলু-রসুনের আড়ালে পেঁয়াজের উঁকি

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম নগরের খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আড়তগুলোতে পেঁয়াজ নেই। ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পর থেকে ধীরে ধীরে পেঁয়াজশূন্য হয়ে পড়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের এই পাইকারি বাজার। দিনভর শূন্যহাতে ফেরত গেছেন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা। এছাড়া পাইকারি ব্যবসায়ীদের দোকানেও দেখা যায়নি পেঁয়াজের বস্তার কোনো স্তূপ। তবে কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, আলু এবং রসুনের পেছনে লুকিয়ে রাখা হয়েছে পেঁয়াজের বস্তা। তবু সেইসব দোকানিরা পেঁয়াজ নেই বলে জানিয়েছেন এ প্রতিবেদককে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই চট্টগ্রামসহ সারাদেশে পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে ওঠে। চট্টগ্রামে খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে। গত দুদিন ধরে জেলা প্রশাসন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের বিভিন্ন আড়তে ও দোকানে অভিযান চালিয়েও পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়