এক বছরেই মাথা উঁচিয়ে দাঁড়াবে নগর ভবন

সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৪১, ৬ মে ২০২৪
এক বছরেই মাথা উঁচিয়ে দাঁড়াবে নগর ভবন

১৪ বছর পর আলোর মুখ দেখতে চলেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নগর ভবন প্রকল্প। সংস্থাটির নিজস্ব অর্থায়নে সোমবার (৬ মে) দুপুরে এ প্রকল্পের নির্মাণকাজের উদ্বোধন হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে ২১ তলা ভবনের ৩ তলা মাথা উঁচিয়ে দাঁড়াবে। 

চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৩৮ হাজার ৪৯০ বর্গফুট বা ৫৩ দশমিক ৪৫ কাঠা জায়গায় এ নগর ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রণয়ন নামের একটি কনসালটেন্ট ফার্ম ‘আইকনিক’ এ ভবনের নকশা করে। ভবনের উপরে থাকবে সিটি ক্লক। ভবনের তিন পাশে সাজানো বাগান থাকবে। নির্মাণ করা হবে ফোয়ারা। থাকবে মাল্টিপারপাস হল, কনফারেন্স হল ও ব্যাংকুয়েট হল। তবে পুরো নগর ভবন নির্মাণ করা হবে ধাপে ধাপে। শুরুতে বেইসমেন্টসহ তিনটি ফ্লোর নির্মাণ করা হবে। 

এজন্য প্রথমধাপে ২৮ কোটি ৮০ লাখ টাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস তাহের ব্রাদার্স লিমিটেড ও মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে জেবি (জয়েন্ট ভেঞ্চার) কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে গতবছর (২০২৩ সালে) পুরাতন নগর ভবন ভাঙার কাজ মঈনুদ্দিন জাবেদ ট্রেডিং নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি পুরাতন ভবনের ভাঙার কাজ শেষ হয়। 

অন্যদিকে, ২০১০ সালের ১১ মার্চ নগর ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। সেসময় এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এরপরই আটকে যায় প্রকল্পের কাজ। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে নগর ভবন নির্মাণের প্রকল্প নতুন করে নেওয়া হয়। সেসময় ২৫ তলা ভবনের নকশা তৈরি করে স্থাপত্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘প্রণয়ন’। তখন প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ২০২ কোটি টাকা। কিন্তু তাতে বাঁধসাধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এমনকি থোক বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রেও সায় দেয় নি মন্ত্রণালয়। 

পরবর্তীতে ২০১৭ সালে আরেক দফা নগর ভবন নির্মাণ প্রকল্প প্রস্তাবনার অনুমোদন পাঠানো হয় মন্ত্রণালয়ে। সেসময় প্রকল্প ব্যয় পুনরায় সংশোধন করে ২২৯ কোটি টাকা করা হয়। কিন্তু তাতেও সায় দেয়নি মন্ত্রণালয়। যদিও করোনার আগে চসিকের নগর ভবন নির্মাণের ডিপিপি প্রি-একনেক পর্যন্ত গড়ালেও শেষ পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি। 

চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারজানা মুক্তা সিভয়েস২৪-কে বলেন, আজকে নগর ভবনের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন হয়েছে। এর আগে অর্থ সংকট, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না পাওয়াসহ বিভিন্ন জটিলতায় প্রকল্পের কাজ থমকে ছিল। এ ভবনের প্রথম ধাপের প্রায় ২৯ কোটি টাকার কাজ শুরু হয়েছে। বাকি অংশও ধাপে ধাপে শেষ করা হবে।’

নগর ভবনের নিমার্ণ কাজ উদ্বোধনকালে মেয়র বলেন, পুরাতন নগর ভবনের স্থানে পার্শ্ববর্তী আরো দুটি ভবনের স্থান সংযুক্ত করে এই আইকনিক নগর ভবন নির্মাণ করা হবে। তিনটি বেইসমেন্টসহ পুরো নগর ভবন হবে ২১ তলা। এ ভবনের প্রথম ধাপের উদ্বোধন করা হল আজ। আমাদের লক্ষ্য ২৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রথম ধাপের কাজের অংশ হিসেবে ৫-৬ তলা আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করে টাইগারপাস থেকে আন্দরকিল্লায় চলে আসা। বাকি অংশ ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হবে৷ 

“স্থায়ী নগর ভবন না থাকায় বিদেশি অতিথিরা আসলে আমাদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হত, নাগরিকদেরও সেবা প্রদান বিঘ্নিত হত। এজন্য নিজস্ব ফান্ডে নগর ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। এ ভবনে নাগরিকরা স্বাচ্ছন্দে সেবা নিতে পারবেন। এছাড়া এ ভবনের একটি ফ্লোরে চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরতে গড়ে তোলা হবে জাদুঘর।” 

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, হাসান মুরাদ বিপ্লব,   শৈবাল দাশ সুমন, মোঃ ইলিয়াছ, মো. আবদুস সালাম মাসুম, আতাউল্লা চৌধুরী,  রুমকি সেনগুপ্ত, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, প্রধান প্রকৌশলী শাহীন-উল ইসলাম চৌধুরী , তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আকবর আলী, ফরহাদুল আলম, জসিম উদ্দিন, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও এস্টেট অফিসার মোঃ রেজাউল করিম, নির্বাহী প্রকৌশলী ফারজানা মুক্তা, রেজাউল বারী ভূইঁয়া, মীর্জা ফজলুল কাদের,  আশিকুল ইসলাম, রিফাতুল করিম, তাসমিয়া তাহসীন, তৌহিদুল ইসলাম, সালমা খাতুন, সহকারী প্রকৌশলী আসীর হামীম।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়