Cvoice24.com

‘কানাকড়িও’ নেই দুই পত্নীর

মিনহাজ মুহী, সিভয়েস২৪

প্রকাশিত: ১২:৫৩, ২৮ মে ২০২৪
‘কানাকড়িও’ নেই দুই পত্নীর

সোনাদানা, ব্যাংকে জমাজাতি, নগদ টাকায় ভরপুর বেশিরভাগ প্রার্থীর স্ত্রী। কেউ কেউ হাঁকান ব্যক্তিগত গাড়িও। ব্যতিক্রম শুধু আনোয়ারা উপজেলার দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর পত্নীর। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে সহায় সম্পদ তো দূরের কথা ‘কানাকড়িও’ নেই তাঁদের। তাঁরা হলেন— ‘মিসেস’ এম এ মান্নান চৌধুরী ও ‘মিসেস’ কাজী মোজাম্মেল হক। 

অন্যদিকে নগদ টাকা, জমাজাতি, সোনাদানায় নিজের স্ত্রীকে ‘ভরপুর’ রেখেছেন আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদুল হক চৌধুরী। হাতে ১ লাখ, ব্যাংকে ২ লাখ, পোস্টালে সেভিংসে ১ লাখ, আর ১ লাখ টাকার সোনা রয়েছে ‘মিসেস তৌহিদুল হক চৌধুরীর’।

ভোটের মাঠে লড়তে এই তিন প্রার্থী মনোনয়নপত্রসহ দলিলদস্তাবেজ জমা দিলেও মাঝপথে এসে সরে দাঁড়িয়েছেন আবদুল মান্নান চৌধুরী। শুরুতে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের আশীর্বাদ পেয়েছিলেন তিনি। পরে দুইবারের চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরীকে আশীর্বাদ করেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী। অন্যদিকে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের সমর্থন নিয়ে লড়ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক (আনারস)। 

হলফনামার তথ্যানুযায়ী, ‘মিসেস’ মান্নান চৌধুরী ‘নিঃস্ব’। ব্যাংকে জমা, সঞ্চয়পত্র, সোনাদানা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ঘরের আসবাবপত্র সবই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মান্নান চৌধুরীর। ব্যাংকে সাড়ে ১২ লাখ টাকা, ৭০ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড, অর্ধ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ১০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে মান্নানের। বিয়ের সময় পাওয়া ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কারের দাম না জানলেও ডেইরি ফার্মে তাঁর বিনিয়োগ আছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। কোন জমিজমা, দালানও নেই তাঁর! উল্টো ১ লাখ ৩ হাজার ৪২২ টাকায় দেনায় পড়েছেন তিনি। ব্যবসা করে উপার্জন করেছেন মাত্র ৭ লাখ টাকা।

চাকরিজীবী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোজাম্মেলের আয় প্রায় ৩৬ লাখ টাকা। নিঃস্ব তাঁর স্ত্রীও। তাঁর ‘কামাইয়ের’ সিংহভাগ এসেছে চাকরি থেকে। সেখান থেকে ৩৫ লাখ ১৪ হাজার ১০০ টাকা আয় করেছেন তিনি।। জীবন বীমা পেনশন-স্কিম থেকে ৮৪ হাজার টাকা, শেয়ার সঞ্চয়পত্র থেকে ২১ হাজার ১৬৮ টাকা তাঁর কামাই। 

৩ লাখ ৬৭ হাজার ৭০০ টাকার স্বর্ণ আর ইলেকট্রনিক সামগ্রী উপহার পেয়েছিলেন মোজাম্মেল হক। ডিপিএস, প্রভিডেন্ট ফান্ড, জীবন বীমার ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৪৬৯ টাকা ছাড়াও ব্যাংকে, হাতে, বন্ড-ঋণপত্র বাবদে রয়েছে আরো প্রায় কোটি টাকা। নগদে ৫৬ লাখ ৮২ হাজার ১৯ হাজার টাকা, ১১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৪ টাকা ব্যাংকে জমা, বন্ড-ঋণপত্র বাবদে আছে আরো ৬ লাখ ৪০ হাজার ৪৩২ টাকা। একটি মোটরযানও আছে। যার মূল্য ১০ লাখ টাকা। বিয়ের সময়ে পাওয়া স্বর্ণের দাম দেখিয়েছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার , আর ইলেকট্রনিক সামগ্রীর ২ লাখ ২ হাজার ৭০০ টাকা।

স্থাবর সম্পদে ৩৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকার একটি দালান, ৩৮ লাখ ১৬ হাজার টাকার অকৃষি জমি।

কৃষির ১ লাখ, ব্যবসার ৬ লাখ, চেয়ারম্যানের সম্মানির ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা আয় করেছেন আরেক প্রার্থী তৌহিদুল হক চৌধুরী। তাঁর হাতে, ব্যাংক, বন্ড-ঋণপত্র বাবদে রয়েছে ২২ লাখ টাকা। পোস্টাল সেভিংসে রয়েছে ৩০ লাখ টাকা; আর ২০ লাখ টাকা মূল্যের বাস-ট্রাক মোটর গাড়ির মালিক তিনি। ১ লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকারের পাশাপাশি আরও ১ লাখ মূল্যের ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং আসবাবপত্র রয়েছে তাঁর। এছাড়াও তাঁর স্থাবর সম্পদ হিসেবে ১০ লাখ টাকা মূল্যের কৃষি জমি রয়েছে।

অন্যদিকে তাঁর স্ত্রীর ৫ লাখ টাকার সম্পদের মধ্যে— হাতে নগদে ১ লাখ, ব্যাংকে জমা ২ লাখ, পোস্টালে সেভিংসে ১ লাখ এবং ১ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার রয়েছে।

তাঁর স্ত্রীর পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদেরও রয়েছে সাড়ে ৮ লাখ টাকার সম্পদ। তাঁদের ব্যাংকে জমাজাতি আছে ৫ লাখ টাকা, পোস্টাল-সেভিংসে ৩ লাখ টাকা। তবে হাতে নগদে আছে মাত্র ৫০ হাজার টাকা।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়