Cvoice24.com

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়/
‘খাবারের মান নাই, দাম বৃদ্ধি হয় কিভাবে’

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:২২, ২৪ মার্চ ২০২৩
‘খাবারের মান নাই, দাম বৃদ্ধি হয় কিভাবে’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আবাসিক হলের ডাইনিংয়ে খাবারের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের হাতে হঠাৎ দাম বৃদ্ধি কেন, প্রশাসন জবাব চাই; রমজানে প্রহসন মানি না মানবো না; খাবারের মান নাই, দাম বৃদ্ধি হয় কিভাবে ইত্যাদি লিখা সংশ্লিষ্ট প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে বুদ্ধিজীবী চত্বরে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।

আন্দোলনকারী শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন জানান, হলের খাবারে এমনিতেই স্বাদ থাকে না। তাও কষ্ট করে আমরা সহ্য করি। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া হঠাৎ এই দাম বৃদ্ধি কেন? রমজানে অনেক শিক্ষার্থীদের টিউশন থাকে না। তারা কিভাবে চলবে? আজকের মধ্যে দামের ব্যাপারে সুরাহা না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবো।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট হল রয়েছে ১৪ টি। এর মধ্যে ৩টি হল উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে। বাকি ১১টি হলে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী থাকেন। হলের অধিকাংশ শিক্ষার্থী মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত হওয়ায় খাবারের জন্য ভরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাইনিং। ডাইনিংয়ের খাবারের মানও যাচ্ছে তাই। মাছ এবং মাংসের টুকরো খুবই ছোট। ডাল বলতে শুধুই পানি। ডালের ছিটেফোঁটাও দেখা যায় না। এতো কিছুর পরেও পকেটের দিকে তাকিয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ডাইনিংয়ে খাবার খান। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের জন্য সীমিত মূল্যে খাবারের ব্যাবস্থা করার জন্য স্টাফদের বেতন, ডাইনিং সামগ্রী, গ্যাস-বিদ্যুৎ বিল ভর্তুকী হিসেবে কর্তৃপক্ষ বহন করে। 

তবে ডাইনিং ম্যানেজারদের দাবি— এতো কিছুর পরেও তারা লাভের মুখ দেখেন না। বাজারে সব জিনিসের দাম বেশি। তাই দাম বৃদ্ধির জন্য হল প্রভোস্টদের কাছে কয়েকবার তারা দাবি জানান। তাদের দাবির প্রেক্ষিতেই দাম বাড়ানো হয়েছে। হঠাৎ এমন দাম বৃদ্ধির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। 

শামিম রানা শামু নামের এক চবি শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, ‘মাননীয় ভিসি ম্যাম, আপনি প্লিজ পদত্যাগ করেন।  আপনার কোনো যোগ্যতাই নেই; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকার। গতকয়েকদিন ধরে একেরপর এক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন আপনি এবং আপনার প্রশাসন। সবকিছু স্টুডেন্টরা সহ্য করে যাচ্ছে। কিন্তু আজ আর সহ্য করা যাচ্ছে না। পেটে খেলে পিঠে সয়। হলের ডাইনিংয়ে খাবারের দাম হয়ে গেছে ৩৫ টাকা। আপনার মতো মাস শেষে লাখ টাকা দুর্নীতি করার সুযোগ নেই তাদের। টিউশন করে খেয়ে না খেয়ে থাকতো, এখন সেটাও বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। আপনার ন্যূনতম বিবেচনাবোধ থাকলে এই সিদ্ধান্তটা নিতেন না ‘

শাহ আমানত হলের আবাসিক শিক্ষক হাসান মুহাম্মদ বলেন, ‘ডাইনিং ম্যানেজাররা দীর্ঘদিন থেকে দামের ব্যাপারে অভিযোগ করে আসছেন। বাজারে দাম বেশি তাই অল্প দামে শিক্ষার্থীদের খাবার দিতে পারছেন না। আবার খাবার দিলেও মান ঠিক রাখা যায় না। তাই হল প্রভোস্টরা বসে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীদের কষ্টের ব্যাপারটাও বুঝতে পারছি। রাতে এই ব্যাপারে প্রশাসন বসবে। নতুন দাম নির্ধারণের সম্ভাবনা রয়েছে।’

চবি প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের ব্যাপারে জানতে পেরেছি। আসলে সব কিছুর দাম বেশি। তাই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে রাতে আমরা এই বিষয়ে আবার বসবো। আমরা সব কিছু বিবেচনা করে দাম নির্ধারণের চেষ্টা করবো।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়