Cvoice24.com

অনিয়মের বিরুদ্ধে চবি শিক্ষক সমিতির প্রতিবাদ, ২৬ দাবি

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:৪১, ২৬ নভেম্বর ২০২৩
অনিয়মের বিরুদ্ধে চবি শিক্ষক সমিতির প্রতিবাদ, ২৬ দাবি

প্রশাসনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতি। রবিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১১টায় শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ২৬টি দাবি তুলে ধরে এ সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবদুল হক বলেন, শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি বর্তমান উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য কৌশলে উপেক্ষা করে এসেছেন। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এসব দাবি বাস্তবায়ন না করায় আমরা বাধ্য হয়ে হয়েছি দেশের এই নির্বাচনী ডামাডোলের মধ্যেই কর্মসূচি দিতে। প্রশাসন বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত ৭৩' এর আইনকে অমান্য করেছে। তিনি সিন্ডিকেটকে একটি পর্ষদে পরিণত করেছে ফেলেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভারসাম্যহীন একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ৭৩' এর আইনকে অমান্য করেছেন।

সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, আমাদের প্রতিটি দাবি প্রশাসন কৌশলে উপেক্ষা করে গেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের মতো অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতিকে প্রোগ্রামের আগেরদিন দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে। অথচ অনুষ্ঠানে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ খুবই নগন্য। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের রুটি-রুজির উচিলা। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর আবেগ জড়িয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে। কিন্তু প্রশাসন এই দিবস উদযাপনের আগে থেকে শিক্ষক সমিতিকে কোনো কিছু জানায়নি। এভাবেই প্রতিনিয়ত শিক্ষক সমিতিকে অমর্যাদা করছে। তিনি আসলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করার সক্ষমতা হারিয়েছেন। উনার নৈতিক অবস্থান দুর্বল হয়ে গেছে। তাই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের মতো একটি অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং নেতৃত্বের দুর্বলতা থাকায় শিক্ষকগণ তার সাথে অংশগ্রহণ করতে চান না।

তিনি আরও বলেন, অত্যন্ত দুংখের সাথে বলতে হয় শিক্ষকদের দ্বারা নির্বাচিত হয়েও আমাকে হুমকি দেওয়া হয়। আমি শিক্ষক সমিতির সভাপতি এটা আমার জন্য সম্মানের। আমি তার সেসব হুমকিকে থোড়াই কেয়ার করি। আমার ভিত্তি আমার কমিউনিটি যারা আমাকে নির্বাচিত করেছে। আপনার এসব প্রচ্ছন্ন হুমকি আপনার জন্য দুর্ভাগ্যজনক, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাজনক। আপনি সবকিছু মুখে মেনে নেন। দিব দিচ্ছি বলেন। কিন্তু কেন?

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলা উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলী আরশাদ চৌধুরী, সদস্য ড. মোহাম্মদ শেখ সাদী ও অধ্যাপক ড. লায়লা খালেদাসহ অন্যান্যা শিক্ষকবৃন্দ।
 
দাবিগুলো মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- অতিসত্বর সিন্ডিকেটে ডিন, প্রভোস্ট এবং একাডেমিক কাউন্সিলসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন দিতে হবে, শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত অডিও কেলেঙ্কারিতে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করে নিয়োগ-বাণিজ্য চক্রের সাথে যুক্তদের খুঁজে বের করতে হবে, শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি বোর্ডে সংশ্লিষ্ট বিভাগ/ইনস্টিটিউট এর সাথে সম্পর্কযুক্ত নয় এমন অনেক প্রশাসন-ঘনিষ্ট শিক্ষকের সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচনী বোর্ড পুনর্গঠন করতে হবে,পক্ষপাতদুষ্ট ও বিতর্কিত এ সকল নির্বাচনী বোর্ড কর্তৃক বিভিন্ন বিভাগে স্থায়ী/অস্থায়ী ভিত্তিতে গণহারে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে এবং সকল অবৈধ নিয়োগ বাতিল করতে হবে, সিন্ডিকেট সভায় 'নির্বাচনী বোর্ড বা সিন্ডিকেট প্রযোজন মনে করলে বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত নিয়োগ দিতে পারবে' মর্মে গৃহীত রাষ্ট্রের মূলনীতি পরিপন্থী ও বেআইনি সিদ্ধান্ত অতিসত্বর বাতিল করতে হবে, সিন্ডিকেট সভায় বিভাগ থেকে চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগকৃত এ সকল প্রভাষক/সহকারী অধ্যাপককে বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই স্থায়ী করা যাবে' মর্মে গৃহীত বেআইনি এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ও বিশ্ববিদ্যালয় কনসেপ্ট পরিপন্থী সিদ্ধান্ত অতিসত্বর বাতিল করতে হবে, নির্বাচনী বোর্ড বা বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির সদস্য হিসেবে মিথ্যার আশ্রয়গ্রহণ, স্বীকৃত ও মানসম্পন্ন জার্নালের প্রকাশনাকে অস্বীকার ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষকগণের পদোন্নতিতে অন্যায়ভাবে বাধা সৃষ্টিকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রত জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে, এবং অতিসত্বর ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের পদোন্নতির উদ্যোগ নিয়ে আবেদনের তারিখ থেকে কার্যকর করতে হবে, সম্মানিত শিক্ষকগণকে অযাচিত হয়রানি থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে সহকারী অধ্যাপকের ন্যায় সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক পদে পদোন্নতি আবেদনের তারিখ থেকে কার্যকর করতে হবে ও পালি বিভাগের সভাপতি জনাব শাসনানন্দ বড়ুয়া রুপন এবং ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর আবদুল হক এর বিরুদ্ধে গঠিত হয়রানিমূলক তদন্ত কমিটি অতিসত্বর বাতিল করতে হবে ইত্যাদি।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়