Cvoice24.com

আমদানির ‘ভয়ে’ কমছে পেঁয়াজের দাম

মিনহাজ মুহী, সিভয়েস২৪

প্রকাশিত: ১৯:৫৬, ৩০ মার্চ ২০২৪
আমদানির ‘ভয়ে’ কমছে পেঁয়াজের দাম

অনির্দিষ্টকালের জন্য ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার খবরে দেশের বাজার অস্থির হয়ে ওঠে। তবে এর ঠিক পাঁচদিনের মাথায় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সরকারি ঘোষণায় দাম কমতে শুরু করেছে ‘ভয়ে’। 

ব্যবসায়ীদের দাবি, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হলেও বাজারে এর তেমন প্রভাব পড়েনি। মূলত দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় দাম নিম্নমুখী।

খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘এ সময়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা এটা বোকামি। এতে পেঁয়াজের বাজারে কোনো প্রভাব পড়বে না। আমাদের দেশি পেঁয়াজ যা সরবরাহ আছে; তা দিয়ে আরও অনেক মাস যাবে। চাহিদা মেটানো সম্ভব।’

শনিবার (৩০ মার্চ) চট্টগ্রামের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, দোকানের সামনে পেঁয়াজের সারি সারি বস্তার স্তূপ করে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। এতে মেহেরপুর (দেশি), ফরিদপুর (দেশি) ও ভারতীয় পেঁয়াজ ছিল। আর এসব পেঁয়াজের মধ্যে পাইকারিতে মেহেরপুর (দেশি) পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৪২ টাকা, ফরিদপুর (দেশি) ৪৮ এবং ভারতীয় ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।তবে গত সপ্তাহে (বৃহস্পতিবার পর্যন্ত) পাইকারিতে মেহেরপুর (দেশি) পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৫০ টাকা, ফরিদপুর (দেশি) ৫৫ এবং ভারতীয় ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু এবং দেশিয় পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমছে। একইসঙ্গে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ ঠিক থাকলে দাম আরো নিম্নমুখী হবে।

আমিনুল ইসলাম নামে এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রতিবছর রমজান মাসে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়লেও এবারের চিত্র ভিন্ন। গত বছরগুলোর তুলনায় দাম কমতির দিকে। এছাড়া এখন যে দামে পেয়াঁজ বিক্রি হচ্ছে তা ক্রেতার হাতের নাগালেই।’

খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস সিভয়েস২৪-কে শনিবার বিকেলে বলেন, ‘গত সপ্তাহের চেয়ে আজকের বাজারে আবারও পেঁয়াজের দাম কমতির দিকে। দিন দিন দাম কমছে। বর্তমানে বাজারে দেশি পেঁয়াজের যা সরবরাহ আছে; তা দিয়ে চট্টগ্রামের জন্য আগামী তিন থেকে চার মাস চলবে। এছাড়া বাজারে ভারতীয় যে পেঁয়াজ বাজারে আছে তা চোরাইপথে এসেছে। তবে যদি বৈধপথে দেশের বাজারে ভারতের পেঁয়াজ ঢুকে মনে হয় না; তা নতুন করে বাজারে প্রভাব ফেলবে। কেননা, এখন যে দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে তা ক্রেতাদের নাগালেই রয়েছে।’

খুচরা বাজারেও দাম ওঠানামা

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ার খবরে খুচরা পর্যায়েও দাম কমেছে। তবে খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, কোনো পণ্যের দাম তারা নিয়ন্ত্রণ করেন না। পাইকারি বাজারের হিসাব করেই খুচরা পর্যায়ে পণ্যের দাম বাড়ে-কমে।

এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ এলেও যেমন না হলেও তেমন। পাইকারি দামে যেভাবে পেঁয়াজ কিনে থাকি; সেই হিসাব করেই বিক্রি করি। আজ (শনিবার) সকালে স্থানীয় আড়ত থেকে পাইকারি দামে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা দরে কিনেছি। তাই দেশি পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করছি।’

প্রসঙ্গত, পেঁয়াজ রপ্তানিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। ২২ মার্চ বিকেলে দেশটির সরকার এমনটি জানায়। এর আগে, দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত বছরের ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সরকার, যার মেয়াদ ৩১ মার্চ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এ নিষেধাজ্ঞা শিগগিরই তুলে নেওয়া হবে বলেও আশা করেছিলেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। তবে ২২ মার্চ বিকেলে এক আদেশে ভারত সরকার জানায়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পেঁয়াজের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।

এর ঠিক ছয়দিনের মাথায় অর্থাৎ গত ২৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অধিশাখা) রেজওয়ানুর রহমান জানান, শুক্রবার (২৯ মার্চ) ভারত থেকে প্রথম ধাপে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ আসবে।  এরপর পরই পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে দেশের বাজারে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়