Cvoice24.com

আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ 

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:০৭, ১৫ জুন ২০২৩
আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ 

ছবি-সংগৃহীত

জ্যৈষ্ঠের টানা দাবদাহে জনজীবন ওষ্ঠাগত করে তোলার পর বেশ ক’দিন আগে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। সাথে কদমও ফুটেছে। এবার প্রকৃতিতে গ্রীষ্মের রুদ্র দহন ছিন্ন করে এলো বর্ষা। পঞ্জিকার অনুশাসনে আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ। 

বাংলা সাহিত্যের একটা বড় অংশই জুড়ে আছে বর্ষা। মহাকবি কালীদাস মেঘদূত কাব্যে পাঠককে মুগ্ধ করেছেন আষাঢ়ের রূপে। আষাঢ় শব্দে আছে স্বপ্নাবিষ্ট এক মোহমুগ্ধতা। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যের বড় অংশজুড়ে আছে বর্ষা। আষাঢ় কবিতায় তিনি আহ্বান করেছেন, ওগো আজ তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে। 

হুমায়ূন আহমেদ বলতেন, ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদে এলো বান’- কবিগুরুর এই একটি লাইন শুনলেই আমাদের মনে তীব্র আনন্দ এবং তীব্র ব্যথা বোধ হয়। কেন হয় তা আমরা নিজেরাও ঠিক জানি না।

বর্ষা ও তার অনুষঙ্গ নিয়ে আমাদের কত মিথ। বর্ষার প্রথম কদম ফুল যদি কোনো প্রেমিক তার প্রেমিকাকে দেয় তা হলে তাদের সম্পর্ক হয় বিষাদমাখা। কাজেই এই ফুল কেউ কাউকে দেয় না। 

শহরের খুব কম মানুষের সঙ্গেই চাতকচাতকীর সঙ্গে পরিচয় আছে। তবে স্বপ্নজাগানো একটি গল্প সবাই জানে অদেখা ওই পাখি সম্পর্কে। পিপাসায় বুক ফেটে যেতে চায় চাতকের। দরকার তার ঠান্ডা জল। চারদিকে কত দীঘি, হ্রদ, সাগর। কত নদী সরোবর কিন্তু তাতে, কবি রামনিধি গুপ্ত প্রশ্ন করেছেন, ‘কিবা ফল চাতকীর?’

রিমঝিম এ বৃষ্টিতে ভেজার আনন্দে কাটে বাঙালির শৈশব। সুখস্মৃতিগুলো মনে রেখেই প্রতি বছর বর্ষাকে বরণ করে নেয় বাঙালি। বিশেষ করে শহরে নগরে হরেক আয়োজনে চলে বর্ষাবন্দনা। সব মিলে বর্ষা কেবল ঋতু নয়, বাঙালি সংস্কৃতির অংশ।

বর্ষার সতেজ বাতাসে জুঁই, কামিনী, বেলি, রজনীগন্ধা, দোলনচাঁপা আরও কত ফুলের সুবাস। উপচে পড়া পুকুরে রঙিন হয়ে ফোটে পদ্ম, সে কেবলই বর্ষাকে পাওয়ার জন্য। কেয়ার বনেও কেতকীর মাতামাতি। কত না মধুর এই বর্ষা।

আবহাওয়াবিদরা বলেন, বর্ষা মানে উৎস, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু গতি পেতে শুরু করবে। বাংলাদেশের ওপর পুবালি লঘুচাপ প্রভাব ফেলে। আবহাওয়ার ব্যাকরণ মেনেই এভাবেই শুরু হয় বর্ষার চিরাচরিত পথচলা। পঞ্জিকার বর্ষা চলে আসছে। বর্ষা পথ ভুলে গেলে অসহ্য গরমে পুড়তে থাকে মানুষ ও প্রাণিকুল। বাংলার কৃষি ও অর্থনীতি বৃষ্টিনির্ভর। যথাযথ বৃষ্টিপাত ফসল ফলাতে সহায়তা করে। অন্যদিকে অনাবৃষ্টি ও খরায় কৃষি ভেঙে পড়ে। কৃষকরা আকুল হয়ে সুর তোলে, আল্লা মেঘ দে, পানি দে। 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়