মানুষ উচ্ছেদ হলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা থাকে কিভাবে— প্রশ্ন সুজনের

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:২৩, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১
মানুষ উচ্ছেদ হলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা থাকে কিভাবে— প্রশ্ন সুজনের

খোরেশেদ আলম সুজন। ফাইল ছবি

বন্দর সম্প্রসারণের জন্য যদি লালদিয়ার চরের মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়, তাহলে এর আশপাশে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থাপনা থাকে কিভাবে—বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে এমন প্রশ্ন রেখেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরের উত্তর কাট্টলীতে নাগরিক উদ্যোগের এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, ‘বন্দর সম্প্রসারণের জন্য যদি লালদিয়ার চরের মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়, তাহলে এর আশপাশে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থাপনা থাকে কিভাবে? তাদের ক্ষমতার উৎস কোথায়? স্পষ্টভাবে বলছি, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ অথবা পুনর্বাসন ছাড়া লালদিয়ার চরবাসীকে উচ্ছেদ করা যাবে না। চট্টগ্রামবাসী কোনোভাবেই এ ধরনের উচ্ছেদ মেনে নেবে না।’

নগরীর পতেঙ্গায় বিমানবন্দর ঘাঁটি সম্প্রসারণের জন্য ১৯৭২ সালে কয়েক হাজার স্থানীয় বাসিন্দাকে সরিয়ে লালদিয়ার চরে পুনর্বাসন করে তৎকালীন সরকার। ১৯৭৫ সালের পর বিভিন্ন আইনি জটিলতার ফাঁকে লালদিয়ার চরের ওই ‍ভূমি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুকূলে বিএস জরিপে লিপিবদ্ধ করা হয়। এরপর থেকে লালদিয়ার চরের বাসিন্দাদের বেআইনিভাবে বসবাসকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘আমরা হাইকোর্টের রায়কে অবশ্যই সম্মান করি। আইন-আদালত সবকিছুর ঊর্ধ্বে কিন্তু মানবতা। কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়া হাতেগোনা মাত্র কয়েকদিন সময় দিয়ে প্রায় ১৪ হাজার বাসিন্দাকে তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা সম্পূর্ণ অমানবিক। আমরা এ ধরনের অমানবিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

‘চট্টগ্রামের আদি বাসিন্দাদের ভিটেমাটি উন্নয়ন প্রকল্পের নামে বিভিন্ন সংস্থা অধিগ্রহণ করে পরে সেগুলো আবার বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয়। এরকম উদাহরণ চট্টগ্রামে আছে। ২০০৫ সালেও লালদিয়ার চরের ৫০০ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল চরম অমানবিকভাবে। আমরা তখনো এর প্রতিবাদ করেছিলাম। পরবর্তী সময়ে তাদের ভিটেমাটি বেসরকারি অফডকের জন্য একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়া হয়। আমাদের আশঙ্কা, এবারও বন্দর কর্তৃপক্ষ একই পথে এগোচ্ছে

নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আব্দুর রহমান মিয়া, সাইদুর রহমান চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন, মোরশেদ আলম, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, শেখ মামুনুর রশীদ, জাহাঙ্গীর আলম, অঞ্জন কুমার দাশ, অনির্বাণ দাশ বাবু, সমীর মহাজন লিটন, সাইফুল্লাহ আনছারী, মো. ওয়াসিম, জমির উদ্দিন মাসুদ, রকিবুল আলম সাজ্জী, রাজীব হাসান রাজন, মনিরুল হক মুন্না, সালাউদ্দিন জিকু ও কামরুল হাসান রানা।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়