বজ্রপাতে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারে নিহত ৬

সিভয়েস২৪ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:১২, ২ মে ২০২৪
বজ্রপাতে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারে নিহত ৬

দেশজুড়ে টানা তীব্র তাপদাহের পর চট্টগ্রামসহ বেশ কয়েকটি জেলায় স্বস্তির বৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি এলেও বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারে ছয়জনের মুত্যু হয়েছে। বুধবার (১ মে) দিবাগত রাত ও বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল থেকে বৃষ্টির সময় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সিভয়েস২৪ প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত ... 

কক্সবাজার : পেকুয়ার মগনামা ও রাজাখালী ইউনিয়নের লবণ মাঠে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে দুই লবণ চাষীর। বুধবার (১ মে) দিবাগত রাতে বৃষ্টি আসায় মাঠে লবণ তুলতে গিয়ে তাদের এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন—মগনামা ইউনিয়নের কোদাইল্যাদিয়া এলাকার জমির উদ্দিনের পুত্র দিদারুল ইসলাম (৩০) ও রাজাখালী ইউনিয়নের ছরিপাড়া এলাকার জামাল উদ্দিনের পুত্র মো. আরাফাত (১২)।

মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরী জানান, শেষরাতে বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হলে লবণ মাঠে পলিথিন তোলা কাজ করতে যায় কোদাইল্যাদিয়া এলাকার দিদারুল ইসলাম। এ সময় বজ্রপাতে দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান তিনি। স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ইউনিয়ন পরিষদে তথ্য দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

রাজাখালী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল জানান, ভোররাতে বৃষ্টি শুরু হলে নিহত আরাফাত তার বাবার সাথে তাদের লবণ মাঠে যায়। এসময় তিনি বজ্রপাতের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন। উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মৃত্যু হয় জানান সঙ্গে থাকা লোকজন। 

পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজিবুর রহমান জানান, ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে রাজাখালী থেকে আরাফাত নামে শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তবে  হাসপাতালে আনার আগেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়। নিয়ে আসা লোকজন জানায় মাঠে লবণ তুলতে গিয়ে বজ্রপাতে শিকার হন তিনি।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, লবণ মাঠে পলিথিনে থাকা লবণ তুলতে গিয়ে দিদার ও আরাফাত বজ্রপাতের শিকার হন। খবর পেয়ে স্বজনেরা দ্রুত তাঁদের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

রাঙামাটি  : জেলার বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে তাদের এই মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন–রাঙামাটি শহরের তবলছড়ির সিলেটি পাড়ার মো. নজির (৫০)। বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের লংথিয়ান পাড়া এলাকার তনিবালা ত্রিপুরা (৩৭) ও রুপকারী ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক এলাকার বাহারজান (৬০)। 

বাড়ির পাশে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে বড়শি দিয়ে মাছ ধরছিলেন মো. নজির। এ সময় ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন তিনি। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অন্যদিকে সকাল ৯টার দিকে বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হলে গরু আনতে বাড়ির পাশে মাঠে যায় বাঘাইছড়ি উপজেলার রুপকারী ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক এলাকার বৃদ্ধা বাহারজান। এসময় বজ্রপাতের শিকার হয়ে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান, একই সঙ্গে মারা যায় গরুটিও।

এদিকে সকালের বৃষ্টির সাথে বজ্রপাতে একই উপজেলার সাজেকের লংথিয়ান পাড়ায় তনিবালা ত্রিপুরা (৩৭) নামে  এক নারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

দুজনের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছেন বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইশতিয়াক।

খাগড়াছড়ি : মাটিরাঙ্গায় কাঁচা আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতের শিকার হয়ে ইয়াছিন আরাফাত নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মাটিরাঙ্গার বড়নাল ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

স্বজনরা জানান, বৃষ্টির সময় উঠানের পাশেই আম কুড়াতে যায় দুই ভাই। এ সময় আকস্মিক বজ্রপাতে ছোট ভাই প্রাণে বেঁচে গেলেও বড় ভাই ইয়াছিন আরাফাত ঘটনাস্থলেই মারা যান। ইয়াছিন আরাফাত ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইব্রাহিম পাড়ার বাসিন্দা ইউসুফ মিয়ার ছেলে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বড়নাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন। 

আরও পড়ুন:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়