Cvoice24.com

বৈঠকেও সুরাহা হয়নি, আন্দোলন চলবে চবির চারুকলার শিক্ষার্থীদের

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:০২, ৮ নভেম্বর ২০২২
বৈঠকেও সুরাহা হয়নি, আন্দোলন চলবে চবির চারুকলার শিক্ষার্থীদের

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে শিক্ষক প্রতিনিধিদলের আপত্তিতে তা ভেস্তে গেছে। শিক্ষার্থীরাও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। 

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে চারুকলার শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসময় শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একমত হলেও একমত হয়নি চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক প্রতিনিধি দল। সভায় শিক্ষক প্রতিনিধি দলের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রণব মিত্র চৌধুরী, শিক্ষক জসিমউদদীন, জাহেদ আলী চৌধুরী যুবরাজ, সুফিয়া বেগম ও উত্তম বড়ুয়া। 

এর আগে গত বুধবার থেকে আবাসিক হল নিশ্চিতকরণ, নিজস্ব বাস চালু, ডাইনিং-ক্যান্টিনের সুব্যবস্থা ও পাঠাগার সংস্কারসহ ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনের ডাক দেয় তারা। টানা সাত দিনের মতো ক্লাস বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে ইন্সটিটিউটটির শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি জহির রায়হান অভি জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সাথে একমত হলেও চারুকলা প্রশাসন আমাদের সাথে একমত নয়! চারুকলা ইন্সটিটিউটকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মধ্যে আমরা শিক্ষকদের অনাগ্রহের কোন  কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।'

চারুকলার চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম বলেন, ‘আমরা আজ ৭ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে বৈঠকে বসেছে। কিন্তু কোন সমাধান দিতে পারেন নি। তাই আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগেই ২২ দফা দাবি জানিয়েছি। ২২ দফা দাবি মানতে ব্যর্থ হলে চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিতে হবে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে তাদের ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন চলবে।'

ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রণব মিত্র চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হয়েছে। তারা মূল ক্যাম্পাসের দিকে ফিরতে চাচ্ছে। এটি তো আর বললেই হয় না। এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার বিষয়। তাই এখন করনীয় হলো তাদের হলরুম, ক্লাসরুম, ইলেক্ট্রিসিটি, পাঠাগার ইত্যাদি সমস্যাগুলো সমাধান করার ব্যবস্থা করা। তাই করছি।’

রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘তারা বলছে মূল ক্যাম্পাসে ফিরে আসতে। উপাচার্য বলেছেন প্রক্রিয়া অবলম্বন করে তাদের দাবি বাস্তবায়ন করা হবে। তবে, তা এখনি সম্ভব না। এখন যেটি সম্ভব সেটি হলো তাদের হলরুম, ক্লাসরুম ইত্যাদি সংস্কার করা। সেটা কাল থেকেই শুরু হবে।’

এর আগে, গত বুধবার থেকে ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জনের ডাক দেয় চবির চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- নিজস্ব বাস চালু, ডাইনিং ও ক্যান্টিন তৈরি, বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা, বেশিনের সুব্যবস্থা রাখা, পর্যাপ্ত ওয়াশরুম নির্মাণ, আর্ট ম্যাটারিয়ালসের ব্যবস্থা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পাঠাগার সংস্কার, জেনারেটরের ব্যবস্থা, মেডিকেল ব্যাকআপ, খেলাধুলার পর্যাপ্ত ইনসট্রুমেন্টের ব্যবস্থা, মেয়েদের থাকার হলের ব্যবস্থা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নির্মূল, প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে বৈদ্যুতিক সংকট নিরসন, ছাত্র ও ছাত্রী মিলনায়তনের ব্যবস্থা, সেমিনারের পরিধি বাড়ানো, ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিতকরন, ওজুখানা ও নামাজ পড়ার সুব্যবস্থা, সন্ধ্যার পর পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য লকারের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ এবং ছাত্রদের হলের ব্যবস্থা

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারীতে। ২০১০ সালে চবির চারুকলা বিভাগ এবং চট্টগ্রাম সরকারি চারুকলা কলেজকে একীভূত করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নগরীর বাদশাহ মিয়া চৌধুরী সড়কে চারুকলা ইনস্টিটিউটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়