বন্দর থেকে বিপজ্জনক পণ্য সরাতে সময় তিন দিন

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:২১, ১৮ জুন ২০২২
বন্দর থেকে বিপজ্জনক পণ্য সরাতে সময় তিন দিন

সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি এলাকার বিএম ডিপোর ঘটনার পর টনক নড়ে ওঠে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের। বন্দরের ইয়ার্ডে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবার কঠোর অবস্থানে রয়েছে কর্তৃপক্ষ। আমদানির তিন দিনের মধ্যে সব ধরনের রাসায়নিক পণ্য খালাসের কঠোর নির্দেশনাও দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। শুধু বন্দরের ইয়ার্ড নয়, নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সব ডিজি কার্গো ইয়ার্ডকে ১৭টি সুপারিশ করেছে বন্দর।

বিএম ডিপোর ঘটনার পর গত ১৩ জুন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সব ব্যবসায়ী সংগঠনসহ স্টেক হোল্ডার প্রতিনিধিদের সাথে বন্দর ভবনে একটি বৈঠক করে। ডিজি কারগো পরিবহনে জড়িত আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, শিপিং এজেন্ট, সিএন্ডএফ এজেন্টরা ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এরপর ১৬ জুন এজেন্টদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেয় শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশন। 

বন্দরের ১৭টি সুপারিশের মধ্যে রয়েছে— বিপজ্জনক পণ্যের জন্য উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন পৃথক শেড নির্মাণ, সমস্ত ডিজি কার্গো ইয়ার্ডকে ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি নজরদারির আওতায় আনা, আমদানি করা সব বিপজ্জনক পণ্য ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খালাস করা, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ সহ সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্ট ও চেম্বার অব কমার্সগুলো দ্রুত ডেলিভারির জন্য তাদের সদস্য আমদানিকারকদের প্রতিনিয়ত তাগিদ দেয়া, আমদানিকারক কর্তৃক আইএমডিজি কোড বা নীতিমালা যথাযথ প্রতিপালন করে আইজিএমে পণ্যের ঘোষণা দেওয়া, বিপদজনক পণ্য পরিবহনে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ডেঞ্জারাস গুডস নীতিমালা অনুযায়ী স্ট্যান্ডার্ড প্যাকিং এবং কার্গো ও কন্টেইনারে ডিজি স্টিকার ব্যবহার করা, ডিজি কার্গো অবতরণের ২৪ ঘণ্টার পূর্বেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে বাংলাদেশ নেভির অনুমতি নিশ্চিত করা এবং বাংলাদেশ নেভি এবং বিস্ফোরক অধিদপ্তরের নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করা, বন্দর সংরক্ষিত এলাকায় দিয়াশলাই, গ্যাস লাইটার, সিগারেট ইত্যাদি নিয়ে প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা, ডিজি ইয়ার্ড এবং শেডসমূহে পণ্য ডেলিভারি নিতে আসা সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মী এবং শ্রমিকদের অবাধ যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা।

তাছাড়া ডিজি ইয়ার্ড এবং কেমিক্যাল শেডসহ সকল শেড/সিএফএস এ বন্দর ব্যবহারকারীদের নিয়মিত অংশগ্রহণে ফায়ার ড্রিল এর ব্যবস্থা করা, সব  ধরনের বিপজ্জনক পণ্য এবং পচনশীল পণ্য প্রথম অকশানেই নিষ্পন্ন করা এবং স্পট নিলাম করা, সাউথ কন্টেইনার ইয়ার্ডে রক্ষিত অকশান কন্টেইনার সমূহ হতে প্রতিদিন ন্যূনতম ৫০ টি কন্টেইনারে পণ্য নিলামে নিষ্পন্ন করা, কেমিক্যাল পণ্য জাহাজ থেকে অবতরণের পর পরই আমদানিকারকরা যাতে ডেলিভারি নিতে পারে সে লক্ষ্যে শুল্ক বিভাগ হতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা, কেমিক্যাল পণ্য এবং পচনশীল পণ্য আমদানি করার পর চট্টগ্রাম বন্দর অথবা ডিপো হতে ডেলিভারি না নিলে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং প্রথম বিডে পণ্য নিলাম নিষ্পত্তি করার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক সিভয়েসকে বলেন, গত ১৩ জুন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সব ব্যবসায়ী সংগঠনসহ স্টেক হোল্ডার প্রতিনিধিদের সাথে বন্দর ভবনে একটি বৈঠক করে। ডিজি কারগো পরিবহনে আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, শিপিং এজেন্ট, সিএন্ডএফ এজেন্টসহ সংশ্লিষ্টদের এসব নির্দেশনা দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তার খাতিরেই এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কাজেই রাসায়নিক পণ্য আমদানি করলে তিনদিন বা ৭২ ঘন্টার মধ্যেই তা খালাস করে নিতে হবে। এ ব্যাপারে কোন ছাড় দেয়া হবেনা।

সিভয়েস/টিএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়