সরকার নির্ধারিত মূল্যে চিনি বিক্রিতে নারাজ ব্যবসায়ীরা

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ৯ ডিসেম্বর ২০২২
সরকার নির্ধারিত মূল্যে চিনি বিক্রিতে নারাজ ব্যবসায়ীরা

তিন সপ্তাহ আগেই চিনির দাম নির্ধারণ করে দেয়া হলেও তা মানতে নারাজ খুচরা বিক্রেতারা। ঘুরেফিরেই চলছে আগের দামে বিক্রির পায়তারা। বাজারে নির্ধারিত দামের চেয়ে কেজিতে ১৩ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি।

গত ১৭ নভেম্বর সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যেই কেজিতে ১৩ টাকা বাড়িয়ে প্যাকেট চিনির দাম ১০৮ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। পাশাপাশি নতুন দর অনুযায়ী প্রতিকেজি খোলা চিনির দাম পড়বে ১০২ টাকা। অথচ খুচরা দোকানগুলোতে প্যাকেট চিনি ১১০ ও খোলা চিনি ১১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, পাইকার থেকে চিনি কিনে দোকানে আনতে খরচ বেশি পড়ে। সে হিসেবে নির্ধারিত দরে চিনি বিক্রি করলে লোকসান গুণতে হবে। 

নগরের হালিশহর এলাকার এন এম স্টোরের মালিক মো. এনাম সিভয়েসকে বলেন, পাইকার থেকে চিনির বস্তা কিনে পিকআপে করে নিয়ে আসি। আগে ৫ হাজার টাকা দিলেও এখন ৭ হাজার টাকায়ও মাল আনতে রাজি হয় না। তার উপর দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারির বেতন তো আছেই। তাই আমরা বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

নগরের আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা মো. শাহজাহান বলেন, নির্ধারণের পরেও যদি বাড়তি দামে চিনি বিক্রি হয় তাহলে বিষয়টি দুঃখজনক। যে যেভাবে পারছে বাড়তি দর আদায় করছেই। চিনি আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। তাই আমরা জেনেশুনে বাড়তি দরে কিনতে বাধ্য হচ্ছি। প্যাকেট চিনির গায়ে ১০৮ টাকা দাম লেখা, তারা বিক্রি করছে ১১০ টাকায়। 

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন সিভয়েসকে বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীয়া নির্ধারিত দরে পণ্য বিক্রি করবে না। এটা খুব স্বাভাবিক। কাজেই ক্রেতাদের সচেতন হতে হবে। ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ জানাতে হবে। পাশাপাশি ভোক্তা অধিকার ও প্রশাসনকে পাইকারের পাশাপাশি খুচরা বাজার নজরদারি বাড়াতে হবে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আনিছুর রহমান বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। এরমধ্যে নির্ধারিত দামে ভোজ্যতেল ও চিনি বিক্রির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হয়। তবুও ক্রেতারা প্রতারিত হলে বা বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি হলে আমাদের কাছে অভিযোগ করার সুযোগ তো আছেই। আমরা ব্যবস্থা নেব।

এদিকে বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় দামটাও ক্রেতার নাগালের মধ্যে এসেছে। বাজারে প্রতিকেজি ফুল ও বাঁধাকপি ২০ থেকে ৩০ টাকা, ৮০, পাতলা সিম ৩০ থেকে ৪০, বিচি সিম ৬০ থেকে ৮০, পেঁপে ২০, গোল বেগুন ৫০, নতুন আলু ৪০, পুরাতন আলু ২৫, মাটিয়া আলু ৬০, জালি কুমড়া ৫০, শসা ৮০, সালগম ৪০, লাউ ৫০, করলা ৬০, উচ্ছে ৮০, কাঁচকলা হালি ৩০, গাজর ৫০, ধুন্দল ও চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০, কচুরমুখী ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রায় সব শাকের ছোট আঁটি ১০, বড় বা মাঝারি আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। 

খুচরা বাজারে আগের মতোই চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। বাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি মিনিকেট ৭৫ থেকে ৮০, মোটা চাল ৬০, নাজিরশাইল ৮০ থেকে ৮৫, কাটারি আতপ ৭৮ থেকে ৮২ ও চিনিগুড়া ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

এদিকে প্রতি কেজি তেলাপিয়া মাছ ১৬০ থেকে ২শ, বড় রুই ৩২০, বড় কাতল মাছ ৩শ, শিং মাছ ৩৫০ থেকে ৪শ, বোয়াল মাছ ৩৫০ থেকে ৪শ, পাবদা মাছ ৩৫০ ও কাঁচকি মাছ ৩শ থেকে ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে মুরগিও বিক্রি হচ্ছে আগের দরেই। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা থেকে ১৪৫ টাকা দরে। পাশাপাশি প্রতিকেজি সোনালি মুরগি ৩শ ও লেয়ার মুরগি ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

তাছাড়া বাজারে প্রতিলিটার বোতলজাত ভোজ্যতেল ১৯০ ও পাঁচ লিটার ভোজ্যতেল ৯২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি খোলা আটা ৬০ থেকে ৬২ ও প্যাকেট আটা ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়