বিধ্বস্ত বিমানের পাইলটের মৃত্যু হাসপাতালে

সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:৪৬, ৯ মে ২০২৪
বিধ্বস্ত বিমানের পাইলটের মৃত্যু হাসপাতালে

চট্টগ্রামে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদ মারা গেছেন। চিকিৎসাধীন আছেন আহত কো-পাইলট উইং কমান্ডার সুহান।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পতেঙ্গার বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে (নেভি হাসপাতাল) পাইলট জাওয়াদ  চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। 

 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উইং কমান্ডার সুহান বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর (বিএএফ) জহুরুল হক ঘাঁটির মেডিকেল স্কোয়ার্ডনে চিকিৎসাধীন আছেন।

জাওয়াদের মৃত্যুর বিষয়টি সিভয়েস২৪-কে নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের উপকমিশনার (বন্দর) শাকিলা সোলতানা। তিনি বলেন, ‘বিমান বাহিনীর বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমানের পাইলট ও কো-পাইলট প্যারাসুট দিয়ে নেমে এলে তাদেরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেলা ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদের মৃত্যু হয়।’

আহত আরেক পাইলটকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে

তিনি আরও বলেন, ‘স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদের অবস্থা প্রথম থেকেই খারাপ ছিল। উদ্ধারের পরেও তার রেসপন্স ছিল না। আহত অপর উইং কমান্ডার সুহান বর্তমানে জহুরুল হক ঘাঁটির মেডিকেল স্কোয়ার্ডনে চিকিৎসাধীন আছেন।’

এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিমান বাহিনীর ওয়াইএকে১৩০ নামক যুদ্ধবিমানটিতে উড্ডয়নকালে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এ সময় বিমানের পেছন দিকে আগুন লেগে যায়। বিমানটি চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের অদূরে ১১ নং ঘাটের নতুন পতেঙ্গা টার্মিনালের বিপরীত পাশের এইচএম স্টিল কারখানার সামনে কর্ণফুলী নদীতে আছড়ে পড়ে।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিভয়েস২৪-কে জানিয়েছেন, ওয়াইএকে১৩০ নামক যুদ্ধবিমানটি চট্টগ্রাম বন্দরের সমুদ্রতীরের কাছাকাছি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এ সময় বিমানে থাকা পাইলট ও কো-পাইলট প্যারাসুটের মাধ্যমে আহত অবস্থায় নিচে নেমে আসেন।

অসীম জাওয়াদ ট্রেনিং জীবনে পেয়েছেন ‘সোর্ড অফ অনার’

স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদ ২০০৭ সালে এসএসসি ও ২০০৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ- ৫ পেয়ে সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হন সাভার ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে। ২০১০ সালে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স একাডেমিতে (বাফা) যোগদান করেন। ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। তার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলায়।

তিনি PT-6 , L-39ZA , F-7MB, F-BG1 বিমান চালিয়েছেন। তিনি ছিলেন F-7MG1 এর অপারেশনাল পাইলট ও এলিমেন্ট লিডার। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে জাতিসংঘের মিশনে তিনি নিয়োজিত ছিলেন। বিভিন্ন কোর্সের তাগিদে ভ্রমণ করেছেন চীন, ভারত, তুরস্ক ও পাকিস্তানে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিয়োজিত ছিলেন ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টর’স স্কুল অফ বিএএফ-এ স্টাফ ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে।

অসীম জাওয়াদ নিজের ট্রেনিং জীবনে সকল বিষয়ের শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পেয়েছেন গৌরবমণ্ডিত ‘সোর্ড অফ অনার’। সাভার ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এখন পর্যন্ত তিনিই একমাত্র ‘সোর্ড অফ অনার’ বিজয়ী। ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টরস কোর্সে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পেয়েছেন ‘মফিজ ট্রফি’। এছাড়া তার দায়িত্বশীলতা ও কর্মক্ষেত্রে দক্ষতার জন্য প্রশংসা পেয়েছেন চিফ অফ এয়ার স্টাফ থেকে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়