Cvoice24.com

রামগড়ে সহজে মিলছে মাদক, নেশায় বুঁদ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা

রামগড় প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:৫৮, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩
রামগড়ে সহজে মিলছে মাদক, নেশায় বুঁদ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা

প্রতীকী ছবি

মাদকের নিরাপদ রুট হয়ে উঠেছে খাগড়াছড়ির সীমান্ত উপজেলা রামগড় সহ পাশ্ববর্তী উপজেলা। এখানে হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক, বাড়ছে সামাজিক অবক্ষয়। শহর থেকে গ্রাম সব জায়গায় সন্ধ্যা নামতেই ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজাসহ বিভিন্ন দেশ-বিদেশী মাদকদ্রব্য বিক্রেতা ও সেবনকারীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। এতে আসক্ত হয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারাও। আইনশৃংখলা বাহিনীর অভিযানেও সীমান্ত হতে নিয়মিত জব্দ হচ্ছে মাদকজাত দ্রব্য। তার পরও ঠেকানো যাচ্ছে না মাদকের এই আস্ফালন।  

খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার, গলি, লেক কিংবা বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা, জনমানবহীন যে কোনো জায়গা তরুণ ও যুবকদের মাদকসেবন করতে দেখা যায়। ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা সেবনে জড়াচ্ছে স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। আবার পাহাড়িপল্লীর তৈরী চোলাই মদ পান করে রাস্তা-ঘাটে মাতলামি করতে দেখা যায় অনেককে। 

স্থানীয়রা জানায়, শিক্ষার্থীদের মাদকসেবনে জড়ানোর পেছনে প্রথমে ধুমপান গ্রহণে উৎসাহী করে কিছু বিপদগামী তরুণ। পরে সঙ্গদোষে প্রথমে ফ্রি মাদক সেবন থেকে ধীরে ধীরে আসক্ত হয়ে পড়লে তারা নিজেরাও একসময় মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। আর এসব মাদকাসক্তরা বিপথে চলে যায়। 

সম্প্রতি রামগড় বিজিবি ব্যাটালিয়ন বিপুল পরিমাণ মাদক ধ্বংস করে

অনুসন্ধানে জানা যায়, রামগড়  উপজেলায় সীমান্ত রুট হিসেবে পরিচিত লাচারীপাড়া, সোনামিয়ার চর, কাঁশিবাড়ি, বল্টুরাম, অফিসটিলা, থানাঘাট, মন্দিরঘাট, দারোগাপাড়া, ফেনীরকুল চর, কারবারীর টিলা, ছোটখেদা, হাবিবুল্লাহর চর ও পাশ্ববর্তী ভূজপুর থানার বাগানবাজার, রহুল আমীনের চর, নলুয়াটিলা, আঁধার মানিক, সিকদারখীল এবং  মিরসরাই উপজেলার বৈদ্বগেড়ামারা, লেবুবাগান , কয়লারমুখ প্রবুত এলাকা দিয়ে আসছে গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইনসহ নানা মাদকদ্রব্য। পরে এসব মাদক ছোট-বড় ব্যবসায়ী ও সোর্সদের মাধ্যমে রামগড়সহ পাশ্ববর্তী উপজেলার শহর-গ্রামে ছড়িয়ে দেয়া হয়। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে প্রতিনিয়ত মাদকের চালান ধরা পড়লেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে গডফাদাররা। 

অভিভাবকরা বলছেন, মাদকসেবনের ভয়াবহতায় উদ্বিগ্ন তারা। যার কারণে এলাকায় চুরি-ছিনতাইসহ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা। বিপথে পা বাড়াচ্ছে আদরের সন্তানরা।

উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, ‘মাদকের ভয়াবহতা এখন শিক্ষার্থীদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়েছে। মাদকাসক্তের হাতে সম্প্রতি খুনের ঘটনা ঘটেছে। তবে কিছু মাদককারবারী আটক হলেও আইনি দুর্বলতায় জেল থেকে বের হয়ে আবারো মাদকব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। 

উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কারবারী সম্প্রতি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বলেন, ‘আমরা মাদক নিয়ন্ত্রণের কাজ করে যাচ্ছি। সীমান্ত উপজেলা হওয়াতে মাদক স্থায়ী নির্মূল করতে না পারলেও প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মাদকের ব্যাপারে কোন ছাড় দিচ্ছে না। এজন্য পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা আরো বৃদ্ধি করা গেলে মাদকের ভয়াবহতা কিছুটা কমানো সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।’

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘মাদকের ব্যাপারে আমরা কোনো ছাড় দিচ্ছি না। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে মাদক ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে। তিনি আরও বলেন, মাদক বিস্তার রোধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।’
 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়