Cvoice24.com


ব্যবসায়ীদের ফাঁদে ও পেঁয়াজের ঝাঁজে ক্রেতাদের চোখে জল

প্রকাশিত: ১২:১২, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
ব্যবসায়ীদের ফাঁদে ও পেঁয়াজের ঝাঁজে ক্রেতাদের চোখে জল

ফাইল ছবি

ভারত ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ বাংলাদেশে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। আবার মায়ানমার থেকে গরুর ট্রলার বোঝায় ৩২টন চোরায় পেঁয়াজ আসার খবর পাওয়া গিয়েছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বসে আছেন অদৃশ্য ফাঁদ পেতে‌। ফলে ভারত বর্ডার থেকে পেঁয়াজ আসার পর আরো পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা আসে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ধরে রেখেছে পেঁয়াজের দাম। ভোক্তাদের দুর্ভোগে শুধুই ভরসা হয়ে উঠছে ব্যবসায়ীদের মিথ্যে আশ্বাস।

আজ (শনিবার) দেশের সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিলেও তা খাতুনগঞ্জ বাজারে আসা পর্যন্ত কেজি ৭০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। কারণ পূর্বে এলসি নিতেন ২৫০ মার্কিন ডলারে। বর্তমান এলসি মূল্য ৭০০ মার্কিন ডলার ও ছাড়িয়ে যেতে পারে। এতে দাম কমার কোন সম্ভাবনা দেখছি না। তারা নতুন এলসি'র পণ্যের দাম বেশি হবে বলেও জানান।

অন্যদিকে শুক্রবার ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ডিরেক্টরেট অফ ফরেন ট্রেডস একটি বৈঠকে বসে। সেই বৈঠকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ডিরেক্টরেট অফ ফরেন ট্রেডস জানান, আজ (শনিবার) বার থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আসার সঙ্গে সঙ্গে দরে কিছুটা স্থিতিশীলতা আসবে বলে অনুমান করা যাচ্ছে। তারা আরও জানান, বাংলাদেশে পেঁয়াজ আসবে ট্রাকে ও চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে।

এদিকে বাজারে ক্রেতা না থাকায় অবসর সময় পার করছে আরত মালিক ও কর্মচারীরা। অন্য সময় চাহিদার কারণে পণ্যের মূল্য উঠা নামার কথা বললেও এবারও গত বছরের মতো পেঁয়াজের দাম কমাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা। পেঁয়াজের বাজারে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।

পটিয়া থেকে পেঁয়াজ কিনতে আসা ব্যবসায়ী মো. আজাদ বলেন, 'পেঁয়াজের দাম অপরিবর্তিত থাকায় আমরা পেঁয়াজ কেনার দুঃসাহস করছি না। বর্তমান ৬০ টাকা বাজার দামে পেঁয়াজ কিনে আমার প্রতিষ্ঠানে নিতে তা ৭০ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। যার কারণে অল্প অল্প কিনতে হচ্ছে। ফলে পরিবহন সহ যাবতীয় খরচ বেশি পড়ে যাচ্ছে। বেশি কেনার পর যদি হঠাৎ দাম কমে যায় আমার মত ছোট ব্যবসায়ীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হব।'

হামিদ উল্লাহ খান মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস সিভয়েস'কে বলেন, 'বাজারে ক্রেতা না থাকায় পেঁয়াজের আজকের বাজার দর ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। মায়ানমারের পেঁয়াজ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আসার কথা থাকলেও তা এখনও এসে পৌছায়নি।'

তিনি আরও বলেন, 'মায়ানমারে এখনও লকডাউন থাকায়, তারা সঠিক সময়ে মাল রপ্তানি করছেন না। তবে মায়ানমার থেকে গরুর ট্রলার বোঝায় ৩২ টন চোরায় পেঁয়াজ আসার খবর পাওয়া গিয়েছে। যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল হবে।'

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন সিভয়েস'কে বলেন, 'দাম না কমার ব্যাপারটি ব্যবসায়ীদের ফাঁদ বলে দাবি করছেন তিনি। তবে, আন্তর্জাতিক বাজারে পেয়াজের দাম কিছুটা বেশি আছে, ওই ইস্যু তারা কাজে লাগাবে। ভারত ছাড়া অন্যান্য দেশ যেমন ইন্দোনেশিয়া, মায়ানমার অথবা তুরস্ক থেকে আসবে তখন দাম টা একটু বৃদ্ধি পাবে। আবার তারা ওভার এলসি দেখিয়ে বলতে পারে, তাদের কেনা বেশি তাই বেশি দামে বিক্রয় করতে হবে।'

ব্যবসায়ীদের প্রতারণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'কাল (শুক্রবার) ঢাকায় একদল ব্যবসায়ী প্রেস কনফারেন্স করে বলেছে, গত বছরের ন্যায় এ বছর ও সরকার ভর্তুকি দিলে তারা কম দামে পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবে। বর্তমান বাজারে যে পেঁয়াজগুলো রয়েছে তা এলসি ২৫০ মার্কিন ডলার অনুযায়ী সর্বোচ্চ ২০ থেকে ২৫ টাকা দর পড়েছে প্রতি কেজিতে। কিন্তু তারা এ পেঁয়াজগুলো বিক্রি করছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা মূল্যে। কিন্তু তারা দামও ধরে রেখেছে, ভর্তুকিও চাচ্ছে। ভোক্তাদের অন্য কোন ব্যবস্থা না থাকায়, সকল কষ্ট সহ্য করতে হয়।'

সিভয়েস/আরএস/এসসি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়