চট্টগ্রামে মহাজোটের শরিকদের বেহাল দশা

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
চট্টগ্রামে মহাজোটের শরিকদের বেহাল দশা

ফাইল ছবি।

চট্টগ্রামে মহাজোটের শরিকদের বেহাল দশা, অধিকাংম দলের চট্টগ্রামে অফিস ও কমিটি নেই। মহাজোটের সম্মিলিত কোনো ধরণের কর্মসূচিও দৃশ্যমান নয়। এছাড়া সম্মিলিত কর্মসূচি পালন করেছে প্রায় ২ বছর। মহাজোট প্রায় ১২ বছর ক্ষমতায় থেকেও দল গোছানোতো দূরের কথা চট্টগ্রামের কমিটি ও ৎ কার্যালয়ও ঠিকঠাক মতো নেই কোনো কোনো দলের। যেসব দলের কমিটি ও অফিস আছে নেতাকর্মীদের একটি রুম ভাড়া নিয়ে কোনো মতে দলের ৎ কর্মযজ্ঞ সারেন কেউ কেউ। আবার কেউ কেউ  অফিস খোলেন কয়েক সাপ্তাহ পরপর।

এখন পর্যন্ত অনেক দলের নিবন্ধন পাওয়াতো দূরের কথা নির্বাচন কমিশনের দেয়া শর্তগুলো পুরণ করার ধারেকাছেও নেই কোনো কোনো দলের। দৈন্যদশায় স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে দলীয়প্রার্থী দেয়ার চিন্তাতো নেইই, একই সাথে ‘জণাকীর্ণ’ দলগুলো জোটের মনোনয়ন পাওয়ার আত্মবিশ্বাসও হারিয়ে ফেলেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীন জোট ১৪টি দল নিয়ে গঠিত হলেও জোটপ্রধান আওয়ামী লীগসহ মূলত দল রয়েছে ১৩টি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ, জাসদ (ইনু), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি (মঞ্জু), ন্যাপ (মোজাফফর), গণতন্ত্রী পার্টি ও সাম্যবাদী দল এই আটটি দলের নিবন্ধন আছে। গণ আজাদী লীগ, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, বাসদ, কমিউনিস্ট কেন্দ্র এবং জাসদ (আম্বিয়া) এই পাঁচটি দলের নিবন্ধন নেই।

সম্প্রতি এসব দল নির্বাচন কমিশনের দেয়া শর্ত পূরণ করতে না পারায় আবেদনও বাতিল হয়েছে অনেকের। এই দিকে তরিকত ফেডারেশন চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় সাংগঠনিক ভাবে শক্ত অবস্থানে রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট দলের চট্টগ্রামের একাধিক নেতা জানান, আর্থিক সঙ্কট ও সাংগঠনিক কাঠামো দুর্বল হওয়ায় সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়নি ক্ষমতাসীনদের বেশির ভাগ শরিক। দুয়েকটি দল প্রার্থী যা-ও দিয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা শক্ত অবস্থানে থাকায় তাদের ভরাডুবি হয়েছে। আবার অনেক জায়গায় প্রার্থী দেয়ার মতো নেতাকর্মী খুঁজে পায়নি শরিক দলগুলো। ভোটের রাজনীতিতে দুর্বল অবস্থায় আগামী স্থানীয় ও জাতীয়  নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী দেয়া দূরের কথা, অনেকেই জোটগত মনোনয়ন চাওয়ার আশাও ছেড়ে দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটির চট্টগ্রাম জেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রম রয়েছে। ক্ষমতাসীন জোটের আরেক শরিক জাসদ। স কোন্দলে দলটি ভেঙে দুই অংশে বিভক্ত হয়েছে। এক অংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু তথ্যমন্ত্রী। চট্টগ্রামে সাংগঠনিক জেলায় সক্রিয় কার্যক্রম রয়েছে দলটির। তবে বিভক্ত হওয়ার পরে চট্টগ্রামে দলটি দুর্বল হয়ে পড়েছে।

ক্ষমতাসীন জোটের আরেক শরিক সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ার সাম্যবাদী দল।
স কোন্দলে দলটি ভেঙে দুই অংশে বিভক্ত হয়েছে। ফলে এদের সাংগঠনিক অবস্থা আরো
নাজুক চট্টগ্রামে। দলের সাম্যবাদী দলের নেতা দিলীপ বড়ুয়ার বাড়ি চট্টগ্রামে তবুও কমিটি করতে পারিনি।

ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির চট্টগ্রাম জেলায় কমিটি রয়েছে। ঢিমেতালে চলা এ দলটির
চলছে কোন রকম। শক্তিশালী প্রার্থী না থাকায়  স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কোন অংশ গ্রহণ নেই। একইভাবে সারা দেশে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে বাসদ, গণতন্ত্রী পার্টি, তরিকত ফেডারেশন, গণ আজাদী লীগ, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি ও কমিউনিস্ট কেন্দ্রসহ শরিকদের অন্যদলগুলো।

রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক ড.মাসুম চৌধুরী জানান, ক্ষমতাসীন জোটের শরিক দলগুলোর করুণ দশা বিদ্যমান।দলীয়ভাবে সরকারের কাছে আসতে পেরেছেন, তারা কিছু সুযোগ সুবিধা পেয়েছেন। ওই দলগুলোর বাকি নেতারা বঞ্চিত রয়েছেন। ফলে দল গোছানোর ব্যাপারে কেউই মনোযোগ দিতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান জানান, চট্টগ্রামে শরিকদের যথাযথভাবে মূল্যায়ন না করার কারণে বিুব্ধ হয়ে আছে। আওয়ামী লীগের উচিত হবে,শরিকদের মূল্যায়ন করে তাদের অবস্থান আরো শক্ত করা। এতে জোটও শক্তিশালী হবে। উপজেলাগুলোতে এখনো কমিটি দিতে পারেনি। চেষ্টা চলছে দলকে গুছিয়ে আনতে। আমরা মনে করি শরিক দলগুলো চট্টগ্রামে জোটগতভাবে ভালো আছে। শক্তিশালী অবস্থানে আছে। আওয়ামী লীগ সব সময় শরিকদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকে।

চসিক নির্বাচনে প্রার্থী দিবে কিনা এক প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে কোন প্রার্থী দেয়া হবেনা। কিন্তু মহাজোটের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা হবে।

-ষিভয়েস/এমআই/এসসি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়