চবিতে ৪ বছরে উদ্ধার তিন শতাধিক দেশিয় অস্ত্র

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:১১, ১০ মার্চ ২০২২
চবিতে ৪ বছরে উদ্ধার তিন শতাধিক দেশিয় অস্ত্র

সংঘর্ষের পরে অভিযান চালিয়ে গত চার বছরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলগুলো থেকে প্রায় তিন শতাধিক দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপরেও প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে হলগুলোতে ঢুকছে নানান ধরনের অস্ত্র। কোনো গ্রুপ-উপগ্রুপ হাতাহাতিতে জড়ালেই চোখে পড়ে এসব অস্ত্রের বিপুল সমাহার।

সর্বশেষ গত ৮ মার্চ রাত থেকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুইদিনে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় বগিভিত্তিক গ্রুপ সিএফসি ও বিজয়ের নেতাকর্মীরা। এসময় উভয় পক্ষকে ক্যাম্পাসে অস্ত্রের মহড়া দিতে দেখা যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে গতকাল বুধবার দুইটি আবাসিক হলে তল্লাশি চলায় পুলিশ। এসময় রামদা, পেট্রোল বোমাসহ বিপুল পরিমাণ দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অভিযানে জব্দ হওয়া বেশিরভাগ অস্ত্র পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়ায় অপরাধীদের শনাক্ত করা যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে একটি-দুটি নয় বর্তমানে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নয়টি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। এগুলো বিভক্ত রয়েছে দু’টি ধারায়। একপক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী। অপরপক্ষ সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী। এসব গ্রুপ নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে হলগুলোতে প্রতিনিয়ত ঢুকাছে দেশি-বিদেশি নানা অস্ত্র। গত ৬ বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়াকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সংঘর্ষগুলো হচ্ছে বলে ধারণা করছেন গোয়েন্দা সংস্থা। পান থেকে চুন খসলে নেতাকর্মীদের হাতে দেখা যায় দেশিয় অস্ত্র। এসব অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে দেশি-বিদেশি রিভলবার, রামদা, জিআই পাইপ, হকস্টিক অন্যতম। এসব ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গত দুই বছরে আহত হয়েছেন শতাধিক ছাত্রলীগ কর্মী। এসব ঘটনায় অনেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী হারিয়েছে পা, বরণ করেছেন পঙ্গুত্ব। অনেকের জীবন বিপন্ন হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায় অস্ত্রধারীরা।

ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘চবি ছাত্রলীগ কোনো ধরনের সংঘর্ষ ও অস্ত্রের রাজনীতির পক্ষে না। আমরা বারবার পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি, সিসি ক্যামেরা দেখে যারা ছাত্রলীগ নাম দিয়ে অস্ত্রের রাজনীতি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। আর হলগুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি থাকার মূল কারণ হচ্ছে বগিভিত্তিক রাজনীতি থাকা। বগিভিত্তিক রাজনীতি না থাকলে চবি ছাত্রলীগের সব সমস্যার সমাধান হবে।

তিনি বলেন, ‘সারা দেশের মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে প্রকৃত অপরারীধের আইনের আওতায় নিয়ে এলে এখানে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দল, পূর্ণাঙ্গ কমিটির দাবি আবার কমিটি না হতেও একে অপরের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে বিভিন্ন গ্রুপ। পুলিশের সহায়তায় আমরা অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন সময় দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করেছি। তবে আমরা চাই ক্যাম্পাসে সবসময় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকুক। প্রশাসন অপরাধীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। আমরা অস্ত্রধারী কাউকে ছাড় দিব না।’

-সিভয়েস/এমআর

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়