Cvoice24.com

মজুদ পেঁয়াজে চলবে আরো চারমাস!

মিনহাজ মুহী, সিভয়েস২৪

প্রকাশিত: ১৯:৫৯, ২৩ মার্চ ২০২৪
মজুদ পেঁয়াজে চলবে আরো চারমাস!

অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে এই নিষেধাজ্ঞার কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে পেঁয়াজের যে মজুদ তা দিয়ে অন্তত আরো চার মাস চাহিদা মেটানো যাবে বলে ধারণা করছেন তারা। তবে অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে পেঁয়াজের ঝাঁজ বাড়িয়ে দেবেন না— এই শঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ভারতীয় নিষেধাজ্ঞাকে পুঁজি করে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়াবে অসাধু ব্যবসায়ীরা-এমন আশঙ্কা ক্রেতা-বিক্রেতা সবার।

খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘নতুন করে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও বাংলাদেশ তথা চট্টগ্রামে এর প্রভাব পড়বে না। কেননা, বর্তমানে বাজারে যা পেঁয়াজ সরবরাহ আছে; তা দিয়ে চট্টগ্রামের জন্য আগামী তিন থেকে চার মাস চলবে। তবে দামের কথা চিন্তা করলে হয়তো নতুন করে ১০ টাকা করে বাড়তে পারে। তবে সেটি আগের (বেশি) দামে যাবে না।’

শনিবার চট্টগ্রামের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারিতে মেহেরপুর (দেশি) পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৫০ টাকা, ফরিদপুর (দেশি) পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৫৫ এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। খুচরাতেও দাম কমেছে এসব পেঁয়াজের। অথচ গত সপ্তাহে (১৮ মার্চ) এসব পেঁয়াজের দাম ছিল অর্ধেকের বেশি। যার মধ্যে দেশি (মেহেরপুর-ফরিদপুর) পেঁয়াজ মানভেদে প্রতিকেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। 

তবে আবারও আগের দামের কাছাকাছি ফিরে যাওয়ার শঙ্কা করছেন কেউ কেউ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, ‘গত সপ্তাহে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার খবরে হু হু করতে কমতে থাকে দাম। বর্তমানে যে দামে বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। তা বলতে গেলে লোকসান দিয়েই বিক্রি করতে হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন বাজারে যেসব ভারতীয় পেঁয়াজ রয়েছে তা চোরাই পথে আসা। ভারত থেকে বৈধ পথে পেঁয়াজ আসার খবরে দেশি পেঁয়াজ থেকে শুরু করে ভারতীয় পেঁয়াজ সব ধরনেরই দাম কমে গেছে। এখন তো শুনতেছি নতুন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। তাহলে যেভাবে পেঁয়াজের দাম কমেছিল; সেভাবে আবারও আগের দামে ফিরে যাবে পেঁয়াজের দাম। এছাড়া খুচরা পর্যায়েও পেঁয়াজের দাম নতুন করে প্রভাব পড়বে।’

খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ আসার খবরে গত সপ্তাহে দাম একদম কমে গিয়েছিল। ভারতীয় যে পেঁয়াজ বাজারে আছে তা চোরাইপথে এসেছে। সেগুলো পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। আর মেহেরপুর (দেশি) পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং ফরিদপুর (দেশি) পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

প্রভাব পড়বে খুচরা বাজারে

এখনও কমে যাওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। অনেক খুচরা বিক্রেতা জানেন না নতুন করে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে পেঁয়াজের ঝাঁজ বাড়ানো শুরু করবেন বিক্রেতারা।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, কোনো পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে খুচরায়ও বাড়ে। আবার সেখানে দাম কমলে আমাদেরও কমে যায়। মূলত আমাদের কেনার উপরই নির্ভর করে বিক্রির দাম।

এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেছেন, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি হলেও যেমন না হলেও তেমন। কেননা, তারা পাইকারি দামে যেভাবে পেঁয়াজ কিনে থাকেন; সেই হিসাব করেই ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। তাই তাদের বেশি লাভ বা লোকসান হয় না।’

আরেক খুচরা ব্যবসায়ী জানান, শনিবার সকালে স্থানীয় আড়ত থেকে পাইকারি দামে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০ এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা দরে কিনেছেন। তাই তিনি খুচরায়ও সেই হিসাবে বিক্রি করছেন।

প্রসঙ্গত, পেঁয়াজ রপ্তানিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। শুক্রবার (২২ মার্চ) বিকেলে দেশটির সরকার এমনটি জানায়। এর আগে, দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত বছরের ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সরকার, যার মেয়াদ ৩১ মার্চ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এ নিষেধাজ্ঞা শিগগিরই তুলে নেওয়া হবে বলেও আশা করেছিলেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। তবে গতকাল (শুক্রবার) বিকেলে এক আদেশে ভারত সরকার জানায়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পেঁয়াজের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়