লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর আরাফাতের ময়দান

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:৩২, ৮ জুলাই ২০২২
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর আরাফাতের ময়দান

ছবি-সংগৃহীত

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিয়ামাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাকা’ এ তালবিয়া পাঠ করতে করতে মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হচ্ছেন হজযাত্রীরা। শুক্রবার (৮ জুলাই) সকাল থেকে প্রখর রোদ উপেক্ষা করে হজরত আদম (আ.)-এর স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক স্থান আরাফাতে জড়ো হতে থাকেন তারা। আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হজের প্রধান আনুষ্ঠানিকতা।

বুধবার (৬ জুলাই) ইসলামের পবিত্রতম স্থান কাবা শরিফ তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ বছরের হজ। এবার প্রায় ১০ লাখ মানুষ হজে অংশ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) মিনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন হাজযাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত হজযাত্রীরা তাবুর শহর মিনায় অবস্থান করেন। এ সময় তারা জোহর, আসর ও মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। ফজরের নামাজ আদায়ের পরই হজের দ্বিতীয় রুকন আদায়ের জন্য আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন।

ইতোমধ্যে আরাফাতের ময়দানে লোকারণ্যে পরিণত হয়েছে। লাখো কণ্ঠে সমস্বরে উচ্চারণ হচ্ছে- ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্নিমাতা লাকা ওয়ালমুক’। অর্থাৎ- আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সম্রাজ্যও তোমার।’

নিয়ম অনুযায়ী, জোহরের নামাজের আগে আরাফাত ময়দানের মসজিদে নামিরার মিম্বরে দাঁড়িয়ে হাজিদের উদ্দেশে হজের খুতবা দেয়া হয়। এ খুতবায় আল্লাহভীতি ও মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের ব্যাপারে কথা বলা হয়।

নিয়ম অনুযায়ী, এ খুতবা আরবিতে দেয়া হয়। তবে এবার ১৩টি ভাষায় হজের খুতবা সম্প্রচার করা হবে। এর মধ্যে বাংলাও থাকছে।

জুমা ও আসরের নামাজ একসঙ্গে আরাফাতের ময়দানে আদায় করবেন হজযাত্রীরা। এরপর সেখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন। সূর্যাস্তের পর হজযাত্রীরা আরাফাতের ময়দান ছেড়ে মুজদালিফার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।

সেখানে তারা এক আজানে আদায় করবেন মাগরিব ও এশার নামাজ। শনিবার (৯ জুলাই) আল্লাহ নামে পশু কোরবানি ও ঈদুল আজহার নামাজের মধ্যদিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।

সৌদি কর্তৃপক্ষ হাজিদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে। সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের চিকিৎসার জন্য ইসলামের দুই পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনায় ২৩টি হাসপাতাল এবং ১৪৭টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে।

মিনায় তাদের চিকিৎসার জন্য চারটি হাসপাতাল ও ২৬টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন রোগীদের জন্য এক হাজারেরও বেশি শয্যা রয়েছে।

করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর পবিত্র হজে ছিল নানা বাধ্যবাধকতা। তবে এবার অনেকটা মুক্ত অবস্থায় পালিত হচ্ছে হজ। তাই হজযাত্রীদের মধ্যে অন্যরকম এক আবেগ কাজ করছে। তারা মুখে মাস্ক ছাড়াই হজ করতে পারছেন। করোনা ভাইরাসের অনুমোদিত টিকার সম্পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন- এমন ১০ লাখ হজযাত্রী হজ পালন করছেন। এর মধ্যে ৮ লাখ ৫০ হাজার হজযাত্রী বিদেশি। বাকিরা সৌদি আরবের নাগরিক।

 

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়