Cvoice24.com

কেনাকাটার চেয়ে ‘তারুণ্যের আড্ডা’ বেশি

মিনহাজ মুহী, সিভয়েস২৪

প্রকাশিত: ১৪:২৩, ২৯ মার্চ ২০২৪
কেনাকাটার চেয়ে ‘তারুণ্যের আড্ডা’ বেশি

ঈদ আসছে আর মাত্র ১৩ দিন পর। কমবেশি মানুষের পদচারণায় ভরপুর শপিংমলগুলো। বেলা যত বাড়ে ভিড়ও তত বাড়ে। মার্কেটের ভেতরে বাইরে সবখানে জটলা। তবে বেচাকেনা খুবই সীমিত বলেই জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে পোশাকের দামে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বেশিরভাগ ক্রেতা। কেউ কেউ মজার ছলে বলেছেন, কেনাকাটা নয় এসির হিমেল বাতাস পেতেই ঢুকেছেন শপিংমলে।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার এলাকার শপিংমল বালি আর্কেড ঘুরে দেখা গেছে, মার্কেটজুড়ে ক্রেতাদের সমাগম। তবে তরুণ-তরুণীরাই ভিড় করছেন বেশি। তাদের পদচারণায় জমেছে শপিংমলের সবকটি ফ্লোরে। বিশেষ করে পোশাক বাড়ি, ভ্যালর, বিবর্তন, অপূর্ব, ওয়ান ফ্যাশনসহ আরও বেশকিছু দোকানে পাঞ্জাবি দেখতে ভিড় করছেন তরুণরা। অনেকে দামাদামি করেও শেষ পর্যন্ত পছন্দের কাপড় নিতে না পেরে দোকান ছাড়ছেন। শুধু দোকান নয়; বেশিরভাগ ক্রেতা মার্কেট থেকে ফিরে যাচ্ছেন খালি হাতে। মার্কেটজুড়ে কেনাকাটার চেয়ে ‘তারুণ্যের আড্ডা’ চোখে পড়েছে বেশি!

এদিকে, তরুণীরা বিয়ে বাড়ি, স্পার্ক গিয়ার, এস্থেটিক, স্বদেশপল্লী এবং লেডি কেয়ারসহ বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ঘুরে দেখছেন পছন্দের পোশাক। তাদের মধ্যে অনেকে এসেছেন পরিবার নিয়ে। অনেকে বান্ধবীদের নিয়ে। দোকানগুলোতে দেখা যায়, অনেক তরুণী পছন্দের থ্রি-পিস ও বিভিন্ন ধরনের পোশাক দেখছেন। কেউবা খুঁজছেন নামিদামি শাড়ি। দেখাদেখি ও যাচাই-বাছাই চললেও দোকানির সাথে দামের বোঝাপড়া না হলে অসন্তুষ্ট হয়ে ঘুরছেন দোকানে দোকানে।

এ সময় কয়েকজন ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বললে,  তাদের বেশিরভাগই দাম নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। অনেকে মজার ছলে বললেন— বাইরের পরিবেশ এখন গরম। সেই গরম কাটাতেই মার্কেটের ভেতর এলাম। যাতে এসির হিমেল হাওয়ায় একটু ঠাণ্ডার অনুভূতি নেওয়া যায়।

চট্টগ্রাম কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া আফনান বিন নজর বলেন, বন্ধুদের নিয়ে পাঞ্জাবি কিনতে এসেছিলাম। কয়েকটি দোকান ঘুরে পাঞ্জাবি পছন্দ হলেও দাম বেশি। সব দোকানেই দাম বেশি বলছে। আর অনেক দোকানেই দাম ছাড়ছে না। তাই বাধ্য হয়েই না কিনে ফিরে যাচ্ছি।’

তার সঙ্গে থাকা ইফতেখার তামিম নামে আরেকজন জানান, অন্যান্য মার্কেটের চেয়ে এখানে পাঞ্জাবি থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম একটু বেশি। তাই কেনা হয়নি। এখানে হবে না; সেজন্য অন্য মার্কেটে যাব।

নাদিয়া নওশীন নামে এক তরুণী বলেন, পোশাকের দাম একটু বেশি। তাই পছন্দ হওয়ার পরও অনেক পোশাক নেওয়া সম্ভব হয়নি। এরপরও আর কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখি। এখানে না হলে অন্য মার্কেটে যেতে হবে।

আলিজা রহমান নামে আরেক তরুণী জানান, দাম বেশি হওয়ায় একাধিক দোকানে ঘুরেও এখনো পছন্দের শপিং করতে পারিনি। এরপরও দেখছি; আজ এখানে হলে হবে। না হয়, অন্য মার্কেটে গিয়ে কিনতে হবে।

রাইফা নাওয়াল নামে আরেক তরুণী জানান, ঈদের জামা কেনার পাশাপাশি তিনি রূপচর্চার প্রসাধনী কিনতে এসেছেন। তবে এসব পণ্যেরও অনেক দাম।

এদিকে ব্যবসায়ীরা জানান, এ শপিংমলে ক্রেতাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি অল্পবয়স্ক তরুণ-তরুণী। তাদের কথা চিন্তা করেই আমরা ভালো ভালো পোশাক দোকানে তুলেছি। পোশাকের মান যেহেতু ভালো তাই দামও একটু চাওয়া হচ্ছে। তবে দামের মধ্যে মিলে গেলে আমরা সামান্য লাভ রেখে ছেড়ে দিচ্ছি। আবার অনেক ক্রেতা পণ্যের দাম অনেক কম বলাতে আমরা দিতে পারছি না। তবে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি যাতে ক্রেতাদের ফিরে যেতে না হয়।

স্বদেশপল্লী আউটলেটের ম্যানেজার রাকিবুল ইসলাম রনি জানান, প্রথম দিকের চেয়ে এখন একটু বেচাবিক্রি বাড়ছে। এবারের ঈদকে ঘিরে পোশাকে তেমন একটা নতুনত্ব নেই। এরপরও আমরা কিছু নতুন ডিজাইনের পোশাক কালেকশনে রেখেছি।
 
আউটলেটে ছেলে-মেয়েসহ শিশুদের পোশাকও কালেকশনে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের আউটলেটে শিশু থেকে শুরু করে ছেলে মেয়ে সকলের পোশাক রয়েছে। এছাড়া এসব পোশাকের দামও অন্যান্য দোকানের সঙ্গে প্রায় কাছাকাছি।

দামের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, শিশুদের জামা ৬শ টাকা থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ছেলেদের টি-শার্ট, শার্ট, প্যান্ট ও পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে ১৩শ’ থেকে ৫ হাজার টাকা। আর দুই হাজার ৪শ’ টাকা থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে মেয়েদের জামা।

প্রসঙ্গত, স্যানমার ওশান সিটির ১২ বছর পর চট্টগ্রামে বিশ্বমানের শপিংমল গড়ে উঠে নগরের চকবাজারে ‘বালি আর্কেড’ নামে ১১ তলার এ ‘সুপার মল’। শপিং মলের প্রথম তলায় রয়েছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুম। দ্বিতীয় তলায় কসমেটিকস, জুয়েলারি, গিফট ও কিডসের ৩৭টি দোকান। তৃতীয় তলার পুরোটা জুড়ে লেডিস আইটেম। এছাড়া চতুর্থ তলায় রয়েছে জেন্টস আইটেম, পঞ্চম তলায় মোবাইল এবং ইলেকট্রনিক্স দোকান। ৬ষ্ঠ তলায় রয়েছে ফুড কোর্ট। ২৬টি স্টল রয়েছে ফুড কোর্টে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়