চট্টগ্রাম বন্দরের গলার কাঁটা নিলামের তিন পণ্য

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৫৮, ১ নভেম্বর ২০২১
চট্টগ্রাম বন্দরের গলার কাঁটা নিলামের তিন পণ্য

নিলামেও বিক্রি হচ্ছে না দামি গাড়িগুলো। ফলে এভাবেই ইয়ার্ডে দিনের পর দিন পরে আছে।

বিদেশি গাড়ি, কাঠ আর বিভিন্ন পণ্যভর্তি নিলামযোগ্য সাত হাজার কনটেইনার এখন বন্দরের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বারবার নিলামে তুলেও বিক্রি হচ্ছে না এসব পণ্য। এদিকে দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্দরের নিলাম শেডে পড়ে থাকতে থাকতে বিকল হতে শুরু করেছে ১১০টি গাড়ির যন্ত্রাংশ। এরসঙ্গে মরার উপর খাড়ার ঘা হয়েছে বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে থাকা নিলামযোগ্য সাত হাজার কনটেইনার। পাশাপাশি নিলামে বিক্রির অপেক্ষায় থাকতে থাকতে গুণগত মান হারাচ্ছে ৫ হাজার ৩৪১ মেট্রিক টন ওজনের গর্জন কাঠ। 

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বারবার নিলামে তোলার পরও পণ্যগুলো বিক্রি হচ্ছে না। ফলে বন্দরের একটি ইয়ার্ড সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়ে আছে। ইয়ার্ডটি খালি করতে পারলে বছরে এক লাখেরও বেশি কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের সুযোগ হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বন্দরের নিলাম শেডে মিতশুবিশি, মার্সিডিজ বেঞ্চ , বিএমডব্লিউ, ল্যান্ডরোভার, ল্যান্ডক্রুজার, সিআরভি, লেক্সস, ফোর্ড, জাগুয়ার, দাইয়ু ও হোন্ডাসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১১০টি নিলামযোগ্য গাড়ি রয়েছে। তাছাড়া সাত হাজার নিলামযোগ্য কনটেইনারে গার্মেন্টস সিকিউরিটি ট্যাগ, ফিনিশিং এজেন্ট, হাইড্রোলিক এসিড, ব্যাটারি, হাইড্রোক্লোরিক এসিড, ওয়াশিং কেমিক্যাল, ডায়েসিড (এসিড পণ্য), মাল্টিভিটামিন পাউডার, প্লাস্টিক বোতল, টেক্সটাইল পণ্য, সালফিউরিক এসিড, ম্যাগাজিন, চামড়াজাত পণ্য, ওলিভ ওয়েল, সিরামিক পণ্য, বেবি ডায়াপার, ফুড স্টাফ, পলেস্তার, ওয়েস্ট পেপার, ড্রাগন ফল, লোহার পাইপ, সুইচ সকেট ও জ্যাকেটসহ বিভিন্ন পণ্য রয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক সিভয়েসকে বলেন, বর্তমানে প্রায় সাত হাজার নিলামযোগ্য কনটেইনার বর্তমানে বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। তবে পণ্যগুলো নিলামে তুলে বন্দরের ইয়ার্ড খালি করার জন্য প্রতিমাসেই কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানানো হচ্ছে। বন্দরের ইয়ার্ড খালি করে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বাড়াতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষও শতভাগ চেষ্টা করছে। সেই সাথে বন্দরের ভেতরে এলসিএল কার্গো, বাল্ক কার্গো ভর্তি পণ্যসহ কেমিক্যাল ভর্তি একাধিক কনটেইনার রয়েছে। এসব পণ্য বন্দরের ভেতরে উচ্চ ঝুঁকিতে আছে বলে মনে করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সবমিলিয়ে নিলামযোগ্য পণ্যগুলো দ্রুত বিক্রি করে ইয়ার্ড খালি করতে পারলে বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডেলিং বাড়ানো যাবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম বলেন, বন্দরের ভেতরে শেড ও ইয়ার্ডসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিলামযোগ্য পণ্য নিয়ে মামলাসহ নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে। গাড়িসহ বন্দরে পড়ে থাকা পণ্যগুলো বার বার নিলামে তুলেও বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। তবে বিডাররা আসছেন, গাড়িগুলো দেখছেন। আশা করছি আগামী ৩ ও ৪ নভেম্বরের নিলামে ভালো সাড়া পাওয়া যাবে। পাশাপাশি বন্দরে পড়ে থাকা কনটেইনার ভর্তি পণ্যগুলো বিক্রি করতে আমরা প্রতিমাসে দু থেকে তিনটি নিলামের আয়োজন করছি। বন্দরে নিলামযোগ্য কনটেইনার কমাতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়