Cvoice24.com

চসিকের সভায় তিন দফা অনুপস্থিত সিডিএ, ‘সমন্বয়হীনতার অভিযোগ’ এনে নালিশ যাবে মন্ত্রণালয়ে!

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:২৯, ২২ মার্চ ২০২৩
চসিকের সভায় তিন দফা অনুপস্থিত সিডিএ, ‘সমন্বয়হীনতার অভিযোগ’ এনে নালিশ যাবে মন্ত্রণালয়ে!

জলাবদ্ধতা নিয়ে চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে হতাশা দীর্ঘদিনের। এ সংকট নিরসনের দায়িত্বে আছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। জনদুর্ভোগ লাঘবে এ দুই সেবা সংস্থার সমন্বয় করে কাজ করার কথা থাকলেও বাস্তব চিত্র পুরোই ভিন্ন। এমনকি সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে হস্তক্ষেপ করে খোদ মন্ত্রণালয়ও। তারপরেও যেন ‘যে লাউ সেই কদু’র দশা চট্টগ্রামের বাঘা বাঘা সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে। বরং সমন্বয়ের প্রশ্ন এলেই সেবা সংস্থাগুলো অভিযোগ ছুঁড়ে দেয় একে অন্যের ঘাড়ে। এবার ‘সমন্বয়হীনতার অভিযোগ’ এনে সিডিএ’র বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে নালিশ জানাবে চসিক। 

বুধবার (২২ মার্চ) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাধারণ সভায় ‘সিডিএর সমন্বয়’ ইস্যুতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, বিভিন্ন সেবা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করতে মাসিক সাধারণ সভায় বসে চসিক। অন্যান্য সেবা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকলেও মাসিক সাধারণ সভায় পরপর তিনদফা অনুপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রতিনিধি। বুধবার (২২ মার্চ) ২৬তম সাধারণ সভাতেও উপস্থিত না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন চসিক সংশ্লিষ্টরা। চসিকের প্রধান নিবার্হী এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাইবে সিডিএ’র কাছে। প্রয়োজনে স্থানীয় সরকার বিভাগকে জানাবে বলেও জানায় তারা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চসিকের একাধিক কর্মকর্তা সিভয়েসকে বলেন, ‘সাধারণ সভায় চসিকের কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। বিশেষ করে সিডিএ এবং ওয়াসাকে নিয়ে সবার আক্ষেপ। গত তিন জিএমে (সাধারণ সভা) সিডিএর কোনো প্রতিনিধিই আসেনি। এক্ষেত্রে সমন্বয় বা জবাবদিহিতার বিষয়টা স্পষ্ট হবে না। এ ধরনের আচরণ পুরো নিয়মের বাইরে। যেটা কোনোভাবেই হতে পারে না। সেবা সংস্থাগুলোকে সমন্বয় করার জন্য মন্ত্রণালয়ও তাগাদা দেয়। কিন্তু তারপরেও তারা (সিডিএ) কেন যেন মানতে চায় না।’ 

এদিকে, সাধারণ সভায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ‘সিডিএর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুরাদপুর রোড ও মূল সড়কের সংযোগ স্থলে রাস্তা কর্তনের ফলে সৃষ্ট জনদূর্ভোগ লাঘব করতে হবে। মহেশ খালের মুখে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী সুইচ গেট নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়ায় জোয়ারের পানি না আপাতত অস্থায়ী সুইচ গেট এবং ওই খালের উপর নির্মিত সেতুতে নিরাপত্তার স্বার্থে রেলিং স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে পানি চলাচলের সুবিধার্থে খালের ভেতরে থাকা স্তুপীকৃত মাটিগুলো দ্রুত অপসারণ করতে হবে।’

সেবা সংস্থগুলোর মধ্যে কার্যক্রমের সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়ে মেয়র আরও বলেন, ‘আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী চসিকের ইতিহাসের সর্বোচ্চ আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দিয়েছেন। এই প্রকল্পসহ চলমান প্রকল্পগুলো শেষ হলে চট্টগ্রামের বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। তবে, সেবা সংস্থাগুলো চসিকের সঙ্গে সমন্বয় না করলে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমের সুফল হুমকির মুখে পড়বে।’

তবে এ বিষয়টা মানতে নারাজ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এ প্রসঙ্গে সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস সিভয়েসকে বলেন, ‘আমরা তো জিএমে থাকি। আমাদের যেকোনো একজন না একজন তো জিএমে থাকে। একটু দেখে বলতে হবে। এ বিষয়টা আমার জানা ছিল না।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সমন্বয় হবে না কেন! আমাদের প্রত্যেকটা মিটিংয়ে আমরা উনাদের ডাকি। মিটিংয়ের সময়, মিটিংয়ের আগে সবাইকে ডাকি। আবার আগের দিনও রিমাইন্ডার দিয়ে দেই; সকালে মিটিং আছে। তারা কিন্তু এসবের ধারেকাছেও নেই। একটা তো বিষয় আছে যে সবাইকে জানাতে হবে যারা যারা বাইরের প্রতিনিধি আছে। তারা এ বিষয়টা মেইনটেইন করেন না।’

-সিভয়েস/এসআর

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়