ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং/
কর্ণফুলীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই, তলিয়ে গেছে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:৪৯, ২৫ অক্টোবর ২০২২
কর্ণফুলীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই, তলিয়ে গেছে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল

বন্দর ইয়াডে থৈ থৈ পানি।

ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে সোমবার সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের মাঝামাঝি এলাকায় উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। মোংলা ও পায়রার পাশাপাশি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকেও ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। 

এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে কর্ণফুলী নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া বন্দর, বিমানবন্দর সড়ক, খাতুনগঞ্জ এবং মানুষের ঘরে পানি প্রবেশ করায় বেড়ে চলছে আতঙ্ক।

চট্টগ্রাম পানি বিজ্ঞান উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মনজুরুল হক সিভয়েসকে বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট পানি পরিমাপ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী সোমবার রাত ১২টার দিকে পরিমাণ ছিল ৪ মিটার। যেখানে বিপদ সীমা হল ৪ দশমিক ৬০ মিটার। রাত ১টা পর্যন্ত জোয়ার আছে।’ এছাড়া চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যাওয়ার কথাও জানান তিনি।

আবহাওয়া দপ্তর থেকে সোমবার রাতে দেওয়া সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং রাত ৯টার দিকে ভোলার কাছ দিয়ে বরিশাল–চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। পরবর্তী ৩–৪ ঘণ্টার মধ্যে ঝড়টি উপকূল অতিক্রম করতে পারে। 

ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর এখন বিক্ষুব্ধ।

এর আগে, আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছিল, সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম ঘূর্ণিঝড় সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এ ঝড়ের ব্যাস ৪০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ফলে এর বর্ধিতাংশ ইতোমধ্যে স্থলভাগে তাণ্ডব চালাতে শুরু করেছে। চট্টগ্রামের উপকলীয় এলাকাগুলোতে প্রবল ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। 

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং উপকূল পার হওয়ার সময় চট্টগ্রাম, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, নোয়াখালী, ফেনীর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে  স্বাভাবিক জোয়ার থেকে ৫ থেকে ৮ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড়টি সোমবার গভীররাতে আঘাত হানলেও আজ সন্ধ্যার পর থেকে এ জলোচ্ছ্বাস হচ্ছে।

জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের পূর্বাভাস বলছে, বাংলাদেশ সময় সোমবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের চোখ বা কেন্দ্রভাগ পটুয়াখালীর রাঙাবালি বা চর মন্তাজ এলাকায় উপকূল স্পর্শ করবে। তখন বাতাসের গতিবেগ থাকবে সর্বোচ্চ ৫০ নট বা ঘণ্টায় ৯৩ কিলোমিটারের মত। সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার ভোরের মধ্যে ভোলার পাশ দিয়ে এ ঝড় পুরোপুরি উপকূলে উঠে আসবে বলে ধারণা করছে আবহাওয়া অফিস।

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়