কেন পদত্যাগ করলেন ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান?

সিভয়েস২৪ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
কেন পদত্যাগ করলেন ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান?

ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান মেজর জেনারেল আহারন হালিভা পদত্যাগ করেছেন। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার দায় নিয়ে তিনি পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। 

সোমবার (২২ এপ্রিল) ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে এ কথা জানায় বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান হিসেবে ৭ অক্টোবরের ঘটনার ব্যর্থতার দায় নিয়ে হালিভা ইসরায়েলের সেনাপ্রধানের সঙ্গে আলাপ করে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার অনুরোধ জানান। এই পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ম অনুসারে ও পেশাগত প্রক্রিয়া মেনে উত্তরসূরি নিয়োগের পর হালিভা তাঁর দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন এবং তিনি অবসরে যাবেন, এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীতে ৩৮ বছরের পেশাগত জীবন হালিভার। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পদত্যাগপত্রে ৭ অক্টোবরের হামলা ঠেকাতে না পারার কথা উল্লেখ করেছেন হালিভা। হামলার পরপরই সরে দাঁড়াতে তাঁর ওপর চাপ ছিল। তবে গাজায় সামরিক অভিযানের বিষয়টি বিবেচনা করে তিনি দায়িত্ব পালন করে গেছেন। গাজায় চলমান যুদ্ধের ছয় মাস পার হওয়ায় হালিভার সরে দাঁড়ানোর পেছনে অন্য কারণও আছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

ইসরায়েলের হারেৎজ পত্রিকার কলাম লেখক আকিভা এলদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অচিরেই গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে চান না বলে পদত্যাগ করে থাকতে পারেন সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান। অন্য কারণটি হতে পারে যে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী নন প্রধানমন্ত্রী।

আকিভা আরও বলেন, নেতানিয়াহু হলেন সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। হামাসের হামলা ঠেকানোর ব্যর্থতার দায় তিনি কখনো স্বীকার করেননি। তাই নেতানিয়াহুকে ব্যক্তিগতভাবে একটি বার্তা দিতে চেয়েছেন হালিভা।

সামরিক গোয়েন্দাপ্রধানের পদত্যাগের ঘটনায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ আরও জোরদার হবে। এতে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গানৎজ ও গাদি আইজেনকটের ওপরও চাপ বাড়বে। আকিভা বলেন, এই পদত্যাগের ফলে মন্ত্রিসভায় থাকার উপযুক্ত কারণ আছে—নিজের নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের এমনটা বোঝানো তাঁদের জন্য কঠিন হবে।

এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক আরও বলেন, যদি হালিভা মনে করতে পারেন যে বিদায় বলার সময় হয়েছে, তাহলে অনেকেই তাঁদেরও (বেনি ও গাদি) সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাবেন। কারণ, ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে এই সংঘাত অবসানের কৌশলগত ঘাটতির সঙ্গে তাঁরাও জড়িত।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আকস্মিকভাবে প্রাণঘাতী হামলা চালায়। ইসরায়েলের সরকারি তথ্য অনুয়ায়ী, হামাসের হামলায় ১ হাজার ১৭০ জন নিহত হয়েছেন। 

জবাবে সেদিন থেকেই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গতকাল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৩৪ হাজার ১৫১ জন নিহত হয়েছেন। 


 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়