Cvoice24.com

জেএমসেন হলে পূজা মণ্ডপে হামলার ঘটনায় পুলিশের সাড়াশি অভিযানে ৬৫ জন আটক

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ১৫ অক্টোবর ২০২১
জেএমসেন হলে পূজা মণ্ডপে হামলার ঘটনায় পুলিশের সাড়াশি অভিযানে ৬৫ জন আটক

কুমিল্লাকাণ্ডের রেশ ধরে চট্টগ্রামের জেএমসেন হলে পূজা মণ্ডপে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় এ পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে অন্তত ৬৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। হামলার প্রতিবাদে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া বন্ধ থাকলেও পরে প্রশাসনের আশ্বাসে সন্ধ্যা থেকে পতেঙ্গা সৈকত, কালুরঘাট ও অভয়মিত্র ঘাটে বিসর্জন দেওয়া শুরু করে সনাতন ধর্মের লোকজন। 

শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ থেকে বের হয়ে কিছু মুসল্লি পাশের জেএমসেন হলের পূজা মণ্ডপের গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। এসময় ব্যানার ছেঁড়ার পাশাপাশি প্রতিমাকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়ে বলেও অভিযোগ করেছে পূজা কমিটি। 

এদিকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত শনিবার চট্টগ্রামে আধাবেলা হরতালের ডাক দেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে হরতাল প্রত্যাহার করে প্রতিমা বির্সজন দেওয়া শুরু করে মহানগর পুজা উদযাপন কমিটি। 

মণ্ডপে হামলার ঘটনায় সাড়ে তিন ঘণ্টা স্থগিত রাখার পর সন্ধ্যা থেকে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া শুরু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ শেষে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ গেটে কিছু মুসল্লী কুমিল্লাকাণ্ডের প্রতিবাদে সমাবেশ করে। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে জেএমসেন হলের দিকে এগিয়ে যায়। মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের বেস্টনি দেওয়া থাকলেও তারা তা ভেঙে তারা এগিয়ে যেতে থাকে। জেএমসেন হল প্রাঙ্গণের প্রধান ফটক আগে থেকে বন্ধ থাকায় তারা গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। এসময় তারা ভেতরে ঢিল ছোঁড়ে এবং পূজার জন্য সড়কে এবং আশপাশের দেয়ালে টাঙ্গানো বিভিন্ন ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে।

জেএমসেন হলের পূজা মণ্ডপে তখন বিভিন্ন বয়সী নারীরা পান, তেল ও সিঁদুর দিয়ে দেবী বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বাইরে হট্টগোল শুরু হলে তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা এ সময় টিয়ার শেল ছুঁড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। হামলাকারীরা এ সময় পালিয়ে যায়।

চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশীষ ভট্টাচার্য্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতি বছর ১১টা থেকে বিসর্জনের কাজ শুরু হয়। এবার সরকারি নির্দেশনা ছিল নামাজের জন্য বেলা আড়াইটার পর থেকে পূজা মণ্ডপ থেকে বিসর্জনের জন্য বের হওয়ার। সেজন্য আমরা মণ্ডপে অপেক্ষা করে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করছিলাম। ঠিক এ সময় আমাদের এখানে হামলা হয়েছে।’ এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা প্রতিমা বিসর্জন স্থগিত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

এদিকে জেএমসেন হলে হামলার পর পূজা কমিটির নেতা-কর্মীরা সড়কে এসে অবস্থান নিলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ৩টার দিকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত জেএমসেন হলে মোড়ে এসে পূজা উদযাপন পরিষদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এসময় আগামীকাল শনিবার বেলা ১২ টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের হরতালের ডাক দেন। যদিও তা প্রশাসনের আশ্বাসে স্থগিত করার কথা জানায় পূজা উদযাপন পরিষদ। 

নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনও বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জেএমসেন হল পরিদর্শন করেছেন। 

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) বিজয় বসাক সিভয়েসকে বলেন, ‘জেএমসেন হলে হামলার ঘটনায় সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ৬৫ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযান চলমান রয়েছে। এখন বিস্তারিত বলার সুযোগ নেই।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়