বিএনপির কর্মসূচিতে ‘হামলাকারী’ দলীয় নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ারি দিলেন ওবায়দুল কাদের 

সিভেয়স ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:১৩, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
বিএনপির কর্মসূচিতে ‘হামলাকারী’ দলীয় নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ারি দিলেন ওবায়দুল কাদের 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। ফাইল ছবি।

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির কর্মসূচিতে  ‘হামলার’ ঘটনায় নিজ দলের নেতাকর্মীদের প্রতি কড়া হুশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। 

তিনি বলেছেন, ‘ বিএনপির ওপর হামলার কোনো নির্দেশনা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দেয়নি। “নেত্রীর নির্দেশনার বাইরে কেউ যদি এসব হামলা জড়িয়ে পড়েন, আমরা কিন্তু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব। আমরা কাউকে ছাড় দেব না। এখানে কেন্দ্রের কোনো নির্দেশ নেই।“বিচ্ছিন্নভাবে এখানে-ওখানে দুয়েকটা ঘটনা ঘটিয়ে আজকে সরকারের দুর্নাম, আওয়ামী লীগের দুর্নাম। এগুলো যারা করবে সহ্য করা হবে না। আর এইটার সুযোগ নিয়ে তারা আমাদের অপবাদ দেবে।”

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনের জন্য দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সব সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এক যৌথ সভায় এ কথা বলেন।

দলের নেতকর্মীদের হুশিয়ারি করার সঙ্গে বিএনপির অভ্যন্তরীণ মারামারি বিষয়টিও তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি। তিনি বলেন, ‘ “বিএনপি বলছে কুমিল্লায় ও ঢাকায় হামলা হয়েছে। কিন্তু গতকাল বরিশালে আর চট্টগ্রামে মারামারি করেছে কারা? বরিশালে তারা নিজেরা নিজেদের ওপর হামলা করেছে, চট্টগ্রামেও চেয়ার ছোড়াছুড়ি করেছে। কিন্তু এসব ঘটনা ঠিকভাবে সংবাদমাধ্যমে আসছে না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, “সকালে ঘুম থেকে উঠে চলে যায় বিভিন্ন দূতাবাসে। গিয়ে নালিশ। বিএনপির আরেক নাম বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। দেশের মানুষের কাছে যতটা না করে, তার চেয়ে বেশি বিদেশিদের কাছে। একাত্তরে এদেশের মানুষের ওপর গণহত্যা-ধর্ষণ চালিয়েছে যে পাকিস্তান, তাদের প্রতি বিএনপির এতো ‘পেয়ার’ কেন?

তিনি বলেন, “তারা জানে না শেখ হাসিনা তা পিতা বঙ্গবন্ধুর মত, কখনো পিছপা হননা। কখনও পরাজয়, পরাভয় মানেন না। শেখ হাসিনা হার মানতে জানেন না। তিনি হেরে গেলে বাংলাদেশ হেরে যাবে। “বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যারা (বাংলাদেশকে) পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে নির্বাসনে পাঠাতে চেয়েছিল; তাদেরই প্রেতাত্মারা, তাদেরই দলের সেই সৈনিকরা, সেই দল বাংলাদেশকে আবারো পাকিস্তান বানাতে চায়। মির্জা ফখরুল মনের কথা গোপন রাখতে পারেননি। তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে এসেছে যে, ‘পাকিস্তান আমলে ভালো ছিলাম’।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, “ফখরুল সাহেব, ‘কতো রবি জ্বলে রে, কেবা আখি মেলে রে।’ শুনেছি পাকিস্তান ফিরে পেতে চান। এই মুক্তিযুদ্ধের দেশে আমরা আমাদের প্রিয় জন্মভূমিকে পাকিস্তানপন্থিদের হাতে তুলে দেব না। এই শপথ আমাদের নেতৃবৃন্দ নিচ্ছি। “আবার বলে পাকিস্তানের নাম শুনলেই আওয়ামী লীগের গাত্রদাহ হয়। হ্যাঁ গাত্রদাহ হয়। গাত্রদাহ তো হবেই, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমি স্বাধীন। আমার গাত্রদাহ হবে না?”

পাকিস্তান ৫০ বছর পরও বাংলাদেশে গণহত্যার জন্য ক্ষমা না চাওয়ার কথা তুলে ধরে সরকারের সিনিয়র এ মন্ত্রী বলেন, “তারা সরি বলতে জানে না। সেই পাকিস্তানের প্রতি আপনার এত পেয়ার কেন? জানতে পারি কি? তাহলে তো এটাই সত্য, একাত্তরের প্রতিশোধ নিতেই জিয়াউর রহমান পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার মাস্টারমাইন্ড ছিল। সেটাই তো প্রমাণিত হয়। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।’

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতারা। 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়