Cvoice24.com

অনুমোদনের পরও থমকে আছে কাপ্তাইয়ে সেতু নির্মাণ

কাপ্তাই প্রতিনিধি, সিভয়েস২৪

প্রকাশিত: ১৬:১৭, ২৯ মার্চ ২০২৪
অনুমোদনের পরও থমকে আছে কাপ্তাইয়ে সেতু নির্মাণ

রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার ব্যঙছড়ি এলাকায় একটি নতুন সেতুর অনুমোদন হলেও তা এখনও নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলছে জরাজীর্ণ বেইলি সেতু দিয়ে। যে কোন সময় ব্রিজটি ভেঙে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমনকী প্রাণহানিরও আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কাপ্তাই উপজেলার ৪ নম্বর কাপ্তাই ইউনিয়ন সংলগ্ন চট্টগ্রাম- কাপ্তাই মহাসড়কের ব্যঙছড়ি অংশে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির অবস্থান। যেখানে বেইলি ব্রিজটি বেশ কিছু অংশে ফাঁটল দেখা গেছে। এবং ব্রিজটির নিচের মাটিও দিনদিন সরে যাচ্ছে। এতে দশ্চিন্তায় পড়েছেন ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রী এবং চালকরা।

সড়কে চলাচলকারী কয়েকজন গাড়ি চালক জানান, বেইলি ব্রিজটি দিয়ে যখন গাড়ি নিয়ে পার হই তখন বেশ সাবধানে আমাদের গাড়ি চালাতে হয়। বিশেষ করে এই ব্রিজটি দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করা সম্পূর্ণ নিষেধ করা দরকার। এই ব্রিজে ইতপূর্বেও বেশ কয়েকটি ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে ব্রিজের অনুমোদন হওয়ার পরেও নতুন ব্রিজটি নির্মাণ না হওয়ার ফলে আমরা চিন্তিত।

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এখানে ব্রিজটির অনুমোদন হওয়ার পর নতুন ব্রিজের কাজ শুরু করতে গেলে কাপ্তাই বনবিভাগ কতৃক বাধা প্রদান করা হয়। কারণ হিসেবে তারা জানান, যেখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে সেখানে সংরক্ষিত বনের গাছ রয়েছে। আর গাছ কেটে ব্রিজ নির্মাণ করতে বনবিভাগ অনুমতি দিচ্ছেনা। এতেই ব্রিজটির নির্মাণ কাজ থমকে গেছে। তবে দ্রুত সময়ে যদি ব্রিজটির কাজ শুরু করা না হয় তবে পুরানো বেইলি ব্রিজটি ভেঙে কাপ্তাইয়ের বিশাল একটি অংশের সাথে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে স্থানীয়রা জানান।

চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ নভেম্বর সেই স্থানে নতুন গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৬৪ মিটার এবং প্রস্থ ১০ দশমিক ২০০ মিটার ধরা হয়। দরপত্র পায় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ব্রিজের নির্মাণ কাজ ধরতে গেলে বিপত্তি বাঁধে। কারণ যে স্থানে ব্রিজটি নির্মাণ করা হবে সেখানে কাপ্তাই বন বিভাগের সংরক্ষিত বনের ১২ থেকে ১৪টি সেগুনসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ থাকায় বনবিভাগ সেখানে কাজ করতে বাধা প্রদান করে। এবং সংরক্ষিত বনের গাছ অনুমতি ছাড়া কাটা যাবেনা বলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করে। এতে থমকে পড়েছে ব্রিজের নির্মাণ কাজ। এছাড়া ব্রিজ নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শুরু করতে না পারলে কার্যাদেশ বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
 
এ বিষয়ে নতুন ব্রিজটি নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার বাপ্পী তনচংগা জানান, আমরা ব্রিজের কাজ শুরু করতে গেলে বনবিভাগ গাছ কর্তনে বাধা প্রদান করে। এতে আমরা এখনও কাজ শুরু করতে পারিনি।

এদিকে নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে এক্সকেভেটরসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে আসা হয়েছে। অদ্যবদি কাজ শুরু করতে না পারায় আমাদের দিন দিন লোকসান বাড়ছে। দ্রুত সময়ে কাজটি শুরু করতে না পারলে বিশাল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা জানান, বর্তমানে ব্রিজটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাতে রয়েছে। দ্রুত সময়ে কাজ শুরু করতে না পারলে পুরনো বেইলি সেতুটি ভেঙে গিয়ে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের কাপ্তাই সহকারী বন সংরক্ষক মাসুম আলম জানান, ব্রিজটি যে স্থানে নির্মাণ করা হবে সেখানে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ রয়েছে। আর সংরক্ষিত বনের গাছ কাটার অনুমতি বনবিভাগ দিতে পারেনা। এছাড়া গাছ কাটার বিষয়ে এখনো কোন সিন্ধান্ত নেওয়া হয়নি তবে রাঙামাটি ডিসি অফিসে একটি সভার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হওয়ার কথা রয়েছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়