মা-মাছ ডিম ছেড়েছে হালদায়, হ্যাচারিগুলোতে ব্যস্ত আহরণকারীরা

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ২৬ মে ২০১৯
 মা-মাছ  ডিম ছেড়েছে হালদায়, হ্যাচারিগুলোতে ব্যস্ত আহরণকারীরা

হালদায় মাছের ডিম আহরণকারীরা,

বহুল প্রত্যাশিত কার্পজাতীয় মা-মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করেছে। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের তোড়ে সৃষ্ট স্রোতে জেলেদের জালে বৃহস্পতিবার বিকালে প্রথম ধরা পড়ে মৌসুমের প্রথম ‘নমুনা ডিম’। এরপর রাতে হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার ডিম সংগ্রহকারীরা জাল ও নৌকাসহ নানা সরঞ্জাম নিয়ে ডিম সংগ্রহে নেমে পড়েন।
দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র বৃহৎ মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতে রুই জাতীয় (রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাইশ) মা মাছ ডিম ছেড়েছে। শনিবার (২৫ মে) রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ডিম এ ডিম পাওয়া গেছে। ডিম আহরণকারী উত্তর মাদার্শা এলাকার  মো. জামসেদ জানান, রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে থেকে হালদার বিভিন্ন অংশে ডিম সংগ্রহ শুরু হয়। 
হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার প্রায় চারশ থেকে সাড়ে চারশ ডিম আহরণকারী আজ (রোববার) সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করে। আহরণকারীরা জানিয়েছে,  এবার গত বছরের চেয়ে কম ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে।  এবার সংগ্রহের পরিমাণ ৭ হাজার কেজি। 

 ডিম সংগ্রহের পর পরই ডিম আহরণকারীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন হ্যাচারিগুলোতে। তবে এবার  ডিম সংগ্রহের পরও আরো কয়েকটি কুয়ো খালি পড়ে আছে। বেজায় খুশি ডিম আহরণকারীরা, বিশেষ করে কুয়ো নিয়ে  গত বছর রেকর্ড পরিমাণ ডিম সংগ্রহ হলেও কুয়োর সংস্কারের অভাবে অধিকাংশ ডিম নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। যার জন্য দুষছিলেন হ্যাচারি কমিটির লোকদের। 
এবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিনের উদ্যেগে ও  উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে হ্যাচারিগুলো সংস্কারে পরিবর্তন হয় কুয়াগুলো। তাই সব মিলিয়ে এবার ডিম আহরণকারীরা খুশি। সন্তুষ্ট প্রশাসনের উপর। 
এর আগে শুক্রবার বজ্রসহ প্রবল বর্ষণে পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি ঘোলা হয়ে ডিম ছাড়ার পরিবেশ তৈরি হয়। শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকাল ও দুপুরে নমুনা ডিম ছাড়ে কার্প জাতীয় মা মাছ।

ডিম সংগ্রহকারীরা জানান, এ বছর প্রতিটি নৌকায় গড়ে প্রায় ৫-৬ বালতি করে ৬টি নৌকায় প্রায় ৩৫ বালতি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। অংকুরি ঘোনা এলাকার বিধান বড়ুয়া জানান, তিনটি নৌকা দিয়ে গড়ে ৩-৪ বালতি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করেছেন। তারা বলেন, এবারের ডিম সংগ্রহ গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি।

হালদা থেকে ২০১৮ সালে ২২ হাজার কেজি, ২০১৭ সালে ১ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৬ সালে ৭৩৫ (নমুনা ডিম) কেজি, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৮০০ কেজি এবং ২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়।
সাধারণত চৈত্র থেকে বৈশাখ ‍মাসে অমাবস্যা, পূর্ণিমা ও অষ্টমী তিথিতে প্রবল পাহাড়ি ঢল ও শীতল আবহাওয়ায় কার্প জাতীয় মাছ নদীতে ডিম ছাড়ে। 

সিভয়েস/আই

হাটহাজারী প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়