রাঙ্গুনিয়ায় যুবলীগ কর্মী খুনের মামলায় গ্রেপ্তার আরও দুই

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:১২, ১১ অক্টোবর ২০২৩
রাঙ্গুনিয়ায় যুবলীগ কর্মী খুনের মামলায় গ্রেপ্তার আরও দুই

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় যুবলীগ কর্মী মঞ্জুরুল ইসলামকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও নগরের পাঁচলাইশে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার দুইজন হলেন— মো. আল-আমিন ওরফে সাগর (৩০) এবং মো. ওবায়দুল কাদের ওরফে ওবায়দুল্লা ওরফে সুমন। এরমধ্যে সাগর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সৈয়দ বাড়ির মৃত রমজান আলী ওরফে মিন্টু সওদাগরের ছেলে এবং সুমন একই উপজেলার মুরাদ নগর পাঠান পাড়ার মো. নবীর হোসেন ওরফে বাচা মিয়ার ছেলে।

র‌্যাব জানায়, নিহত মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৫) চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের ব্রক্ষোত্তর গ্রামের বাসিন্দা। এছাড়া তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক এবং একজন বালু ব্যবসায়ী। আসামিদের সাথে ভিকটিমের বালু মহাল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধের জেরে আসামিরা এরআগেও একাধিকবার ভিকটিমকে মারধর করাসহ প্রাণ নাশের হুমকি দেয়।

সবশেষ গত ৮ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভিকটিম মঞ্জুরুল ইসলাম তার শান্তিনিকেতন বালুর মহলে অবস্থানকালে আসামিরা আগে থেকে করা পরিকল্পনা অনুযায়ী বালু মহলে আসে। অস্ত্রসজ্জিত আসামিদের দেখে ভিকটিম প্রাণের ভয়ে দৌড়ে পালানোর সময় আসামিরা ভিকটিমকে ধাওয়া করে বালুর মাঠেই এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। কোপানোর একপর্যায়ে আসামিদের সাথে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ভিকটিম মঞ্জুরুল ইসলামের পায়ের উপরের অংশে ও নিম্নাংশে একাধিক গুলি করে গুরুতর জখম করে। একইসঙ্গে ভিকটিমের সাথে থাকা মো. সেকান্দরকেও (৩৮) মারধর করে জখম করে। এসময় তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মঞ্জুরুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।

র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার বলেন, হত্যার ঘটনায় নিহত মঞ্জুরুল ইসলামের স্ত্রী বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া থানায় ৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে র‌্যাব। একপর্যায়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতি পারি, হত্যা মামলার সঙ্গে জড়িত আসামি আল আমিন ওরফে সাগর চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানাধীন আব্বাছিয়া পুল এলাকায় অবস্থান করছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি হত্যা মামলার এজাহার নামীয় ৩ নম্বর আসামি।

তিনি আরও বলেন, পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে নগরের পাঁচলাইশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার অপর আসামি মো. ওবায়দুল কাদের ওরফে ওবায়দুল্লা ওরফে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা দুইজনই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, গত ৯ অক্টোবর (সোমবার) রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একটি রেস্তোরাঁর সামনে থেকে এ খুনের মামলার প্রধান আসামি খান মোহাম্মদ মঈন উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। মঈন রাঙ্গুনিয়ার পাঠানপাড়া এলাকার মৃত নুর মোহাম্মদ খানের ছেলে। গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব আসামিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে পরেরদিন মঙ্গলবার সকালে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়