চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া)
নদভীর স্ত্রীর সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন আঞ্জুমান, নামছেন মোতালেবের তিন কন্যাও

আবরার শাহরিয়ার

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
নদভীর স্ত্রীর সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন আঞ্জুমান, নামছেন মোতালেবের তিন কন্যাও

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে ‘আওয়ামী’ স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেবের সঙ্গে ‘ভোটখেলায়’ জোরেশোরে মাঠে নেমেছেন নৌকার প্রার্থী আবু রেজা নদভীর স্ত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরী। এবারের পুরো নির্বাচন সামলে নেবেন তিনি! কাঁধে নিয়েছেন স্বামীর প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়কের দায়িত্বও।

এদিকে ‘নদভী হঠাতে’ তৎপর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেবের ঘরনি যদিও এখনও ‘ঘরে’, তবে আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীসহ বিভিন্ন স্থানে ‘পারিবারিকভাবে’ তিনি ঘরের লোকের জন্য ভোট চাইছেন। মোতালেবের নির্বাচনীযাত্রায় নারীপক্ষের বহর টানছেন উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুমান আরা বেগম। তিনি নদভী বিরোধী আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী স্বাচিপ নেতা ডা. আ.ম.ম মিনহাজুর রহমানের অনুসারী হিসেবেও পরিচিত। এছাড়া মোতালেবের তিন কন্যা শিগগিরই মাঠে নামছেন বলে জানা গেছে।

২০০৮ সালে ড. আবু রেজা নেজামুদ্দীন নদভী এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর স্থানীয় মহিলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন নদভীপত্নী রিজিয়া রেজা চৌধুরী। শুরুতে তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। পরে অবশ্য ওই পদ থেকে বিতর্কের মুখে সরিয়ে নেওয়া হয়। এর পর তাকে মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যুক্ত করে কেন্দ্র। এরপরই নদভীপত্নীর বিস্তৃতি ছড়িয়ে পড়ে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া দুই উপজেলা জুড়ে। তিনি মহিলা সমাবেশ ও নারী শোভাযাত্রার মত কর্মসূচি এবং মহিলা উন্নয়ন ফোরাম ও সামাজিক প্রতিরোধ ফোরামসহ বিভিন্ন ব্যানারে সরগরম রাখতেন রাজনীতির মাঠ।

এমপিপত্নী হিসেবে বিভিন্ন পক্ষ তাকে ‘মেইনটেইন’ করে চলতেন। জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত এই এলাকায় তাঁর হাত ধরেই অনেক নারী আওয়ামী রাজনীতির মাঠে নেমেছেন— এমন দাবি নদভী অনুসারীদের। সম্প্রতি এক সভায় নদভীপত্নী রিজিয়াকে ‘বেগমসাহেবা’ সম্বোধন করে আদতে তিনিই এমপি ছিলেন বলে মন্তব্যও করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতালেব।

অন্যদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতালেবের ছেলেরা রাজনীতিতে দৃশ্যমান হলেও ঘরের মেয়েরা মাঠে নেই। এখন পর্যন্ত মোতালেবের স্ত্রী-কন্যা-পুত্রবধূরা ভোটের মাঠে নামেননি। উপজেলা নির্বাচনের হিসাব নিকাশ কষে নেতাকর্মীরা ধারণা করছেন, ভোটের মাঠে নামানো হচ্ছে না মোতালেবের স্ত্রীকে। তবে, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীর কাছে তিনি ঈগলের জন্য ভোট চাইছেন। কাউকে মোবাইল ফোনে, কিংবা কারও বাসায় দাওয়াতে অংশ নিয়ে তারা ‘পারিবারিক’ প্রচার চালাচ্ছেন। এছাড়া নারী ভোটারের কাছে পৌঁছাতে মোতালেবের নির্বাচনী বহরে রয়েছেন মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আঞ্জুমান আরা বেগম।

এ প্রসঙ্গে আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘আমরা আওয়ামী নেতাকর্মীরা ভোটারের কাছে যাচ্ছি। পরিবারের সদস্যরাও যে যার মতো করে ভোট চাচ্ছেন। বিপুল ভোটে ঈগল প্রতীকের বিজয় হবে।’

এমপি নদভীর একান্ত সচিব এরফানুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘এমপি সাহেবের সহধর্মীনি শুধু ভোটের সময় নয়, ভোটের আগেও নিয়মিত মানুষের দ্বারে দ্বারে গেছেন। মানুষের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। এবারও মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে তিনি ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। তবে ভোটাররা শুধু চাচ্ছেন যাতে নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেবের ব্যক্তিগত সহকারী আবু তৈয়ব বলেন, ‘ম্যাডামের (মোতালেবের স্ত্রী) পায়ে ব্যথার সমস্যার কারণে প্রচারণায় নামার সম্ভাবনা নেই। তবে শিগগিরই উনার তিন মেয়ে প্রচারণায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়