সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ/
চা খেতে গিয়ে লাশ হলেন শামসুল

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:৫৯, ৪ মার্চ ২০২৩
চা খেতে গিয়ে লাশ হলেন শামসুল

নিহত শামসুল

ষাটোর্ধ্ব মো. শামসুল আলম। প্রতিদিনকার মতো বাড়ির কাছের চা দোকানে গিয়েছেন চা খেতে। এক হাতে খবরের কাগজ, অন্যহাতে চা। কে জানতো এই যাওয়া যে শামসুলের শেষ যাওয়া হবে! আর ফেরা হবে না বাড়ি, খবরের শিরোনাম হয়ে যাবেন নিজেই। 

সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট বিস্ফোরণের পর উড়ে আসা লোহার টুকরোর আঘাতে মারা গেছেন ৬৫ বছর বয়সী শামসুল আলম। অক্সিজেন প্ল্যান্টের থেকে এক কিলোমিটার দূরে বসেও 'নাই' হয়ে গেলেন তিনি।

জানা যায়, নিহত মো. শামসুল আলম একসময় পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। তবে দীর্ঘদিন তিনি অবসর জীবনযাপন করছিলেন। অবসর জীবনে নিয়ম করে প্রতিদিন যেতেন কদমরসুলপুর বাজারের একটি চায়ের দোকানে। চা খেতে খেতে পড়তেন খবরের কাগজ। 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে শ্বশুরের মরদেহের জন্য অপেক্ষা করছিলেন মেয়ের জামাই সালাউদ্দিন। 

তিনি সিভয়েসকে বলেন, 'বাবা চা খেতে গিয়েছেন। যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেখান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ছিলেন তিনি। ভয়াবহ এ বিস্ফোরণের লোহার টুকরো দোকানের ছাদ ভেঙে উনার মাথায় পড়ে। ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন তিনি। এখন বাবার লাশের অপেক্ষায় আছি।'

কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, 'আমার শ্বশুরের তিন ছেলেমেয়ে। শাশুড়ি মা এখনো জানেন না যে বাবা নাই। কীভাবে তিনি সহ্য করবেন। কীভাবে জানাবো। জানি না...।'

ঘটনার কারণ বিষয়ে আরেক নিহত রোগীর স্বজন রকুল  লখরেট সিভয়েসকে বলেন, 'আমিও ওই প্ল্যান্টে কাজ করতাম। একবছর আগে সেখান থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। ওখানে গিয়ে দেখেছি যে প্ল্যান্টের কলম বিস্ফোরণ হয়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। আর বেশি কিছু জানিনা।'

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ৬ জন এবং আহত ২৪ জন। নিহতদের মধ্যে পরিচয় মিলেছে ৫ জনের। তাদের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত ২৪ জনের মধ্যে ২০ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এবং বাকি চারজন সীতাকুণ্ডের বিএসবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এদিকে, বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে পুলিশের ধারণা, অক্সিজেনের প্ল্যান্ট থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়