বে-টার্মিনাল বদলে দিবে বন্দরের চিত্র
৯০০ একর জমির উপর চট্টগ্রাম বন্দর নির্মাণ করতে যাচ্ছে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত বে-টার্মিনাল। ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহন সম্পন্ন হয়েছে। শেষ হয়েছে নিরীক্ষা প্রতিবেদন। পতেংগা সমুদ্র উপকূলে এই টার্মিনালটি বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা হচ্ছে।
টার্মিনালটি নির্মাণ শেষ হলে বন্দরের কার্গো ও কনেটইনার হ্যান্ডেলিংয়ে গতিশীলতা যেমন বাড়বে, তেমনি বৃদ্ধি পাবে প্রবৃদ্ধিও। ২০২১ সালের মধ্যে বে-টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শেষের টার্গেট নিয়ে কাজ করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বন্দরে ১৯০ মিটার দীর্ঘ ও সাড়ে ৯ মিটারের ওভার ড্রাফটের বড় জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারেনা। কিন্তু বে-টার্মিনালে আরো দীর্ঘ ও গভীর ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে।বর্তমানে বন্দর জেটিতে ১৯ টি জাহাজ ভিড়তে পারলেও বে-টার্মিনালে একসাথে ৩৫ টি জাহাজ ভিড়তে পারবে। ১৮০০ টিইউইএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের জায়গায় ৫০০০ টিইউইএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা যাবে।
বে-টার্মিনালকে কেন্দ্র করে তৈরী করা হবে নতুন ইয়ার্ড ও ট্রাক টার্মিনাল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জমি অধিগ্রহন নিয়ে কিছুটা জটিলতা দেখা দিয়েছে। ৯০০ একর জমির মাত্র ৬৮ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন। বাকি অবশিষ্ট ৮৩২ একর সরকারি খাস জমি। ইতোমধ্যে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহনের প্রস্তাব সরকার অনুমোদন করেছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন অধিগ্রহন প্রক্রিয়া শুরু করেছে।এজন্য ফিল্ড বুক তৈরী করে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রেরন করেছে। খাস তালিকাভুক্ত ৮৩২ একর জমির মধ্যে কিছু জমি নিয়ে আইনি জটিলতা থাকায় বন্দোবস্ত প্রক্রিয়ায় দেরী হচ্ছে। আগামী ৩০ মের মধ্যে জেলা প্রশাসন অধিগ্রহনকৃত ৬৮ একর জমি চট্টগ্রাম বন্দরের নিকট হস্তান্তরের আশা করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
সূত্র জানায়,জমি বুঝে পাওয়ার পরপরই কাজে নামতে প্রস্তুত চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রথমে ডেলিভারী ইয়ার্ড ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। ডেলিভারী ইয়ার্ড ও ট্রাক টার্মিনালের নকশা প্রনয়ণসহ আনুষাংগিক কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্রশাসন) জাফর আলম সিভয়েসকে বলেন, বে-টার্মিনাল নির্মাণের প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েছে। ভ‚মি সংক্রান্ত কিছু জটিলতা শেষ হলে পুরোদমে এর কাজ শুরু হবে। টার্মিনালটি নির্মাণ শেষ হলে চট্টগ্রাম বন্দরের চিত্রই পাল্টে যাবে।
সমীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জার্মানির হামবুর্গ পোর্ট কনসালটিং নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয়। ২০১৬ সালের ১৭ আগষ্ট তৎকালীন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল ইকবাল হাবিব ও হামবুর্গের পক্ষে মিঃ বেনজামিন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এজন্য প্রতিষ্ঠানটিকে বন্দর কর্তৃপক্ষ ৮ কোটি টাকা দিয়েছে। তারা গত বছরের ১৭ আগষ্ট ফিজিবিলাটি ষ্টাডি রিপোর্ট জমা দেয়।
চট্টগ্রাম চেম্বার এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম সিভয়েসকে বলেন, বে-টার্মিনাল নির্মাণ শেষ হলে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে গতিশীলতা আসবে। আমদানী-রফতানীকারকদের পণ্য আনা নেয়ায় খরচও কমে আসবে।
সিভয়েস/এইচআর/এমইউ
188