কৃত্রিম সংকটে অস্থির ভোজ্যতেলের বাজার, সকালে ১৮০ রাতে ১৯০

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৯:৪৮, ৪ মার্চ ২০২২
কৃত্রিম সংকটে অস্থির ভোজ্যতেলের বাজার, সকালে ১৮০ রাতে ১৯০

সকাল গড়িয়ে বিকেল হতেই পাল্টাচ্ছে তেলের দাম।

দফায় দফায় বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম। ব্যবসায়ীদের তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ হবার পর এবার বাজারে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়ানো হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির— এমনটাই অভিযোগ ভোক্তাদের। অন্যদিকে বিশ্ববাজারে দাম বাড়ায় ভোজ্যতেলে এমন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। এদিকে নগরের খুচরা দোকানগুলোতে নেই পর্যাপ্ত তেলের সরবরাহ। তাই সকাল গড়িয়ে বিকেল হতেই পাল্টে যায় তেলের দামও।

খাতুনগঞ্জের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েকদিনের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেলে ১০০ ডলার বেড়ে ১ হাজার ৭৩০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরেই তেলের বাজার এমন ঊর্ধ্বমুখী।

অপরদিকে খুচরা বাজারগুলোতে তেলের সরবরাহ তেমন একটা নেই। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার অজুহাতে গত দু’দিন ধরে দোকানগুলোতে তেল কম আসছে। আমরা কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা বলছেন তাদের কাছেই স্টক কম। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ায় তারা নাকি নতুন এলসি কম খুলছেন। তাই তেলের দাম বেড়েছে।

খাতুনগঞ্জে সয়াবিন তেল মণপ্রতি (৩৭.৩২ কেজি) বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬ হাজার টাকায়। অর্থাৎ পাইকারিতে প্রতিলিটার সয়াবিন ১৭৪ টাকা ১৭ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে পামতেল প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৮৯০ টাকা। সে হিসেবে পাইকারিতে লিটারপ্রতি পামতেল বিক্রি হচ্ছে ১৫৭ টাকা ৮২ পয়সায়।

এদিকে খুচরা বাজারে প্রতিলিটার খোলা সয়াবিন ১৭০, বোতলজাত সয়াবিন ১৮০ থেকে ১৯০, খোলা পামতেল লিটারপ্রতি ১৫৮ ও পাঁচ লিটার বোতলজাত ভোজ্যতেল ৮৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভোজ্যতেলের দাম সকালে এক রাতে আরেক কেন জানতে চাইলে রিয়াজউদ্দীন বাজারের ব্যবসায়ী নেছার উদ্দীন বলেন, বাজারে তেলের সরবরাহ কম। আমরা কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তেল পাচ্ছি না। তাই তেলের যোগান কম, চাহিদা বেশি হওয়ায় দামটাও বাড়তি।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, গতকাল ভোজ্যতেলের খোঁজ নিতে দোকানে গেলাম। দোকানদার বলল তেল নাই। কারণ জানতে চাইলে বলে তেলের সরবরাহ কম। কেন বাজারে তেল নাই সেটার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আমরা চাই জনগণ ভোগান্তি থেকে বাঁচুক।

এদিকে বাজারে প্রতিকেজি ছোলা ৫ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা, চিনির কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ৮৫, ভোজ্যতেলে ৮ টাকা বেড়ে ১৬৮, ছোট দানার মসুর ডালে ৫ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা, বড় দানার মসুর ডালে ১০ টাকা বেড়ে ১শ’ টাকা, ১৫ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৫০ টাকা ও সাধারণ মানের খেঁজুর ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তাছাড়া প্রতিকেজি খোলা আটা ৩৬, প্যাকেটজাত আটা ৫০ ও প্যাকেটজাত ময়দা ৫২ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি দেশি রসুন ৫০, আমদানি রসুন ১২০ ও দেশি আদা ১শ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

তাছাড়া বাজারে প্রতিকেজি শিম-বেগুন ৪০ থেকে ৫০, ফুলকপি-বাঁধাকপি-শসা ৩০, মরিচ ৩০ থেকে ৪০, চাল কুমড়া ৪০ থেকে ৫০, মুলা ২০ এবং গাজর-টমেটো ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে প্রতিকেজি ব্রয়লার ১৫৫ টাকা, পাকিস্তানি কক ২৬০ ও দেশি মুরগি ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

-সিভয়েস/টিএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়