ইমো অ্যাপে বন্ধুত্বের ফাঁদ, বিবস্ত্র করে সর্বস্ব লুট

সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:২১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
ইমো অ্যাপে বন্ধুত্বের ফাঁদ, বিবস্ত্র করে সর্বস্ব লুট

ইমো অ্যাপ কিংবা ফেসবুকে প্রথমে পাতানো হয় বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হলে দেয় প্রেমের টোপ। আর সেই প্রস্তাবে সাড়া দিলেই দেখা করতে ‘দাওয়াত’ দেওয়া হয় ফাঁকা বাসায়। বাসায় গেলেই নেমে আসে ভয়ঙ্কর বিপদ! বাসায় পৌঁছামাত্র ছুটে আসে পাঁচ যুবক। দুই নারীর সাথে বিবস্ত্র করে তোলা হয় ছবি। এরপর ব্ল্যাকমেইল করে দাবি করা হয় টাকা। চালানো হয় শারীরিক-মানসিক নানা নির্যাতন। মূলত তারা একটি চক্র।  

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার রুপনগর আবাসিক এলাকার আদনান ভিলার তৃতীয় তলার বাসায় গিয়ে এমন চক্রের দুই নারীসহ ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় উদ্ধার করা হয় এক ভুক্তভোগীকে

গ্রেপ্তাররা হলেন, পুরাতন চান্দগাঁও এলাকার মৃত মো. জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. আসিফ (২৩),  একই এলাকার মুন্সি মিয়ার ছেলে মো. মোরশেদ (২৯), রাউজান উপজেলার উরগির চর গ্রামের মৃত গোলাম শরীফের ছেলে মো. সাজে শরীফ (৪০), তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৪০), চন্দনাইশ উপজেলার হাজিরপাড়া গ্রামের বাইট্টা সওদাগরের বাড়ির আব্দুল করিমের ছেলে মো. আবুল হাসেম (৩৫), ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার পূর্ব ভূজপুর গ্রামের মৃত হাজী কবির আহাম্মদের ছেলে মো. নাসির উদ্দিন (৩৯) এবং বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামের চা বাগান এলাকার সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (২৬)। 

পুলিশ জানায়, ডিগ্রি পড়ুয়া এক তরুণ অভিযোগ করে ২৩ বছর বয়সী মো. আসিফের সাথে তার ইমো অ্যাপের মাধ্যমে পরিচয় হয় এবং বন্ধুত্ব হয়। গত ২৫ এপ্রিল রাতে আসিফ ওই তরুণকে দেখা করার কথা বলে কৌশলে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই ৪ জন পুরুষ এবং দুইজন নারী উপস্থিত ছিলো। ওই বাসায় প্রবেশের সাথে সাথে ভিকটিম তরুণকে বিবস্ত্র করে নারীদের সাথে তার অশ্লীল ছবি-ভিডিও ধারণ করে তারা। এরপর এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। একইসাথে হাতিয়ে নেওয়া হয় তার সাথে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় অভিযুক্তরা ভিকটিমকে ওই বাসা থেকে বের করে রুপনগর আবাসিক এলাকার গেইট থেকে একটি সিএনজিতে উঠিয়ে দেয়। এরপর ভিকটিম ওই তরুণ ছাড়া পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। 

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা সিভয়েস২৪-কে বলেন, 'এরা ছিনতাইকারীর চেয়েও ভয়ঙ্কর। ছিনতাইকারী শুধু ছিনতাই করে নিয়ে যায়, কিন্তু এরা ছিনতাইয়ের পাশাপাশি ভিকটিমকে মানসিক, শারীরিক অত্যাচারও করে আবার পরিবারের কাছে অর্থও দাবি করে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে সাত জনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি মো. আরমান নামে এক ভিকটিমকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেছি।'

ওসি আরও বলেন, 'এপর্যন্ত শতাধিক মানুষ এই চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে ভিকটিম হয়েছেন। অভিযুক্ত সাতজনের বিরুদ্ধে পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।'

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়