হরিলুট/ সংস্কারের মাস না পেরুতেই ক্ষতবিক্ষত কালুরঘাট সেতু
জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে মধ্যরাতকে বেছে নিয়ে মাত্র ৪৪ দিন আগে সংস্কার করা হয়েছিল চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু। জরাজীর্ণ সেতুতে পড়েছিল তালিজোড়া।
ওই সময়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছিল, ব্যস্ততম এই সেতুর সংস্কার কাজ দিনের বেলায় করা হলে সৃষ্টি হবে জনভোগান্তি। ভোগান্তি এড়াতে ১৩ জুলাই থেকে ১০ দিনের মধ্যরাতকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু সময়ের চাকা ৩০ দিন না ঘুরতেই ফের জরাজীর্ণ হয়ে উঠেছে এই সেতু। সেতুর উপর নির্ভরশীল বাসিন্দারা বলছেন, এর মধ্যেই বেরিয়ে এসেছে সেতু সংস্কারে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির করুণ চিত্র। ১ মাস না যেতেই বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে সেতুটির দগ্ধ ক্ষত।
স্থানীয়রা বলছেন এই সেতুর উপরে একটু হেঁটে দেখলেই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, কী সীমাহীন অপচয় ও অনিয়ম হয়েছে মধ্যরাতের এই সংস্কার কাজে। অর্ধকোটি টাকার বাজেটের বিপরীতে অবলীলায় ব্যবহৃত হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী। অথচ বছরের পর বছর বোয়ালখালী ও পটিয়ার ৩টি ইউনিয়নের প্রায় ২০ লাখ মানুষের ভার বহন করে চলেছে কালুরঘাট সেতু।
অন্যদিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল বিভাগ বলছে, এই সংস্কার কাজের জন্য নভেম্বর পর্যন্ত সময় আছে। কাজ এখনো শেষ হয়নি। এই সেতুর প্রথম ধাপে কার্পেটিংসহ অন্যান্য জরুরি কাজগুলো করা হয়েছে। বাকি রয়েছে এক্সপান্সান জয়েন্ট ও রেলিংয়ের কাজসহ অন্যান্য কাজ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের এক প্রকৌশলী বলেন 'আমি যতদূর জানি কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। নভেম্বর পর্যন্ত এটার টাইম। যতটুকু হয়েছে পরের কাজগুলো পর্যায় ক্রমে হবে।'
এই সেতু ঘুরে দেখা যায়, সম্প্রতি কার্পেটিং করা হয়েছে এমনটা বলা হলেও সেতুর বুকে ফের সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় গর্ত। পশ্চিম থেকে পূর্ব পাশ পর্যন্ত ভাঙ্গাচোরা গর্তে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন হাজারো মানুষ। কোথাও কোথাও উঠে গেছে রেলিংয়ের হাঁড়গোড়।
অটোরিকশা চালক খোরশেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন 'ডেইলি যাতায়াত করি প্রাণ হাতে নিয়ে। কিছুদিন আগে শুনছি এটা ঠিক করছে। কি ঠিক করছে, তা তো বুঝতেছি না।'
প্রায় ৪৪ দিন আগে মধ্যরাতে সেতুর উপর যান চলাচল বন্ধ রেখে কি কাজ হয়েছিল তা অটোরিকশা চালক খোরশেদের মতই বুঝতে পারছেন না বেশির ভাগ স্থানীয় বাসিন্দা।
এসব বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. সবুক্তগীন বলেন 'আমাদের ব্রিজের দায়িত্বে একজন আছেন। উনার সাথে একটু কথা বলেন। এই মুহুর্তে আমি জিএম স্যারের সাথে মিটিংয়ে আছি।'
অন্যদিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের এডিশনাল চীফ ইঞ্জিনিয়ার (ব্রিজ) আহসান জাবির বলেন, 'এই কাজ এখনো চলমান আছে। পর্যায়ক্রমে বাকি কাজগুলো হবে। বৃষ্টির কারণে কাজ শেষ করতে কিছুটা অসুবিধা হয়েছে।'
এপি
আসিফ পিনন