চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক

সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:৪০, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) বাসের ধাক্কায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদে চার দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। আগামীকাল রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা এই ধর্মঘট চলবে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে জরুরি সভা শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহবায়ক মনজুরুল আলম চৌধুরী।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নির্বাহী সদস্য ও চট্টগ্রাম জেলা পরিবহন মালিক গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল ভোর ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলার দূরপাল্লার সকল গণপরিবহণ বন্ধ থাকবে। মানে চট্টগ্রাম-ঢাকা, রাঙ্গামাটি চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম কাপ্তাই, চট্টগ্রাম কক্সবাজার টেকনাফ রোডে পরিবহন বন্ধ থাকবে। চট্টগ্রাম শহর থেকে কোনো গাড়ি ঢুকবেও না আবার বেরও হবে না।’ 

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের চার দফা দাবিগুলো হলো— চুয়েটে দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে ৪-৫টি গাড়ি ভাংচুর ও তিনটি বাস জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনায় মামলা গ্রহণ, ক্ষতিপূরণ দেয়া, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার এবং চুয়েটের তিন শিক্ষার্থীকে বহনকারী মোটর সাইকেলটি নিবন্ধিত ছিল কি না, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল কি না, তিনজন একইসঙ্গে মোটর সাইকেলে ওঠার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন হয়েছে কি না ও তারা মাদকাসক্ত ছিল কি না- এসব বিষয় তদন্তে কমিটি গঠন। 

এ প্রসঙ্গে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নির্বাহী সদস্য ও চট্টগ্রাম জেলা পরিবহন মালিক গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান বলেন, ‘যখনই কোনো সড়ক দুঘর্টনা হয় তখনই প্রভাবশালী মহল হস্তক্ষেপ করা শুরু করে। আইন অনুযায়ী কোনো পদক্ষেপ না নিয়েই উল্টো বিভিন্নসময় রাজনৈতিক বা প্রভাবশালী মহল থেকে চাপ দেওয়া হয় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য। এটার সুরাহা চাই তাই ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। পরবর্তীতে সরকার বা কর্তৃপক্ষ আমলে না নেয় তাহলে লাগাতার কর্মসূচিতে যাবো।’

এদিকে গত ২২ এপ্রিল চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হয়। এর জের ধরে ওইদিন থেকেই শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন। এরই মধ্যে গত ২৪ এপ্রিল ঘাতক বাসের চালককে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে শিক্ষার্থীরা কিছুটা শান্ত হয়। 

পরবর্তীতে গত ২৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা চুয়েটের মূল ফটকের সামনের সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন। এরপর চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। ওই বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনও করেন।

অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আগামী ১১ মে পর্যন্ত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে চুয়েট সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

যদিও নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই সময়ে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করতে পারবেন। তবে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে দাবি আদায়ে আবারও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়