Cvoice24.com

পোস্টারে ‘পরিবেশদানব’ পলিথিন

রবিউল রবি

প্রকাশিত: ১০:৩২, ২২ ডিসেম্বর ২০২৩
পোস্টারে ‘পরিবেশদানব’ পলিথিন

দেশজুড়ে বইছে নির্বাচনী আমেজ। চট্টগ্রামও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রার্থীরা পুরোদমে শুরু করে দিয়েছেন প্রচার-প্রচারণা। মাইকিং, গণসংযোগ, পোস্টার টাঙানো—সবই চলছে সমানে? চট্টগ্রাম নগরের অলিগলি থেকে মূল সড়ক—ছেয়ে গেছে পোস্টার-ব্যানারে। কিন্তু পোস্টারগুলোতে ভালোভাবে চোখ দিলেই দেখা মিলছে ‘পরিবেশদানব’ পলিথিনের আস্তরণ।

নির্বাচনী প্রচারে ভোটারদের কাছে টানতে গিয়ে যারা পরিবেশের ক্ষতি করছেন তাঁরাই আবার হতে চান জনপ্রতিনিধি! অথচ রাষ্ট্রীয়ভাবেই নিষিদ্ধ পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার। এদিকে, এক সংসদ সদস্য প্রার্থীর দাবি, নির্বাচনের পর এসব পলিথিন অপসারণ করতে পুড়িয়ে ফেলবেন তিনি!

তবে অনেক প্রার্থীর দাবি, যেহেতু এখন শীতের মৌসুম তাই রাতে কুয়াশা পড়ছে। আর কুয়াশায় ভিজে পোস্টার যেন নষ্ট না হয় কিংবা হঠাৎ বৃষ্টির পানিতে নষ্ট না হয় সেজন্যই পোস্টারগুলো লেমিনেটিং করে টাঙাচ্ছেন তারা। না হয়, বারবার তাদেরকে পোস্টারগুলো টাঙাতে হবে, ফলে বাড়বে নির্বাচনী ব্যয়। 

আবার অনেক প্রার্থী বলছেন, যেহেতু নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী বিধিমালায় পোস্টারে পলিথিন ব্যবহার সংক্রান্ত কোনো বিধিনিষেধ নেই সেহেতু তাঁরা এভাবে পোস্টার টাঙালেও আইনের ব্যত্যয় দেখছেন না। আর এ বিষয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞাও নেই। 

পরিবেশেরদানবপলিথিন, জলাবদ্ধতারও কারণ

বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে, পলিথিন ও প্লাস্টিক ভেঙে মাইক্রো প্লাস্টিকে পরিণত হচ্ছে। ওই মাইক্রো প্লাস্টিক মাটি ও পানিতে মিশে বিভিন্ন সবজি, ফল ও প্রাণীর শরীরে প্রবেশ করছে। পরে এগুলো খাদ্য হিসেবে মানুষের শরীরে ঢুকছে।

এছাড়া, পলিথিন এমন এক বস্তু যা অপচনশীল। এই পলিথিন পরিবেশে ১০০ বছরেরও বেশি টিকে থাকে। পলিথিন একই সঙ্গে কৃষিজমি ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করে। ফলে, কমে যায় মাটির উর্বরতা শক্তি ও গুণ। 

শুধু তাই নয়, চট্টগ্রাম শহরের প্রধান সমস্যাগুলোর একটি জলাবদ্ধতা। এসব পলিথিন ও প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্যের কারণে ড্রেনগুলো ভরাট হয়ে যায়। ফলে বৃষ্টির পানি প্রাথমিক খালে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। 

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) এর তথ্য বলছে, সংস্থাটি দৈনিকভিত্তিতে মাত্র দুই হাজার টন বর্জ্য অপসারণ করতে পারে। বাকি এক হাজার টন বর্জ্য ড্রেন ও খালে ফেলা হয়। আর এর সাথে নির্বাচনী পোস্টারের পলিথিনের হাজার হাজার টন বর্জ্য যুক্ত হলে সামনের বৃষ্টির মৌসুমে জলাবদ্ধতার সমস্যা প্রকট হতে পারে।

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮২ সালে বাংলাদেশে পলিথিন বাজারজাত ও ব্যবহার শুরু হয়। ২০০২ সালের ১ মার্চ সরকার বাংলাদেশে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। আইন অমান্যকারীর জন্য ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকার জরিমানার বিধান রাখা হয়।

লেমিনেডেট পোস্টারে সয়লাব নগরী

চট্টগ্রামে মোট ১৬টি সংসদীয় আসন রয়েছে। এর মধ্যে নগরীর আওতাধীন আসন চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া), চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-খুলশী) ও চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসন। আর উপজেলাসহ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন—এমন আসন হচ্ছে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড), চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) ও চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী)। 

চট্টগ্রাম-১০ আসনের জিইসি, ওয়াসা, লালখানবাজার, দুই নম্বর গেটসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সবচেয়ে বেশি দেখা মিলেছে এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য এবং আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চুর পোস্টার। তার ছবি ও প্রতীক ‘নৌকা’ সম্বলিত এই পোস্টারগুলো টাঙানো হয়েছে প্রতিটি অলিগলি রাস্তাঘাটে। আর সব পোস্টারই লেমিনেটিং করেছেন তিনি। 

তবে, একই আসনে এবারের ‘হেভিওয়েট’ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন মোহাম্মদ মঞ্জুর আলম। তার পোস্টারে দেখা গেছে ভিন্নতা। বেশ কয়েকটি স্থানে পোস্টার টাঙালেও তিনি ব্যবহার করেননি পলিথিন।  

শুধু চট্টগ্রাম-১০ আসন নয়, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে গিয়েও দেখা মিলেছে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমনের লেমিনেটিং করা পোস্টারের। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) নগরের আন্দরকিল্লা প্রিন্টিং প্রেসে গিয়ে দেখা গেছে, এই প্রার্থীর  লেমিনিটিং করা পোস্টারের ছাপাকাজ এখনো চলছে। 

এ প্রসঙ্গে কথা বলতে চট্টগ্রাম-১০ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

চট্টগ্রাম-১১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমন সিভয়েসকে বলেন, ‘মূলত কুয়াশার কারণে লেমিনেটিং করা হয়েছে।’

একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে পোস্টারে পলিথিনের ব্যবহারকে সমর্থন করেন কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি গণসংযোগে আছি। আপনি আমার প্রচার সেলের সাথে যোগাযোগ করুন।’

পোস্টারের পলিথিন অপসারণ করবেন পুড়িয়ে

জাতীয় পার্টির সঙ্গে কেন্দ্রীয় সমঝোতার পর চট্টগ্রাম-৮ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীকে সরিয়ে নেয় দলটি। এই আসনে জাতীয় পার্টির হয়ে লড়ছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ। তার সাথে লড়াই করছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। 

চান্দগাঁও-বোয়ালখালীতে ছালামের বলয় বহু পুরনো। আর তিনি এই আসনের ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীও। যার প্রমাণ মিলছে আসনের প্রতিটি অলিগলিজুড়ে তাঁর পোস্টার। তবে এই প্রার্থীও লেমিনেটিং করেছেন তাঁর টাঙানো পোস্টারে।

তাঁর টাঙানো পোস্টারের পলিথিন বর্জ্য হয়ে পরিবেশের ক্ষতি করবে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে ছালাম সিভয়েসকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের পরে পোস্টারগুলো আমি নিজেই অপসারণ করে নেবো। আর সিটি করপোরেশনও সহায়তা করবে। আর এটা সহজেই নষ্ট করা যাবে। পরিবেশকে দূষণ করার কোনো সুযোগ নেই।’

পলিথিন যেহেতু অপচনশীল সেহেতু কোন প্রক্রিয়ায় নষ্ট করবেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আগুন জ্বালিয়ে দিলেই তো হয়ে গেলো।’

পলিথিন আগুনে পোড়ালে পরিবেশ দূষণের পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে তো উপায় নেই নষ্ট করার। তবে কী করবেন—প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি ‘পরেরটা পরে দেখা যাবে’ বলে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

অথচ পলিথিন মাটি, পানি, বায়ুকে সমানভাবে দূষিত করে। আর পলিথিন পোড়ালে এর উপাদান পলিভিনাইল ক্লোরাইড পুড়ে কার্বন মনোক্সাইড উৎপন্ন হয়ে বাতাস দূষিত করে। সমুদ্রসম্পদ ধ্বংসের ক্ষেত্রেও দায়ী পলিথিন। ইতোমধ্যে একাধিক গবেষণায় লবণে এবং মাছে প্লাস্টিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই সংসদীয় আসনগুলো ছাড়াও অন্যান্য আসনের বেশিরভাগ প্রার্থী পোস্টারে ব্যবহার করেছেন লেমিনেটিং। যা পরিবেশের জন্য ডেকে আনবে মারাত্মক বিপর্যয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রার্থী বলেন, মূলত আমাদের টাঙানো পোস্টারগুলো লেমিনেটিং করার কারণ বৃষ্টি ও কুয়াশা। আর এখন যেহেতু শীতের মৌসুম তাই পোস্টার নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচাতে এর বিকল্প নেই। নষ্ট হয়ে গেলে আবারও ছাপাতে হবে এবং লাগাতে হবে। ফলে, খরচ অনেক বেড়ে যাবে। আর এক্ষেত্রে ইসি’র কোনো বিধিনিষেধ নেই। 

নির্বাচনী আচরণ বিধিতেও নেই পলিথিনের নিষেধাজ্ঞা 

সংসদীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮-এ নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে বলা আছে—‘প্রত্যেক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তিকে বিধি ৬ হইতে বিধি ১৪ এর বিধানাবলী অনুসরণ করিতে হইবে।’ 

কিন্তু এসব বিধিমালার কোথাও পোস্টারে পরিবেশ দূষণকারী পলিথিন ব্যবহারে বিধি-নিষেধের কথা উল্লেখ নেই। 

পলিথিন রিসাইকেলের ব্যবস্থা নেই চসিকের

নির্বাচন শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময় পরই নগরীতে টাঙানো প্রার্থীদের পোস্টারগুলো অপসারণে কাজ করবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ। সংস্থাটি কি এসব পলিথিনের বর্জ্য রিসাইকেল করতে পারবে কিংবা বর্জ্যগুলো কোথায় ফেলা হবে—এই প্রশ্নের উত্তর জানতে যোগাযোগ করা হয় চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা লতিফুল হক কাজমীর সাথে। 

তিনি সিভয়েসকে বলেন, ‘আমাদের রিসাইকেল প্লান্ট নেই। এক্ষেত্রে বিধি অনুযায়ী প্রার্থীদেরকেই পোস্টারগুলো অপসারণ করতে হবে। তারপরও আমরা এগুলো করপোরেশনের পক্ষ থেকে অপসারণ করি। কিন্তু রিসাইকেল করার সুযোগ নেই। পলিথিনের বর্জ্যও ডাম্পিং স্টেশনেই চলে যাবে। পলিথিন সোর্সটাই আমাদের বন্ধ করতে হবে। আর এটি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হবে।’

তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, ‘কয়েকদিন আগে এক জায়গায় ময়লা পরিষ্কার করতে গিয়ে ১০ মিটারের মতো শুধু পলিথিন উঠে এসেছে মাটি থেকে। যাঁরা সেখানে কাজ করছিলেন তাঁরা আমাকে জানালেন—সেখানে ময়লা কম, শুধু পলিথিন উঠে আসছে। পলিথিনগুলো পরিবেশেই থেকে যাচ্ছে। এখন আসলে উপায় নেই এগুলো নষ্ট করার।’

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো যা বলছে

এসব লেমিনেটেড পোস্টারগুলোর ফলে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটার শঙ্কা জানিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির সিভয়েসকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আসলে আমরা উদ্বিগ্ন। এমনিতেই বাজার সয়লাব পলিথিনে। এর ওপর মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ জনপ্রতিনিধিদের এই লেমিনেটেড পোস্টার। যেটি আমাদের পরিবেশ ও প্রকৃতির জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরুপ। পোস্টারগুলো এমনিতেই রাস্তায় পড়ে যাবে। এরপর সেগুলো ড্রেনে গিয়ে ড্রেনেজ সিস্টেমের বিপর্যয় ঘটাবে। আর অন্যান্য পরিবেশগত বা স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতো আছেই। নগরীতে জলাশয়, নদী বা পুকুর না থাকায় পানিগুলো ঠিকমতো যেতে পারে না। আর এর একটি বড় কারণ হচ্ছে প্লাস্টিক বা পলিথিন।’

নির্বাচন কমিশনকে তাগাদা দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইসি এসব লেমিনেটেড পোস্টার ব্যবহারে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। কিন্তু এই পলিথিনের কারণে পরিবেশে কী কী ক্ষতি হয় তা আমরা চিঠির মাধ্যমে তাঁদের বুঝিয়ে বলবো। এরপরেও তাঁরা ব্যবস্থা না নিলে আমাদের উচ্চ আদালতে রিট করারও পরিকল্পনা রয়েছে। এখন একজন সংসদ সদস্য যিনি নির্বাচিত হবেন তিনি তো এরকম পরিবেশের বিপর্যয় ঘটাতে পারেন না।’

একজন প্রার্থী আগুন দিয়ে লেমিনেটেড পোস্টার জ্বালিয়ে অপসারণ করতে চান—এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এমনিতেই পলিথিন ব্যবহারে পরিবেশের ঝুঁকি রয়েছে, এর ওপর পলিথিন আগুনে পোড়ালে সেটাতো মারাত্মক হবে। আগুনে পোড়ানো তো আরও ক্ষতিকর। সেটাতে তো বাতাসও দূষিত হবে। আর এই বাতাস আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসেও প্রভাব ফেলবে।’

‘আমাদের দেশে তো আইনের শাসন নেই। তাই যাঁরা রক্ষক তাঁরাই ভক্ষকের ভূমিকা পালন করছে। আমাদের রাষ্ট্রীয় যে আইন আছে সেটাতো সংসদ সদস্যরাই তৈরি করেন আর সংসদেই তৈরি হয়। আমার যেটি মনে হয়, এই আইন সম্পর্কে যে মানার বা পালন করার বিষয়ে দেখার সরকারের যে সংস্থাগুলো আছে সেই জায়গাতে তাঁদের কোনো অবদান আসলে থাকে না। আর তাঁরা মনেও করে না। এখন যেহেতু আমাদের দেশের বেশিরভাগ রাজনীতিবীদ ব্যবসায়ী, তাই তাঁরা দেশের বা জনগণের স্বার্থের চেয়ে নিজের স্বার্থকেই বড় করে দেখে।’-যোগ করেন এই পরিবেশবিদ।

নির্বাচনে পোস্টারের ব্যবহার কমিয়ে প্রার্থীদের ডিজিটালি প্রচারণার দিকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান সিভয়েসকে বলেন, ‘নির্বাচনে এখন অনেক প্রার্থী পোস্টারে লেমিনেটিং করেন। যা তাঁদের কাছ থেকে আমাদের কোনোভাবে কাম্য নয়। এরকম পোস্টার টাঙানোয় মানুষ কতটা আকৃষ্ট হয় এই ডিজিটাল যুগে—তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ আছে। যেহেতু এখন ডিজিটাল যুগ, তাই প্রচারটাও ডিজিটালি করা উচিত। কারণ প্লাস্টিক-পলিথিন আমাদের পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ।’

জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা যাঁরা নির্বাচন করছেন, জনপ্রতিনিধি হবেন—আপনারা মানুষকে ভালো রাখতেই জনপ্রতিনিধি হবেন। অতএব, কিভাবে মানুষ ভাল থাকবে সেটাও আপনাদের বিবেচনায় নেওয়া উচিৎ।’

নির্বাচনে প্রার্থীদের ব্যবহার করা লেমিনেটেড পোস্টারের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা আছে কিনা তা জানতে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (মেট্রো) মিয়া মাহমুদুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সিভয়েসকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি বলতে পারবো না। আপনি পরিচালক মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করেন।’

চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (মেট্রো) হিল্লোল বিশ্বাসের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি। এরই মধ্যে প্রতীক পেয়ে প্রার্থীরা শুরু করেছেন প্রচার-প্রচারণা। চট্টগ্রামের মোট ১৬ আসনে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১২০ প্রার্থী।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়