মাত্র এক মিনিটের জন্য বিসিএস স্বপ্ন চুরমার

সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:৫০, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
মাত্র এক মিনিটের জন্য বিসিএস স্বপ্ন চুরমার

৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ছিল আজ। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে এ পরীক্ষা। নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগেই পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করার বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু একেবারে শেষ সময়ে অর্থাৎ ঠিক সাড়ে নয়টার পৌঁছানোর পরেও অনেক পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেননি কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) নগরের জিইসির ওআরনিজাম রোড়ের ইস্পাহানি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঠিক ৯টা ৩০ মিনিটে কেন্দ্রের প্রধান গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেসময় অপেক্ষমাণ দেড় শতাধিক পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। কোনোরকম সতর্কতা ছাড়াই গেট বন্ধ করে চলে যান দায়িত্বরতরা। এ সময় কাকুতি মিনতি করেও লাভ হয়নি। দূর দূরান্ত থেকে আসা এসকল পরীক্ষার্থীদের অনেকেই হাউমাউ করে কান্না শুরু করেন। এরমধ্যে কারও কারও ছিল বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার শেষ সুযোগ।

ঢাকা থেকে বিসিএস পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন হুমাইরা (ছদ্মনাম)। কর্নেল হাট আত্মীয়ের বাসায় উঠেছিলেন তিনি। হাতে সময় নিয়ে বের হওয়ার পরেও গাড়ি পেতে খানিকটা বেগ পেতে হয়েছিল বলে জানান তিনি। সিভয়েস২৪-কে তিনি বলেন, ‘ঠিক ৯টা ২৯ মিনিটে মেইন রাস্তায় গেটের সামনে ছিলাম। দৌড়ে এসে দেখি গেট বন্ধ করে দিয়েছে। একেবারে মুখোমুখি টাইমে এসে পড়ি। ম্যাজিস্ট্রেটকে বারবার রিকুয়েস্ট করার পরও তিনি আমাদের কোনো কথাই শুনেননি। শুধু আমি না প্রায় দেড়শোর বেশি পরীক্ষার্থীকে ঢুকতে দেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাশের কেন্দ্রেও ৯টা ৪০ মিনিটে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই কেন্দ্রে এক মিনিটও অপেক্ষা করলো না। আমরা তো বরাবর সময়েই উপস্থিত ছিলাম। শেষ সময়ে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমাদের কোনোরকম সতর্কতাও দেওয়া হয়নি যে এখনই গেট বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

আরেক পরীক্ষার্থী নাজিফা (ছদ্মনাম) বলেন, ‘এটাই আমার শেষ বিসিএস ছিল। এতো প্রস্তুতি নিয়ে এসে পরীক্ষাটাই দিতে পারলাম না। জানি না এখন আমার কী করা উচিত। ভাগ্যকে দোষ দিব নাকি নিজেকে দোষ দিবো বুঝতে পারতেছি না।’

আরেক পরীক্ষার্থীর মামাতো ভাই মো. ফাহিম বলেন, ‘দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট যে একেবারেই ভুল তা বলছি না, উনারা নিয়ম ফলো করেছেন। কিন্তু এতোগুলা পরীক্ষার্থীর বিষয়ে মানবিক দিক বিবেচনা করতে পারতেন। যেহেতু তারা বরাবর টাইমে কেন্দ্রে এসেছে তাদেরকে একটা সুযোগ দিতে পারতো। তাদের দুর্ভাগ্য যে ১ মিনিটের জন্য তারা পরীক্ষার কেন্দ্রেই ঢুকতে পারিনি। আমার বোনের শেষ আরেকটা সুযোগ আছে। এই বিষয়ে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া ছাড়া আর কিছু বলার নেই।’

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. সাদি উর রহিম জাদিদ সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘ঠিক সাড়ে ৯টায় গেট বন্ধ করা হয়েছে। এটা পিএসসির নির্দেশনা। পিএসসি থেকে কড়াকড়িভাবে নির্দেশনা দেওয়া ছিল সকল পরীক্ষার্থীকে ৩০ মিনিট আগে অর্থাৎ সাড়ে নয়টার মধ্যেই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। এখানে ম্যাজিস্ট্রেটের কোন কিছু ছিল না। ম্যাজিস্ট্রেট শুধু নির্দেশনা পালন করেছেন। এছাড়া অন্য কোনো বিষয় থাকলে পিএসসির সঙ্গে আলাপ করতে পারেন। এটা আমাদের জেলা প্রশাসনের কোনো পরীক্ষা না। আমরা শুধু ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছি তাদেরকে ইন্সট্রাকশন দিয়েছি সুষ্ঠুভাবে যাতে পরীক্ষাটা অনুষ্ঠিত হয়।’

এ বিষয়ে পিএসসির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোছাম্মৎ সাবিনা ইয়াছমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়