ফটিকছড়ির ভাণ্ডারী মুলা ‘নিয়ত’ করে খান ভক্তরা

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ফটিকছড়ি

প্রকাশিত: ১৫:৫৩, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪
ফটিকছড়ির ভাণ্ডারী মুলা ‘নিয়ত’ করে খান ভক্তরা

ফটিকছড়িতে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের ওরশ ঘিরে বসেছে মাঘের মেলা। জাপানি মুলা মেলার বিশেষ আকর্ষণ। এগুলো ‘ভাণ্ডারী মুলা’ নামেও খ্যাত। দরবারের ভক্তরা ‘নিয়ত’ করে খান এসব মুলা। তাই মেলায় এগুলোর কদর সবচেয়ে বেশি। নাজিরহাট থেকে শুরু করে মাইজভাণ্ডার দরবার এলাকা পর্যন্ত মেলায় মুলা বিক্রি চোখে পড়ার মত। একেকটি মুলা দুই-তিন হাত পর্যন্ত লম্বা হয়। আর ওজন হয় ১০/১৫ কেজি। প্রতিটি মুলা ১০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

হযরত গাউছুল আজম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারীর (ক.) বার্ষিক ওরশ শরীফকে কেন্দ্র করে ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার এলাকাজুড়ে বসেছে সপ্তাহব্যাপী গ্রামীণ বা লোকজ পণ্যের মেলা। এটি ‘মাঘের মেলা’ হিসেবে পরিচিত। 

সরেজমিনে দেখা যায়, যারা মেলায় এসেছেন প্রায় প্রত্যেকে কাঁধে করে মুলা নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবছরের মতো এবারও মেলায় এসেছে প্রচুর জাপানি মুলা। এটি মেলার বিশেষ আকর্ষণ।

স্থানীয় ও আশেপাশের এলাকা থেকে চাষীরা তাদের উৎপাদিত বড় আকারের মুলা (স্থানীয় ভাষায় জাপানি মূলা বা ভাণ্ডারী মুলা ) মেলায় বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসেন। কারণ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ভক্তদের মাঝে এ অঞ্চলের মুলার আলাদা কদর রয়েছে। খ্যাতি ছড়িয়েছে দেশজুড়ে।

আলি নেওয়াজ নামে এক ভক্ত বলেন, ‘প্রতিবছর ওরশ শরীফে আসলে মুলা নিয়ে যাই। মুলাগুলো খেতে অনেক ভালো।’

নাজিম নামের আরেকজন বলেন, ‘মাইজভাণ্ডার শরীফের মূলা হিসেবে প্রতিবছর ওরশ শরীফে আসলে নিয়ে যাই। এ মুলা নিয়ত করে আমরা খাই।’

মুলা বিক্রেতা পারভেজ বলেন, ‘আমরা সারাবছর আশায় থাকি এই মাঘের মেলার জন্য। কারণ মেলায় ভালো বিক্রি হয়।’

এদিকে ফটিকছড়িতে এ বছর ৪ শ ৯০ হেক্টর জমিতে মুলা চাষ করা হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভাল। বড় বড় আকৃতির মুলার বেশ কদর রয়েছে ওরশ শরীফে আসা ভক্তদের কাছে। ১০ মাঘের ওরশ শরীফে বিক্রির জন্য আশায় থাকেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, ‘এখানকার চরের মাটি খুবই উর্বর এবং এতে উৎপাদিত ফসল অত্যন্ত পুষ্টিকর। চলতি বছর ভাণ্ডারী মূলার ভাল ফলন হয়েছে।’

তিনি জানান, মাইজভাণ্ডার ওরশ ঘিরে লোকজ মেলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে আসেন। রকমারি খাবার, বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন। মেলায় পোশাক, খেলনা, প্রসাধনী সামগ্রীসহ গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় বাঁশ বেত, মাটির, লোহার তৈরি জিনিসপত্র পাওয়া যায়। এলাকার বউ-ঝিয়েরাও এই মেলার অপেক্ষায় থাকে ঘরের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য।

 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়