Cvoice24.com

রামগড়ে সূর্যমুখীর বাণিজ্যিক চাষ, প্রথমবারেই বাজিমাত

করিম শাহ, রামগড় (খাগড়াছড়ি)

প্রকাশিত: ১৬:৩৩, ৪ মার্চ ২০২৪
রামগড়ে সূর্যমুখীর বাণিজ্যিক চাষ, প্রথমবারেই বাজিমাত

সূর্যমুখীর বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়েছে খাগড়াছড়ির রামগড়ে। স্বল্প খরচে লাভজনক চাষ হওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকছেন সূর্যমুখী চাষের দিকে।গেল বছর স্বল্প পরিসরে ‘বিক্ষিপ্তভাবে’ সূর্যমুখী চাষ শুরু হয় রামগড়ের মাটিতে। সেবার সূর্যমুখীর ‘হাসি’ দেখে আশার সঞ্চার হয় উপজেলা কৃষি বিভাগের। ফলে এবার বাণিজ্যিকভাবে চাষের লক্ষ্যে প্রণোদনার আওতায় এনে চাষের ব্যপ্তি বাড়িয়েছে সরকারি দপ্তরটি। পরীক্ষামূলকভাবে ২০ জন কৃষকের মাধ্যমে ৩ হেক্টর জমিতে আবাদ করা সূর্যমুখীর। প্রথমবারে মতো চাষ করে আশানরূপ ফলনও পেয়েছেন তাঁরা। তবে বীজ থেকে তেল সংগ্রহের কোন ব্যবস্থা না থাকায় কিছুটা অস্বস্তিতে কৃষকরা।

কৃষি বিভাগ বলছে, এখানকার মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী চাষের জন্য বেশ উপযোগী। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকদের সূর্যমুখী চাষে উদ্ধুব্ধ করা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে প্রণোদনা। এবার প্রণোদনার আওতায় ৩ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নাকাপ, দাতারাম পাড়া, লাচারীপাড়া ও ফেনীরকুলচরসহ বিভিন্ন এলাকায় ২০ বিঘা (৩ হেক্টর) জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। প্রণোদনা প্রদর্শনী প্রকল্পের আওতায় ২০ জন কৃষক চাষ করেছেন সূর্যমুখীর। লাভজনক হওয়ায় সূর্যমুখী ঘিরে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। 

জাপান ফেরত ক্যশাই মার্মা বলেন, তিনবছর আগে দেশে ফিরে কাপড়ের ব্যবসা করছি। কৃষি অফিসের পরামর্শে সরকারি প্রণোদনা নিয়ে পারিবারিক জমিতে এক বিঘা সূযমুখী চাষ করেছি। 
প্রথমবারই ভাল ফলন হয়েছে। সূযমুখী একদিকে মনোমুগ্ধকর, অন্যদিকে লাভজনক ফসল। আগামীতে আরো বেশি পরিমাণে চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

লাচারীপাড়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা চিং থোয়াই মগ বলেন, ধান-পাট চাষে প্রচুর পরিশ্রম এবং খরচ হয় কিন্তু সূর্যমুখী চাষে খরচ কম লাভ বেশি। যে কারণে আগামীতে অনেক কৃষকই সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকবে।

রামগড় উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শরিফ উল্যাহ বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখী ফুল চাষে খরচ কম। এতে সার-ওষুধ কম লাগে। তেমন পরিচর্যাও করতে হয় না। কৃষি অফিসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রনোদণা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দিকে সারিবদ্ধভাবে বীজ বপন করা হয়। বীজ বপনের ৯০-১০০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দুবার সেচ দিতে হয় এ ফসলে। প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ পড়ে। আর এক বিঘা জমির উৎপাদিত বীজ থেকে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা যায়। অন্যদিকে সূর্যমুখীর খৈল গরু ও মহিষের উৎকৃষ্টমানের খাদ্য।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাশেদ চৌধুরী বলেন, পুষ্টি চাহিদা পূরণে সূর্যমুখী তেলের জন্য বিদেশ থেকে বীজ আমদানি করতে হয়। দেশে সূর্যমুখীর আবাদ করা গেলে আর আমদানির প্রয়োজন পড়বে না। কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়