জেলা প্রশাসন–আইনজীবী সমিতির দ্বন্দ্বের মাঝখানে পড়ল চট্টগ্রাম ওয়াসা!

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:১৫, ১৭ এপ্রিল ২০২২
জেলা প্রশাসন–আইনজীবী সমিতির দ্বন্দ্বের মাঝখানে পড়ল চট্টগ্রাম ওয়াসা!

চট্টগ্রামের কোর্ট হিলে নতুন স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আইনজীবী সমিতির দ্বন্দ্ব চলছে বহুদিন ধরেই। মাঝখানে কিছুদিন সেই দ্বন্দ্ব শিথিল ছিল। তবে সেটি বেশিদন আর রইল না। এবার গভীর নলকূপ স্থাপন নিয়ে দুই পক্ষই মাঠ গরম শুরু করেছে। আর দুই পক্ষের সেই দ্বন্দ্বে ‘সাতেপাঁচে’ না থেকেও মাঝখানে পড়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা।

কোর্ট হিলের এনেক্স ভবন–১ এর সামনে বেশ কিছুদিন ধরে গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ করছে আইনজীবী সমিতি। সেই কাজ বন্ধে গত শুক্রবার ওয়াসার কর্মকর্তাদের খবর দেয় জেলা প্রশাসন। পরে ওয়াসার একজন রাজস্ব কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁর সঙ্গে যান কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও। তখন ওয়াসার ওই রাজস্ব কর্মকর্তা ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, ১১শ ফুট গভীর ও চার ইঞ্চি ব্যাসার্ধের নলকূপ স্থাপনের কাজ করা হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা আইনজীবী সমিতির কাছে অনুমতি না নিয়ে গভীর নলকূপ স্থাপনের কারণ জানতে চান। তবে আইনজীবী সমিতির নেতারা তাঁকে বলেন, পুরোনো গভীর নলকূপটিই তাঁরা সরাচ্ছেন। এরপর ওয়াসার ওই কর্মকর্তা ফিরে যান।

আজ বিকেলে গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ শুরু করলে, আবারো ওয়াসাকে খবর দেয় জেলা প্রশাসন। পরে ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক আবু সাফায়াৎ মুহম্মদ শাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে ওয়াসার একটি টিম আজ তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে যান। তাঁদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা আফরোজ ও পুলিশের সদস্যরাও যান। সবাই গিয়ে নলকূপ স্থাপনের কাজে বাধা দিতেই আইনজীবী সমিতির নেতারাও হাজির। পরে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তবে পুলিশ দুই পক্ষকে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

ওয়াসার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে গভীর নলকূপ স্থাপনের আগে অনুমতি নিতে হয়। তবে এক্ষেত্রে ওয়াসা কিছুটা ছাড় দেয়। নলকূপ স্থাপনের পরে অনুমতি নেওয়ার সুযোগ দেয়। কেননা অনেক সময় দেখা যায় নলকূপ স্থাপন করার পর পানি মেলে না। তখন তো আগে অনুমতি নিয়েও কাজ নেই। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আইনজীবী সমিতির দ্বন্দ্বের কারণেই এই নলকূপ স্থাপন নিয়ে এত কথা হচ্ছে। আর দুই পক্ষের মাঝখানে পড়তে হচ্ছে ওয়াসাকে।’

গভীর নলকূপ স্থাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের আগে থেকেই গভীর নলকূপ আছে। কিন্তু সেটিতে এখন লাল পানি বের হয়। এ কারণে কতটুকু গভীরে স্থাপন করলে পরিস্কার পানি পাওয়া যাবে সেটি টেস্ট করতে করে নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ওয়াসাকে দিয়ে সেই কাজেও বাধ সাধছে। আমরা তাঁদের সতর্ক করে দিচ্ছি— বেশি বাড়াবাড়ি করলে বড় আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।’

তবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, ‘সিটি করপোরেশনে গভীর নলকূপ স্থাপন করতে হলে ওয়াসার অনুমোদন নিতেই হবে। কিন্তু আইনজীবী সমিতি জোর করে নলকূপ স্থাপন করতে চাচ্ছে। এজন্য বাধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা অমান্য করে কাজ চালু রেখেছ। আমরা ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়