Cvoice24.com

বাচ্চুকে সমন্বয়কের দায়িত্ব দিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ
চলতি মাসেই নগর যুবলীগের ওয়ার্ড সম্মেলনের নির্দেশ

প্রকাশিত: ১৫:৩৭, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
চলতি মাসেই নগর যুবলীগের ওয়ার্ড সম্মেলনের নির্দেশ

চলতি মাসেই নগর যুবলীগের ৪৩টি ওয়ার্ডের সম্মেলন করে কাউন্সিলরদের তালিকা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জমা দিতে হবে। তালিকা জমা দিতে না পারলে নগর যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যাম ওমর ফারুক চৌধুরী। 

তবে নগর যুবলীগের একটি অংশ কমিটি করার পক্ষে মত দিলেও আরেকটি অংশ চাই কমিটি যেন এখন না হয়। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পরে হলেই সুবিধা হবে বলে মনে করছেন তারা। 

এদিকে কমিটি হওয়ার ছয় বছর হলেও কমিটি করতে পারেনি নগর যুবলীগ। তারপর  সম্প্রতি একটি চিঠিতে চার মাস সময় চেয়ে সম্মেলন করার আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের কাছে। কিন্তু চার মাসের সে সময় না দিয়ে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আলতাফ হোসেন বাচ্চুকে নগর যুবলীগের সমন্বয়ক হিসাবে ওয়ার্ড কমিটি করে কাউন্সিলরদের তালিকা জমা দেওয়ার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আহবায়ক মহিউদ্দীন বাচ্চু বলেন, আমি চার মাস সময় চেয়েছি সম্মেলন করার জন্য। তবে সময় না দিলেও তারই ধারাবাহিকতায় বাচ্চু ভাইকে নগর যুবলীগের সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনিই দেখ ভাল করবেন সব। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাচ্চু ভাই হয় তো একটি ফর্মুলা নিয়ে কাজ করছেন। হয় তো কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান আমাদের অভিভাবক ওমর ফারুক চৌধুরী কোন ফর্মুলা দিয়ে বাচ্চু ভাইকে দায়িত্ব দিয়েছেন। সেই হিসাবে আমরা আশা করছি তিনি কাজ করে যাবেন। এক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান যে নির্দেশনা দিবেন, সেই নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করা। 

জানা গেছে, সম্প্রতি চট্টগ্রাম মহানগরসহ সারা দেশ থেকে যুবলীগের দশ ইউনিটকে ঢাকায় ঢেকে পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় কমিটি। সেই সময় সাংগঠনিক অবস্থার পাশাপাশি কমিটি গঠন ও কাউন্সিলরদের প্রস্তুতি নেওয়ার তাড়া দেওয়া হয়েছিল। সেখানে নগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির শীর্ষ পাঁচ নেতাই সম্মেলনের প্রস্তুতির জন্য সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের সময় না দিয়ে চলতি মাসেই কাউন্সিলরদের তালিকা কেন্দ্রে জমা দিয়ে আগামী অক্টোবরেই সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হবে বলে জানানো হয়। এসব কমিটি গঠন বা কাউন্সিলরের তালিকা তৈরির সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে পরামর্শ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। যার কারণে সব কিছু দেখভাল করার জন্য যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আলতাফ হোসেন বাচ্চুকে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় কেন্দ্র থেকে।

এদিকে চলতি মাস বা আগামী অক্টোবর মাসে নগর যুবলীগের কমিটি হোক চান না নগর যুবলীগের একটি অংশ। যার কারণ হিসাবে তারা দেখছেন এমুহুর্তে কমিটি হলে সেখানে সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী নেতারা প্রাধান্য পাবে। এতে করে প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর অনুসারী যারা আছেন তারা অনেকটা বঞ্চিত হবে। ফলে একটি পক্ষ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পরে কমিটি আসুক তার জন্য নানাভাবে লবিং করছেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলতাফ হোসেন বাচ্চু বলেন, কয়েকদিন আগে এই বিষযে চিঠি পেয়েছি। আমি চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আহবায়ক, যুগ্ম আহবায়কদের সাথে বসবো। তাদের সাথে আলোচনা করে, কয়টি কমিটি আছে ওয়ার্ড পর্যায়েসহ কমিটি গঠন বিষয়ে আলাপ আলোচনা করবো। এরপর সে তথ্য কেন্দ্রীয় যুবলীগকে জানানো হবে। তারা পরবর্তী যে নির্দেশনা দিবে সে নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করা হবে।

সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের পরে একটি অংশের দাবি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বা অন্য কোন নির্বাচন রাজনৈতিক দলের জন্য কোন বাধা নয়। রাজনৈতিক দলের কর্মী নেতা সৃষ্টি করতে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া চলবে। সম্মেলন করে কাউন্সিলর মাধ্যমে কমিটি গটন করা হবে। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বে আসবে।

কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য দেবাশিষ পাল দেবু বলেন, নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করার জন্য যুবলীগের সম্মেলন জরুরি। এতদিন নানা কারণে নগর যুবলীগ সম্মেলন করতে না পারলেও কেন্দ্রীয় যুবলীগ এখন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমরা আশাবাদী চলতি মাসেই ওয়ার্ড কমিটি করে আগামী মাসেই নগর যুবলীগ নতুন নেতৃত্ব পাবে। দীর্ঘদিন তৃণমূল যুবলীগের নেতাকর্মীদের যে চাওয়া তা এ সম্মেলনের মাধ্যমে পূরণ হবে।

এদিকে নগর যুবলীগের সম্মেলন ও কমিটিকে কেন্দ্র করে যুবলীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা লড়েচড়ে বসছেন। কিছুদিন নীরব থাকার পরে তারা আবারো নিজ রাজনৈতিক নেতা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে যোগাযোগ নতুন করে বাড়িয়েছে। এছাড়াও কাউন্সিলর হবে এমন আলোচনার পর ওয়ার্ড পর্যায়ের যুবলীগ নেতা সম্ভাব্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সাথে ঘনঘন যোগাযোগ রাখছেন।

এদিকে নগর যুবলীগের শীর্ষপদ প্রত্যাশী হিসাবে ইতোমধ্যে নতুন করে উঠে আসে বেশ কয়েকজনের নাম। তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য দেবাশীষ পাল দেবু, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম, নগর যুবলীগের বর্তমান আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, নগর যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, ওয়াহিদুল আলম শিমুল, সাখাওয়াত হোসেন সাকু, সাহেদ হোসেন টিটু, ওয়াসিম উদ্দিন, জাবেদুল আলম সুমন, মিথুন মল্লিক, ইকবাল মুন্না। 

এছাড়াও নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, আব্দুল মান্নান ফেরদৌস, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দিদারুল আলম, সুমন দেবনাথ, নুরুল আনোয়ার প্রমুখ। 

-সিভয়েস/এমআই/এসএ

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়