পোশাকশিল্পের স্থানীয় ক্রয়ে উৎসকরের অব্যাহতি চায় বিজিএমইএ

বর্তমান করোনার সংকটকালীন সময়ে স্থানীয় ক্রয়ের বিপরীতে উৎসে মূসক কর কর্তন থেকে পোশাক শিল্পকে অব্যাহতি ও কর আদায়ে যাবতীয় কার্যক্রম সহজ করতে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। 

সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪ টায় চট্টগ্রাম কাস্টম এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষ ‘সৈকত’ এ কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেনের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এসব অনুরোধ জানান বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ। 

এসময় ভ্যাট আইন ও বিধিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য ভ্যাট কর্মকর্তাদের কর্মশালা আয়োজনের পরামর্শ দেন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। এদিকে পরিস্থিতি বিবেচনায় পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট উৎসে মূসক কর আদায়ে যাবতীয় কার্যক্রম সহজ করার আশ্বাস দেন ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন।

সভায় বিজিএমএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছিল। তখন প্রায় ৩ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আদেশ বাতিল হয়েছে। জাতীয় অর্থনীতিতে এর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব এখন দৃশ্যমান। বর্তমানে ফের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক মন্দাবস্থায় বর্হিঃবিশ্বে তৈরি পোশাকের মূল্য দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। কিন্তু দেশে পোশাক শিল্পের অভ্যন্তরীণ নানাবিধ খরচ বৃদ্ধি পেয়ে পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্রমাগত লোকসানের মধ্যেও স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে উৎপাদন কার্যক্রম সচল রেখেছে। পাশাপাশি পূর্বের ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। 

বর্তমান এই সংকটকালীন সময়ে স্থানীয় ক্রয়ের বিপরীতে উৎসে মূসক কর কর্তন থেকে পোশাক শিল্পকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য বিজিএমইএ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) প্রস্তাবনা পেশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভ্যাট আদায় কার্যক্রম সহজ করতে ভ্যাট কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানান তিনি। 

জাতীয় আর্থ-সমাজিক উন্নয়ন সহ কর্মসংস্থানে পোশাক শিল্পের ভূমিকা প্রশংসা করে চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন বলেন, বর্তমান সংকটকালীন পরিস্থিতি বিবেচনায় পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট উৎসে মূসক কর আদায়ে কার্যক্রম সহজ করা হবে। এছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নির্ধারিত উৎসে মূসক কর কর্তন বিষয়ে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সচেতনতা বৃদ্ধিসহ মূসক আইন ও বিধিমালা সম্পর্কে বিজিএমইএ’র সদস্যরা সঠিক ভাবে জানার জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। 

এসময় ভ্যাট কমিশনারের ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করে বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গতিশীল রাখার স্বার্থেই পোশাক শিল্পকে সংশ্লিষ্ট সকলের নিজ অবস্থান থেকে সহানুভূতিশীল মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত।

সভায় অন্যন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিজিএমইএ’র পরিচালক তানভীর হাবিব, এ.এম. শফিউল করিম (খোকন), মিরাজ-ই-মোস্তফা (কায়সার), বিজিএমইএ কাষ্টম বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, ট্যাক্স ও ভ্যাট বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন পরিচালক সাইফ উল্ল্যাহ মনসুর সহ পোশাক শিল্পের মালিক বৃন্দ। তাছাড়া ভ্যাট কমিশনারেটের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি কমিশনার শহিনুল কবির পাভেল।