নুসরাতের ময়নাতদন্তের মুহূর্তের বর্ণনা
সকাল সাড়ে সাতটা থেকে ঢাকা মেডিকেলে। সকাল সাড়ে আটটায় হিমাগার থেকে বডিটা বের করে এমারজেন্সি মর্গে নিয়ে গেছে। মৃত মানুষটা মেয়ে হলে তার ময়নাতদন্ত করার সময় মা অথবা বোনের থাকতে হয়। রাফির মা অসুস্থ আর আপন কোনো বোন না থাকায় আমাকে বোন হিসেবে রেখেছিলো ময়নাতদন্তের সময়। মেয়েটার পেটে কোনো মাংস নেই, মুখ দিয়ে লালা ঝরছে, যৌনাঙ্গ পুড়ে বীভৎস অবস্থা,পায়ের নখের লাল টুকটুকে মেহেদী রঙটুকু এখনো চোখে পড়ে।
রাফির মা ভীষণ অসুস্থ গতকাল রাত থেকে , মেয়ে মারা যাওয়ার পর শেষবার একটু দেখতেও পারেননি। আঙ্কেল শোকে পাথর হয়ে গেছে আর মা মা বলে চিৎকার। ভাই দুইটা একটু পর পর অজ্ঞান হয়ে পড়ছে। মর্গের সামনে দুই-তিনশো সাংবাদিক দাঁড়িয়ে আছে, নেই শুধু রাফি।
কান্না থামিয়ে রাখতে পারেননি প্রধানমন্ত্রীর পিএস , মেডিকেল বোর্ডের চেয়ারম্যানও। এম্বুলেন্সে করেই এসেছিলো ঢাকায় আবার ফিরেও যাচ্ছে এম্বুলেন্সে।
বোন, পৃথিবীর চেয়ে ভালো জায়গায় থাকবি নিশ্চয়ই।
আমরা যেই নরকে আছি সেখানে এখনও তোর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে, তোর পক্ষে কথা না বলার জন্য আদেশ দিচ্ছে, তোর পাশের এলাকায় গতকাল রাতে তোর মত করে আরেকটা ছেলের গায়ে আগুন দিয়েছে।
আহ! কী সুন্দর! তুইই ভালো আছিস নরক থেকে চলে গিয়ে। শেষবার তোকে লাইফ সাপোর্টে দেখে আসলাম , গতকাল ব্ল্যাড ম্যানেজ করে দিলাম নয়ব্যাগ। আর যেতে হবে না তোকে দেখতে, রক্ত দিতে
ক্ষমা করিস না আমাদেরকে!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হল সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক সংসদ ফাতিমা তাহসিন এর ফেসবুক ওয়াল থেকে
ফাতিমা তাহসিন