Cvoice24.com

করোনায় প্রাণহানিতে শীর্ষে— নগরে কোতোয়ালী, উপজেলায় হাটাহাজারী

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:১৫, ৮ এপ্রিল ২০২১
করোনায় প্রাণহানিতে শীর্ষে— নগরে কোতোয়ালী, উপজেলায় হাটাহাজারী

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল থেকে করোনায় মৃতদেহ দাফনের জন্য নিয়ে যাচ্ছে আল-মানাহিল।

মহামারী করোনার তাণ্ডবে বন্দর নগরে গত এক বছরে ৪০৬ জন রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে নগরের ২৯৮ জন ও বিভিন্ন উপজেলার রয়েছেন ১০৮ জন। তবে করোনায় মৃত্যুর দিক থেকে নগরে শীর্ষে রয়েছে কোতোয়ালী এবং উপজেলায় শীর্ষে হাটহাজারী। 

বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি স্বাক্ষরিত এক প্রতিবদেন থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়। 

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, মহানগরে করোনায় মারা যাওয়া ২৯৮ জন রোগীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন কোতোয়ালী এলাকায়। কোতোয়ালী এলাকায় করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩২ জন। পাশাপাশি হালিশহর এলাকায় ৩০ জন, চকবাজারে ১৫ জন, খুলশীতে ১৫ জন, বন্দরে ৮ জন, ডবলমুরিংয়ে ৪ জন, বাকলিয়ায় ৭ জন, বায়েজিদে ৮ জন, আকবরশাহতে ১০ জন, পতেঙ্গায় ৬ জন, সুগন্ধায় ২ জন, মোহরায় ৩ জন, লালখান বাজারে ২ জন, পার্কভিউতে ৩ জন, মাদারবাড়ীতে ৩ জন, কদমতলীতে ১ জন, আগ্রাবাদে ১২ জন, চান্দগাঁওয়ে ১৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। 

তাছাড়া গত এক বছরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন পাঁচলাইশে ২০ জন, পাহাড়তলীতে ১২ জন, ইপিজেডে ১ জন, সদরঘাটে ৬ জন, এনায়েত বাজারে ২ জন, দামপাড়ায় ১২ জন, ইদগাঁতে ৩ জন, বউবাজারে ১ জন, মোগলটুলীতে ১ জন ও মুরাদপুরে ১ জন মারা যান। এদিকে মেরিন সিটি কলেজ এলাকায় ১ জন, লেভেল পার্ক এলাকায় ১ জন, সিএসসিএইচ এলাকায় ১ জন, সি জি এইচ এলাকায় ২ জন, রাহাত্তারপুল এলাকায় ৪ জন, ফিরোজশাহ কলোনী এলাকায় ৩ জন, আসকারদিঘীর পাড় এলাকায় ২ জন, কর্ণফুলী এলাকায় ৪ জন, হাজারী লেইন এলাকায় ৩ জন, কাজীর দেউড়ি এলাকায় ১ জন, নাসিরাবাদ হাউজিং এলাকায় ৩ জন, কাট্টলী এলাকায় ৩ জন, ম্যাক্স হাসপাতালে ৩ জন। 

অপরদিকে মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ জন, ষোলশহর ২নং গেট এলাকায় ২ জন, বিশ্ব কলোনী এলাকায় ১ জন, সার্জিস্কোপ এলাকায় ২ জন, দেওয়ানবাজার এলাকায় ১ জন, বড়পোল এলাকায় ১ জন, মনসুরাবাদ এলাকায় ১ জন, রিয়াজউদ্দীন বাজার এলাকায় ২ জন, হিলভিউ এলাকায় ১ জন, চন্দনপুরা এলাকায় ২ জন, দেওয়ানহাট এলাকায় ১ জন, ব্যাটারী গলি এলাকায় ১ জন ও কালুরঘাট এলাকায় ১ জন করোনায় প্রাণ হারান। 

চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন হাটহাজারীর বাসিন্দা। হাটহাজারী উপজেলায় ১৮ জন, লোহাগাড়া উপজেলায় ৫ জন, সাতকানিয়া উপজেলায় ৮ জন, বাঁশখালী উপজেলায় ২ জন, পটিয়া উপজেলায় ১১ জন ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ৭ জন মারা গেছেন। 

তাছাড়া ফটিকছড়ি উপজেলায় ৬ জন, সীতাকুণ্ড উপজেলায় ১৪ জন, আনোয়ারা উপজেলায় ৬ জন, বোয়ালখালী উপজেলায় ৮ জন, সন্দ্বীপ উপজেলায় ৩ জন, চন্দনাইশ উপজেলায় ৪ জন, রাউজান উপজেলায় ১২ জন ও মিরসরাই উপজেলায় ৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
 
এদিকে বয়সভিত্তিক মৃত্যুর পরিসংখ্যানে ৬১ বছর বা তার উর্ধ্ব বয়সীরা সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সের ৩ জন পুরুষ ও ১ জন মহিলা, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সের ৩ জন মহিলা, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সের ৪ জন পুরুষ ও ১ জন মহিলা, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের ১০ জন পুরুষ ও ৮ জন মহিলা প্রাণ হারিয়েছেন। তাছাড়া ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের ৩৯ জন পুরুষ ও ১৩ জন মহিলা, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সের ৬৯ জন পুরুষ ও ২৮ জন মহিলা ও ৬১ বা তার উর্ধ্বে ১৮৪ জন পুরুষ ও ৪৩ জন মহিলা করোনায় মারা গেছেন। 

গবেষকরা বলছেন, উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা কারোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঝুঁকিতে আছেন। অপরদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, যেসব রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা করোনায় সংক্রমিত হওয়ার পরে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের মৃত্যু ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে করোনা আক্রান্ত হওয়া রোগীদের বাঁচানো বেশ কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি ও উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগীরা বেশি ঝুঁকিতে আছেন। তাই তাদের বিশেষভাবে যত্নে রাখতে হবে। পাশাপাশি জনগণকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে। সকলে নিয়ম মেনে সচেতনতার হাত বাড়িয়ে দিলে করোনাকে একেবারে রুখে দেয়া সম্ভব বলে জানান চিকিৎসকরা। 

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে নতুন করে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা ভাইরাসে। আর ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৩৮৬টি নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয়েছে ৪৭৩ কোভিড-১৯ রোগী। মোট আক্রান্তের সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়ালো ৪৩ হাজার ১৮৮ জনে। 

-সিভয়েস/টিএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়