Cvoice24.com


সংরক্ষণের তাগিদে হালদা পাড়ে ‘মিঠাপানি ডলফিন দিবস’

প্রকাশিত: ১৩:৪৮, ২৪ অক্টোবর ২০২০
সংরক্ষণের তাগিদে হালদা পাড়ে ‘মিঠাপানি ডলফিন দিবস’

শান্ত স্বভাব ও বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী হিসেবে পরিচিত ডলফিন। কিন্তু এ প্রাণী মানবসৃষ্ট নানান জটিলতার কারণে বর্তমানে দেশের নদীগুলো থেকে বিপন্ন‌ প্রায়। চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো পালিত বিশ্ব 'মিঠাপানির ডলফিন দিবস' উদযাপনে ৪৮ কিলোমিটারের হালদা নদীতে ছয় মাসে ১৮ ডলফিনের মৃত্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে আলোচকরা।

আজ শনিবার (২৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের আয়োজনে হাটহাজারীস্থ গড়দুয়ারা ড. শহীদুল্লাহ একাডেমি মিলনায়তনে চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো এ দিবসটি পালিত হয়। 

এ আয়োজনে "হালদা নদী: মিঠাপানি ডলফিনের নিরাপদ আবাস" শিরোনামে একটি নিবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরি কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া।

বিচরণের ক্ষেত্রগুলোতে ডলফিনের জন্য হুমকিস্বরূপ নানান পদক্ষেপের কারণে নিয়মিত হারে মারা যাচ্ছে এই প্রাণীটি। শীতের সময় স্বাভাবিক ভাবেই নদীতে জলের প্রবাহ কম থাকে। এ সময় জাহাজ চলাচল বৃদ্ধি পেলে ডলফিনের বিচরণের জন্য বিপদজনক হয়ে পড়ে। এছাড়া নদীতে অসংখ্য যান্ত্রিক নৌকা ও কোয়ারির চলাচলের কারণে মারা যাচ্ছে শান্ত স্বভাবের এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটি।

এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ হালদা নদীতে গত ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৮ ডলফিন মারা গেছে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত আরও ৯টি ডলফিন মারা যায়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরি কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, 'আমি আমার জীবনের প্রথম জলজ স্তন্যপায়ী দেখেছি হালদা শহরে স্কুল চলাকালীন নাজিরহাটে হালদা নদীর উজানে অবস্থিত একটি সেতুর উপরে দাঁড়িয়ে। ডলফিনটি কেবল নাজিরহাট থেকে নয়, কয়েক দশক ধরে ৪০ কিলোমিটার অববাহিকা অবধি অদৃশ্য হয়ে গেছে। আমরা গত ২০১৮ সালে একটি ডলফিনের প্রথম ময়নাতদন্ত পরিচালনা করেছি। সেখানে আমরা দেখেছি, ডলফিনটির গায়ে ধারালো প্রোপেলারের আঘাত। পরে আমরা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে নদীতে যান্ত্রিক নৌকো এবং কোয়ারির চলাচল নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিই। সরকার ওই বছরই আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ করে। এরপরে ডলফিনের মৃত্যু উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।'

তিনি আরও বলেন, 'হালদাতে প্রত্যক্ষ দর্শনের মাধ্যমে ১৬৬টি ডলফিন পেয়েছিলেন। তবে এখন স্তন্যপায়ী প্রাণীর সঠিক চিত্র পেতে সোনার (শব্দ নির্ণয় যন্ত্র) এবং জিপিএস সিস্টেম ব্যবহার করে একটি গবেষণা পরিচালিত হচ্ছে। 

শান্ত স্বভাবের বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী হিসেবে জনপ্রিয় ডলফিনের বাংলাদেশে বিচরণ ক্ষেত্রগুলো হলো- পদ্মা নদী, সুন্দরবনের আশেপাশের নদী এবং চট্টগ্রামের কর্ণফুলী, সাঙ্গু ও হালদা নদী। এবারের আন্তর্জাতিক স্বাদু পানি ডলফিন দিবসে প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘আসুন ডলফিন সংরক্ষণে সহযোগিতা করি, জলজ পরিবেশের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করি’।

এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন। বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দিবসটি উদযাপন করা হয়। পরবর্তীতে ডলফিনসহ মিঠাপানির মাছ সংরক্ষণে আদেশ প্রদান করেন।

-সিভয়েস/জেআই/এসবি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়